Advertisement
E-Paper

দ্বাদশীর স্লগ ওভারেও চলল দর্শকের ব্যাটিং

একই ভাবে বাদামতলায় ‘ট্রাম্পের শহর’ দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের বাসিন্দা সৌগত বসু। তাঁর আফশোস, ‘‘রাতে এলে ভাল হতো। দিনের বেলা মণ্ডপের মেজাজটাই ঠিক খোলেনি।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৭:৩০
—নিজস্ব চিত্র।

—নিজস্ব চিত্র।

কোথাও কার্নিভালের প্রস্তুতির জন্য মণ্ডপ দর্শন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কোথাও মণ্ডপের সামনে আড়াআড়ি ভাবে দাঁড় করানো আট চাকার ট্রেলার। কিন্তু মানুষকে আটকাবে কে?

মণ্ডপে প্রতিমা পৌঁছনো থেকে শুরু করে বিসর্জনে যাওয়া পর্যন্ত উৎসাহী মানুষকে যে বেঁধে রাখা যাবে না, সোমবার দ্বাদশীর দুপুরে শহরের বহু মণ্ডপের ছবি থেকে তা পরিষ্কার।

বৃষ্টি আর অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে যাঁদের প্রতিমা দর্শনে ব্যাঘাত ঘটেছিল, তাঁদের অনেকেই সোমবার দ্বাদশীর দিন বেরিয়ে পড়েন। রবিবার রাতে উত্তর কলকাতার জগৎ মুখার্জি পার্ক, সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার থেকে শুরু করে দক্ষিণের বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘ, ৬৬ পল্লি এবং চেতলা অগ্রণীতেও দেখা গেল বহু মানুষের ভিড়। সেলফি স্টিক হাতে ছবি তোলাও চলল কিশোর-কিশোরীদের।

বাগুইআটি থেকে চেতলা অগ্রণীতে পরিবারকে নিয়ে ঘুরতে এসে নিরাশ হননি মৃন্ময়কান্তি ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে উত্তর কলকাতার ঠাকুর দেখে শেষ করতে পারিনি। ভিড়ের ঠেলায় দক্ষিণে আর আসতেই পারিনি আমরা। তাই দ্বাদশীর দিন সপরিবার দক্ষিণ কলকাতায় এসেছি।’’ ঠেলাঠেলি এড়িয়ে শান্তিতেই ঠাকুর দেখেছে ওই পরিবার। কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী মৃন্ময়বাবু বলেন, ‘‘ভাগ্যিস, এ দিন ছুটিটা পাওয়া গিয়েছে। না হলে এতগুলি ঠাকুর দেখাই হতো না।’’

পাশেই মোবাইল হাতে নিজস্বী তুলছিল এক কিশোরী। তার বন্ধুকে বলতে শোনা গেল, ‘‘আগে এলে এ ভাবে ধীরেসুস্থে ছবি তোলাই যেত না।’’ পুজোর দিনগুলির মতো মণ্ডপে মণ্ডপে অবশ্য পুলিশ ছিল না এ দিন। অনেক জায়গায় একেবারে মণ্ডপের কাছে গিয়েই গাড়ি রাখা গিয়েছে। অশীতিপর মা ও শাশুড়িকে পুজোর মধ্যে কোথাও নিয়ে যেতে পারেননি ঠাকুরপুকুরের সুনন্দন দত্ত। কারণ, মণ্ডপের সামনে গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায়নি। এ দিন ৬৬ পল্লির মণ্ডপের সামনে দেখা গেল, মা ও শাশুড়িকে নিয়ে গাড়িতে উঠছেন ওই ব্যবসায়ী। একগাল হেসে বললেন, ‘‘ওঁরা দু’জনে যে কী আনন্দ পেয়েছেন, তা বলে বোঝাতে পারব না।’’

একই ভাবে বাদামতলায় ‘ট্রাম্পের শহর’ দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের বাসিন্দা সৌগত বসু। তাঁর আফশোস, ‘‘রাতে এলে ভাল হতো। দিনের বেলা মণ্ডপের মেজাজটাই ঠিক খোলেনি।’’

চেতলা অগ্রণী পুজো কমিটির এক সদস্য জানান, যত দিন প্রতিমা থাকবে, তত দিনই ভিড় জমবে। এবং তার ব়ড় অংশই জেলার মানুষ।

তেমনই এক জন মায়াশঙ্কর ঠাকুর। ডানকুনি থেকে এসেছেন। দেখা হল ৬৪ পল্লির মণ্ডপে। তাঁর কথায়, ‘‘বুড়ো হয়েছি। ভিড় ঠেলে দূরে যেতে পারি না। পুজোর দিন বাড়ির কাছে প্রতিমা দেখি। পুজোর পরে প্রতি বছর কলকাতার আসি।’’

সুরুচি সঙ্ঘের মণ্ডপে রবিবার রাত পর্যন্ত ভিড় ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, মানুষ রাত ১টা পর্যন্ত লাইন দিয়ে ঠাকুর দেখেছেন। কার্নিভালের প্রস্তুতির জন্য দর্শক সমাগম কম রাখতে মণ্ডপের অনেক আলোই বন্ধ রাখা হয়েছিল। কিন্তু এ দিন দুপুরের পর থেকে দর্শনার্থীরা ওই মণ্ডপে গিয়ে নিরাশ হয়েছেন। ঠাকুর বরণ করার পরে ট্যাবলো সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন উদ্যোক্তারা।

মঙ্গলবার রেড রোডের কার্নিভালে আসার জন্য তিনটি গাড়ি প্রস্তুত করছে চেতলা অগ্রণী। তবে এ দিন দুপুরে মণ্ডপ চত্বরে একটি জিনিসেরই অভাব। ঠান্ডা পানীয় ছাড়া আর বিশেষ কোনও দোকান খোলা নেই। দুপুরের রোদে হেঁটে ক্লান্ত হলে গলা ভেজাতে ঠান্ডা পানীয় পাওয়া গেলেও খাবার দুর্লভ।

হাওড়ার বাগনান থেকে আসা দীপ মজুমদারের তাই আক্ষেপ, ‘‘মণ্ডপের কাছাকাছি খাবারের দোকান থাকলে ভাল হতো।’’ চেতলা অগ্রণীর উদ্যোক্তাদের অবশ্য আশ্বাস, এই বিষয়টি নিয়েও এ বার আলোচনা হবে।

Durga Puja Pandal Hopping Crowd দুর্গাপুজো
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy