অস্বাস্থ্যকর: শিক্ষক আবাসন কাছে আবর্জনার স্তূপ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পিছু ছাড়ছে না ডেঙ্গি-আতঙ্ক!
গত বছর ডেঙ্গির আক্রমণ ব্যাপক আকার নিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। তার পরে কর্তৃপক্ষ পদক্ষেপও করছিলেন। কিন্তু বছর ঘুরতেই পরিস্থিতি যে কে সেই! ক্যাম্পাস জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে জঞ্জাল। কোথাও ডাঁই করে রাখা পুরনো টিউবলাইট, কোথাও বা প্লাস্টিক, কাগজের কাপ। যত্রতত্র জমা জল এবং অন্যান্য জঞ্জাল তো আছেই। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন শিক্ষকেরা। তবে এখনও আতঙ্ক কাটার মতো পদক্ষেপ করা হয়নি বলেই অভিযোগ শিক্ষকদের।
যাদবপুরের ক্যাম্পাসেই রয়েছে ছাত্র-গবেষক, শিক্ষক এবং কর্মীদের আবাসন। গত বছর ক্যাম্পাসে বেশ কয়েক জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তুলনামূলক সাহিত্যের শিক্ষক সুজিত মণ্ডল এবং তাঁর শিশুকন্যা। বৃহস্পতিবার সুজিতবাবু জানালেন, তিনি এর মধ্যে কিছু দিন বিদেশে ছিলেন। ফিরে এসে দেখছেন, ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত বার ডেঙ্গি আক্রান্তদের মধ্যে ছিলেন পরীক্ষা নিয়ামক সাত্যকি ভট্টাচার্যের স্ত্রী, পদার্থবিদ্যার শিক্ষক অসীম ঘোষের স্ত্রী এবং দুই মেয়েও।
গত বছর মশা দমনের অভিযানে যাদবপুরের ক্যাম্পাসে গিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ। অতীনবাবু জানিয়েছিলেন, সেখানে যে হারে বাতিল পাত্রে জল জমে ছিল, তাতে এডিস মশার প্রকোপ বাড়তেই পারে। এর পরে ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্নতার কাজে কর্তৃপক্ষ খুবই মনোযোগ দেন। পড়ুয়ারাও তাতে হাত লাগিয়েছিলেন। কিন্তু এ বছর যে সব জায়গায় নির্মাণকাজ চলছে, সে সব এলাকায় জল জমেই থাকছে বলে অভিযোগ।
কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কাছে আবর্জনার স্তূপ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র
কিছু দিন আগে উপাচার্য সুরঞ্জন দাস নিজে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি ঘুরে দেখেছিলেন। তা সত্ত্বেও কী ভাবে এত জঞ্জাল জমিয়ে রাখা হচ্ছে, তা নিয়েই বিস্মিত শিক্ষকদের একাংশ। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের যা বর্তমান অবস্থা, তাতে ডেঙ্গির আক্রমণ আবার হতে পারে বলে আতঙ্ক প্রকাশ করছেন সুজিতবাবুর মতো অনেকেই। কর্তৃপক্ষকে শিক্ষক সংগঠন জুটার পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পরিচ্ছন্নতা রক্ষার কাজ যা হচ্ছে, তা যে অত বড় ক্যাম্পাসের জন্য যথেষ্ট নয়, এ দিন তা কার্যত স্বীকার করে নেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভার সঙ্গে একযোগে ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ হচ্ছে। কিন্তু এটা সত্যিই যথেষ্ট নয়। দেখা যাক, আর কী করা যায়।’’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের ছাত্র সংসদের চেয়ারপার্সন সোমাশ্রী চৌধুরী এ দিন বলেন, ‘‘ক্যাম্পাসে কিছু নির্মাণকাজ চলছে। স্বাভাবিক ভাবেই সেই সব এলাকা কিছুটা অপরিচ্ছন্ন। কোথাও কোথাও জলও জমে আছে। মশাবাহিত রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা আছে। গত বছরও পড়ুয়ারা ডেঙ্গি আতঙ্ক ছড়ানোর পরে ক্যাম্পাস পরিষ্কারে নেমেছিলেন। এ বার তেমন পরিকল্পনা রয়েছে।’’ তবে সোমাশ্রীর দাবি, কর্তৃপক্ষকে আগে থেকে আরও সচেতন হতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy