Advertisement
E-Paper

ভয়ের প্রশ্ন নেই, দোষীদের শাস্তি চাই

পরের রাস্তাটা অন্ধকার। আচমকা দেখি, দু’জন ছেলে আসছে। হাবভাব দেখে আন্দাজ করলাম, আমাকে নিয়ে কিছু বলছে। খুব ভয় করল।

নির্যাতিতা ছাত্রী

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৬
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কেষ্টপুরে আমার মামাবাড়ি। শনিবার ভাইকে নিয়ে সেখান থেকে হাটগাছায় যখন পৌঁছলাম তখন সন্ধ্যা সাতটা। চার বছর হল এখানে এসেছি। রাস্তায় হাঁটার সময়ে আমি কারও দিকে তাকাই না। বাড়ি যাওয়ার গলির ভিতরে একটা মুদির দোকান আছে। সেখান থেকে তেল এবং ভাইয়ের জন্য জ্যাম কিনলাম। সোমবার পরীক্ষা ছিল। আসার পথে এক বন্ধুর কাছ থেকে নোটসের ফোটোকপি করিয়েছিলাম। হাতে সেগুলিও ছিল।

বাড়ি ঢোকার কিছুটা আগে একটা মাচার মতো জায়গা আছে। পরের রাস্তাটা অন্ধকার। আচমকা দেখি, দু’জন ছেলে আসছে। হাবভাব দেখে আন্দাজ করলাম, আমাকে নিয়ে কিছু বলছে। খুব ভয় করল। ভাইকে বললাম, তাড়াতাড়ি পা চালা। মুখের কথা শেষ হয়নি। ওরা দু’জন আমার পথ আটকাল। সরু গলির বাঁ দিক দিয়ে যেতে চাইলে এক জন বাধা দিল। কথা না বাড়িয়ে ডান দিক দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। একই কায়দায় অন্য জন রাস্তা আটকালে ওদের মাঝখান দিয়ে ভাইকে নিয়ে যখন বার হওয়ার চেষ্টা করছি, তখনই আমার বাঁ দিকে থাকা ছেলেটি গায়ে হাত দিয়ে চলে গেল। আমি তখন থরথর করে কাঁপছি। ভাবছি, আমরা সঙ্গে এটা কী হল! নিজেকে কোনও মতে সামলে চিৎকার করে উঠলাম। রাগে মুখ দিয়ে ‘জানোয়ার’ শব্দটা বেরিয়ে এল। তাতে ওদের কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই। দিব্যি হাঁটতে হাঁটতে গলির মাথায় পৌঁছে নিজেদের মধ্যে গল্প করছে। ফোনে মাকে কাঁদতে কাঁদতে বলেছি, আমার সঙ্গে কী ঘটেছে।

রাতে মা ফেরার পরে থানায় গেলাম। খুব ঘাবড়ে ছিলাম। অভিযোগ লিখতেই পারলাম না। পুলিশ যেমন বলল সে ভাবে লিখলাম। রাত আড়াইটে নাগাদ ছেলে দুটোর বাবা-মা বাড়িতে এসে ভুল স্বীকার করে কেস তুলে নেওয়ার জন্য বলছিলেন। আমি বললাম, মা-বাবাকে বলে কী হবে। ঘটনাটা আমার সঙ্গে ঘটেছে। রাস্তায় কটূক্তি শোনাটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। তা বলে গায়ে হাত দেবে! এটা সহ্য করব না। এক সময় টাকা দেওয়ার কথাও বলল। মা খুব রেগে গিয়েছিল। ভোরে পাড়ার এক কাকুকে সঙ্গে নিয়ে আবার এল। এ বার ছেলেদের ডেকে ক্ষমা চাওয়ানোর প্রস্তাব দিল। নিজের অবস্থান থেকে যে সরছি না তা ফের জানিয়ে দিলাম। মায়ের কাছে শুনেছি, বারুইপুর আদালতের সরকারি আইনজীবীও ‘পরামর্শ’ দিয়েছেন, মেয়েটা তো ছোট। মামলা করছেন কেন? শনিবার থেকে আমি খুব ক্লান্ত। বুধবার স্কুলে যাইনি। আজও বাড়িতেই আছি। মা বলল, না বেরোলে লোকে বলবে ভয় পেয়েছি। ভয় পাইনি। যারা এটা করল তাদের শাস্তি চাই।

Molestation শ্লীলতাহানি Girl
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy