কাঁকুড়গাছির স্কুলে বসেই পোস্তার সোনার দোকানে ডাকাতির ছক কষা হয়েছিল। সেই মতো ডাকাতির দিন কয়েক আগে ওই এলাকায় গিয়ে ‘রেইকি’ও করে এসেছিল অভিযুক্তেরা। ধৃতদের জেরা করে এমনটাই জানতে পেরেছে বিধাননগর পুলিশ।
গত সোমবার পোস্তা থানা এলাকার হরিরাম গোয়েন্কা স্ট্রিটের একটি সোনার দোকানে হানা দেয় সশস্ত্র ওই চার যুবক। দোকান সূত্রে খবর, তাদের ভল্টে নগদ ১ কোটি টাকা রাখা ছিল। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা দু’রাউন্ড গুলি চালিয়ে ভল্ট খুলিয়ে টাকার ব্যাগটি নিয়ে চম্পট দেয়। তদন্তে নেমে বুধবার রাতে বাবলু অধিকারী, সোনু প্রসাদ, অমর রজক এবং নাসিম কুরেসি নামে ওই চার দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছে লুঠের ৩৩ লক্ষ টাকা, একটি ৭ এম এম পিস্তল এবং ছ’রাউন্ড গুলি মেলে।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, ধৃত বাবলু কাঁকুড়গাছির ওই স্কুলের অস্থায়ী সাফাইকর্মী। স্কুলের একটি ঘরে পরিবার নিয়ে থাকত সে। স্কুলেরই অন্য একটি ঘরে বসে ডাকাতির ছক কষা হয়েছিল। সেখানে ওই চার যুবক ছাড়াও আরও কেউ ছিল। ডাকাতির পরে টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারাও হয়েছিল ওই স্কুলে বসেই। পরে সেখান থেকে অন্যেরা চলে গেলেও বাবলু স্কুলেই ছিল। বুধবার তাকে সেখান থেকেই গ্রেফতার করা হয়। বাকিদের ধরা হয় লেকটাউন এলাকা থেকে।
ওই উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল-কর্তৃপক্ষ জানান, বাবলুকে গ্রেফতারের পরে তার পরিবারকে স্কুল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্কুলে বসেছে সিসিটিভি। তাঁদের অভিযোগ, গত কয়েক বছর ধরে সরকারি সাফাইকর্মী, রাতের পাহারাদার চেয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরের কাছে বহুবার দরবার করা হলেও কোনও কাজ হয়নি। বাবলু চার বছর ধরে অস্থায়ী সাফাইকর্মী হিসেবে এই স্কুলে কাজ করছে। অস্থায়ী এক জন রাত-পাহারার লোকও রয়েছেন। এই ঘটনার পরে স্কুলের শিক্ষক-ছাত্র এবং এলাকার মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, বেশ কিছু দিন ধরে যে স্কুলের মধ্যে মাঝরাত পর্যন্ত নানা ধরনের অসামাজিক কাজকর্ম চলত, এখন তাঁরা সে সব অভিযোগ পাচ্ছেন। স্থায়ী, সরকারি কর্মী না থাকলে ভবিষ্যতে ফের কোনও ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করেছেন তাঁরা।
বিধাননগর পুলিশ সূত্রে খবর, ডাকাতির বাকি টাকা উদ্ধারের ও দুষ্কৃতী দলের পাণ্ডাকে ধরার চেষ্টা চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, পোস্তার ওই দোকানের পরিচিত এক যুবকই ভল্টে টাকা থাকার কথা জানিয়েছিল বাবলুদের। খোঁজ চলছে তারও।
লালবাজার সূত্রে খবর, বিধাননগর থানার হাতে গ্রেফতার ওই চার দুষ্কৃতীকে নিজেদের হেফাজতে নেবে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। শনিবারই বিধাননগর আদালতে আবেদন জানায় পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy