প্রতীকী ছবি।
ফেসবুকে আলাপ। তার পরে বন্ধুত্ব। বিদেশে থাকা সেই ‘বন্ধু’ উপহার পাঠাতে চায় শুনে ঘাবড়ে গিয়েছিলেন বেসরকারি সংস্থায় কাজ করা মহিলা। কিন্তু তার অনুরোধে উপহার নিতে রাজি হয়ে যান তিনি। এর পরেই মহিলার কাছে ফোন আসে শুল্ক দফতরের নাম করে। জানানো হয়, বিদেশ থেকে উপহার এসেছে। তার জন্য ‘ক্লিয়ারেন্স ফি’ দিতে হবে। মহিলা সে কথায় বিশ্বাস করেন এবং তাদের দাবি মতো চার দফায় মোট এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমাও দেন। ফের টাকা চাওয়ায় সন্দেহ হয় তাঁর। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তিনি প্রতারিত হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, গত সপ্তাহে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব যাদবপুর থানা এলাকার মুকুন্দপুরে। সোমবার ওই মহিলা, মুকুন্দপুরের বাসিন্দা শুভ্রা বসু পূর্ব যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। যে সমস্ত অ্যাকাউন্টে অভিযোগকারিণী টাকা জমা দিয়েছিলেন, সেগুলির সূত্রে ওই জালিয়াতদের খোঁজ করছে পুলিশ।
এর আগে মোটা অঙ্কের লটারি জেতার নাম করে প্রতারণার একাধিক অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে ব্যাঙ্কের তথ্য হাতিয়ে নিয়েও জালিয়াতির ভূরি ভূরি অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্ব পাতিয়ে এবং পরে শুল্ক দফতরের নাম করে জালিয়াতির এমন অভিযোগ বিশেষ পাওয়া যায়নি।
পুলিশ জানায়, মাস দু’য়েক আগে মুকুন্দপুরের ওই মহিলার সঙ্গে ফেসবুকে আলাপ হয় এক ব্যক্তির। নিজেকে মাইকেল অ্যালেক্স বলে পরিচয় দেওয়া ওই জালিয়াত জানায়, সে লন্ডনের বাসিন্দা। মঙ্গলবার শুভ্রা জানান, ওই যুবক তাঁকে বলে, সে একটি উপহার পাঠাতে চায়। তিনি প্রথমে তা নিতে অস্বীকার করেন। পরে বারংবার অনুরোধে রাজি হয়ে যান। শুধু তা-ই নয়, নিজের অনেক ব্যক্তিগত তথ্যও ওই মহিলা সেই জালিয়াতকে জানিয়ে দেন।
পুলিশের দাবি, এর পরেই শুভ্রা একটি ফোন পান। এক মহিলা নিজেকে শুল্ক দফতরের প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে জানায়, তাঁর জন্য উপহার এসেছে বিদেশ থেকে। পেতে গেলে ‘ক্লিয়ারেন্স ফি’ মেটাতে হবে। প্রথম দুই দফায় ওই মহিলা প্রায় ৩৭ হাজার টাকা জমা করেন প্রতারকদের অ্যাকাউন্টে। ফের ফোন আসে। বলা হয়, বিদেশি উপহারের জন্য ‘লিগ্যাল সার্টিফিকেট’ দরকার। তার জন্য প্রয়োজন ৭৫ হাজার টাকা। দুই দফায় সেই টাকাও দেন ওই মহিলা। কিন্তু ফের টাকা চাওয়ায় তাঁর সন্দেহ হয়। এর পরেই পুলিশে যান তিনি।
লালবাজারের এক অফিসার জানান, জালিয়াতেরা নিজেদের কৌশল বারবার বদল করে চলছে। আর সেই প্রলোভনে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন অনেকে। পুলিশের দাবি, এই নতুন ছকের পিছনেও রয়েছে বিদেশি জালিয়াতেরা। তারা কাজে লাগাচ্ছে এখানকার এজেন্টদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy