কর্মব্যস্ত: মূর্তি তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন কারিগরেরা। রবিবার কুমোরটুলিতে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা রয়েইছে। তবু গত বছরের মতো কোভিড-বিধি মেনে দুর্গাপুজোর আয়োজন হবে, এমনটা ধরে নিয়েই ময়দানে নামতে শুরু করে দিয়েছেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা। ক্রমশ পটুয়াপাড়ায় ভিড় জমাতে শুরু করেছেন মূর্তি তৈরির কারিগরেরাও। কিন্তু ভিন্ জেলা থেকে আসা সেই সব কারিগরদের অধিকাংশই প্রতিষেধক পাননি, যা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কুমোরটুলির।
কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সংস্কৃতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবু পাল বলেন, ‘‘প্রতিমা তৈরি করতে জেলা থেকে প্রায় ৩০০ জন কারিগর এসে গিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের বেশির ভাগই প্রতিষেধক পাননি। তাই দুশ্চিন্তা হচ্ছে। পুরসভার তরফে কুমোরটুলির শিল্পী-কারিগরদের জন্য প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলে ভাল হয়।’’
কুমোরটুলিতে পর পর ঘুপচি স্টুডিয়োয় গায়ে গা লাগিয়ে প্রতিমা তৈরি করেন শিল্পী ও কারিগরেরা। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু মৃৎশিল্পী প্রতিষেধক নিয়েছেন। কিন্তু কাজ করতে আসা কারিগরদের প্রায় কারও প্রতিষেধক নেওয়া না থাকায় সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি থাকছে, যা চিন্তা বাড়াচ্ছে পটুয়াপাড়ার। মৃৎশিল্পী মিন্টু পালের কথায়, ‘‘আগামী সপ্তাহেই আমার স্টুডিয়োয় জনা তিনেক কারিগরের আসার কথা। তাঁরা এখনও কেউ প্রতিষেধক নেননি। এখানে এলে ওঁদের আগে প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থাটা না করলেই নয়!’’ নদিয়া থেকে কুমোরটুলিতে আসা কারিগর সুবল কর্মকার বলছেন, ‘‘পেটের তাগিদে এখানে কাজে এসেছি। কিন্তু সংক্রমণ ছড়ানোর ভয়টা থেকেই যাচ্ছে।’’
কুমোরটুলির শিল্পীরা জানাচ্ছেন, করোনা আবহে গত বছরে পুজো নিয়ে সংশয় থাকলেও শেষ পর্যন্ত কোভিড-বিধি মেনে পুজো হয়েছিল। এ বারও তাই বায়নার সংখ্যা কম হলেও কাজ শুরু করে দিয়েছেন শিল্পীরা। বেশির ভাগ উদ্যোক্তারা বাজেট কমিয়ে ছোট প্রতিমার বায়না করছেন। তবু তার মধ্যেই ভিন্ জেলা থেকে আসা কারিগরদের জন্য চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে বলেই জানাচ্ছেন কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সংস্কৃতি সমিতির আর এক সাধারণ সম্পাদক রণজিৎ সরকার।
এর আগে কুমোরটুলির শিল্পীদের জন্য প্রতিষেধক প্রদানের ব্যবস্থা করা একটি সংগঠনের তরফে সোমনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকারি তরফে দুর্গোৎসবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। গত বছরের মতো কোভিড-বিধি মেনে পুজোর আয়োজনে সায় দেবে রাজ্য, এটাই আশা করি। তবে এ বার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমরা চাই, পুজোর সঙ্গে যুক্ত সকলকে প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।’’
তবে কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ বলছেন, ‘‘কেন্দ্র পর্যাপ্ত প্রতিষেধক না দেওয়ায় শহরের বিভিন্ন কেন্দ্রগুলিতে ঠিকমতো প্রতিষেধক দেওয়া যাচ্ছে না। আলাদা করে শিবির করে প্রতিষেধক দেওয়া এই মুহূর্তে সমস্যার। তবে পর্যাপ্ত প্রতিষেধক এলে নিশ্চয়ই কুমোরটুলির শিল্পী-কারিগরদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy