Advertisement
E-Paper

প্রবেশিকায় এ বার সামিল যাদবপুরের শিক্ষকেরাও

বুধবার যাদবপুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, কলা বিভাগের ছ’টি বিষয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও যোগ দিতে পারবেন। ঘোষণা করা হল পরীক্ষা এবং ভর্তির দিনও। ৩ জুলাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হওয়ায় কর্তৃপক্ষ পরে ফের কর্মসমিতির বৈঠক ডাকতে বাধ্য হন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৮ ০৩:৪৮
প্রবেশিকায় যুক্ত থাকতে পারবেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। —ফাইল চিত্র।

প্রবেশিকায় যুক্ত থাকতে পারবেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। —ফাইল চিত্র।

প্রথমে প্রবেশিকা। তার পরে ঠিক হল, প্রবেশিকা নয়। তারও পরে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে প্রবেশিকায় ফিরল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। চাপের মুখে পড়ে এ বার ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালনা নিয়েও সুর বদল করল সেখানকার ভর্তি কমিটি।

বুধবার যাদবপুর-কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেন, কলা বিভাগের ছ’টি বিষয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও যোগ দিতে পারবেন। ঘোষণা করা হল পরীক্ষা এবং ভর্তির দিনও। ৩ জুলাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হওয়ায় কর্তৃপক্ষ পরে ফের কর্মসমিতির বৈঠক ডাকতে বাধ্য হন।

সুর বদলের ফলে জট পুরোপুরি কাটছে, এমন কথা বলা যাচ্ছে না। কেননা প্রবেশিকায় বাইরের বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণ সংক্রান্ত বিষয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গিয়েছে। এ দিন ভর্তি কমিটির বৈঠকের পরে রেজিস্ট্রার চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, বাইরের কোনও ‘সংস্থা’-কে পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত রাখা হবে না এবং কোনও ‘আউটসোর্সিং’ হবে না। পুরো পরীক্ষা পরিচালনা করবে বিশ্ববিদ্যালয়ই। তত্ত্বাবধানে থাকবেন কলা বিভাগের ডিন শুভাশিস বিশ্বাস এবং রেজিস্ট্রার (চিরঞ্জীববাবু)। সহায়তা করবেন পরীক্ষা নিয়ামক সাত্যকি ভট্টাচার্য। প্রবেশিকায় যুক্ত থাকতে পারবেন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও।

প্রশ্নপত্র তৈরি বা খাতা দেখার ক্ষেত্রে কি অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ যুক্ত থাকবেন? রেজিস্ট্রার বলেন, ‘‘এটা প্রশাসনিক গোপনীয়তার বিষয়। এটা বলা যাবে না। তবে এটুকু বলতে পারি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও ভর্তি প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকতে পারবেন। কর্মসমিতিতে এটাও ঠিক হয়েছে।’’ রেজিস্ট্রারের বক্তব্য, তিনি জানিয়েছেন, বাইরের কোনও ‘সংস্থা’-কে ভর্তি-পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত রাখা হবে না এবং কোনও ‘আউটসোর্সিং’ হবে না। বাইরের ‘কেউ’ থাকবেন না, এমন কথা তিনি বলেননি, বলছেনও না।

শিক্ষক সংগঠন জুটা-র সহ-সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘শিক্ষকদের যোগ্য সম্মান দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।’’ এ দিনই কলকাতার একটি কলেজের এক অনুষ্ঠানে যাদবপুরের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘আমি বিশ্বাস করি, ছাত্রছাত্রীদের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। কিন্তু সেই অধিকার প্রয়োগের জন্য অন্যের গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। সেটা গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বা প্রক্রিয়া নয়।’’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়েই তিনি এই মন্তব্য করেছেন বলেই দাবি শিক্ষা শিবিরের।

পদত্যাগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সুরঞ্জনবাবুর পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আপনাকে কেন বলব?’’ সন্ধ্যায় বেহালায় এক অনুষ্ঠানে যাদবপুর নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘যা বলার উপাচার্যকে বলেছি।’’ উপাচার্যের ইস্তফার ইচ্ছা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এই বিষয়ে তাঁর কাছে কোনও তথ্য নেই।

২৭ জুন যাদবপুরের কর্মসমিতি সিদ্ধান্ত নেয়, ভর্তি হবে প্রবেশিকা এবং দ্বাদশের নম্বরের ভিত্তিতে। প্রবেশিকার জন্য ৫০% এবং উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের জন্য ৫০% নম্বর থাকবে। গোটা প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের আলাদা করে কোনও ভূমিকা থাকবে না। এই ছ’টি বিষয়ে পরীক্ষার দু’‌সেট প্রশ্নপত্র বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করত। ২৭ জুনের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এক সেট প্রশ্নপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করার কথা। দ্বিতীয় সেটের প্রশ্ন তৈরির দায়িত্বে থাকার কথা বাইরের বিশেষজ্ঞদের। এমনকি খাতাও দেখবেন বাইরের পরীক্ষকেরা। এতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা অপমানিত বোধ করেন। তাঁদের এড়িয়ে বাইরের বিশেষজ্ঞদের যে-ভাবে পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার বিরোধিতা করেন তাঁরা। আলোচনার জন্য ভর্তি কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারা তা করতে পারেনি। তাই ফের কর্মসমিতির বৈঠক ডাকতে হয়।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্কট নিয়ে আচার্য-রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। তাঁর কাছে প্রাক্তন অধ্যাপক প্রদীপবাবুর আর্জি, সুরঞ্জনবাবু অব্যাহতি চাইলেও আচার্য-রাজ্যপাল যেন সেই ইচ্ছায় সম্মতি না-দেন।

Jadavpur University Entrance Examination
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy