Advertisement
E-Paper

বন্দি ম্যানহোলে, হিসেব মেলাতে নাকাল কর্তৃপক্ষ

বিকেলের পরে বিভিন্ন ওয়ার্ডের বন্দির সংখ্যা মেলাতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ কর্তৃপক্ষের। এক জন বন্দির হিসেব মিলছে না। বিভিন্ন ওয়ার্ড, ক্যান্টিন, মাঠ— সর্বত্রই তল্লাশি শুরু করেন সংশোধনাগারের রক্ষীরা। আড়াই ঘণ্টা ধরে গলদঘর্ম হন তাঁরা। কিন্তু তাতেও খোঁজ মেলেনি ওই বন্দির।

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৮ ০০:২৫
আলিপুর জেল।ফাইল চিত্র।

আলিপুর জেল।ফাইল চিত্র।

ঘটনাস্থল আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার।

সেখানে কয়েক দিন আগে এসেছেন এক যুবক। এখনও সংশোধনাগারের আদবকায়দা জানা হয়নি তাঁর। সেই সুযোগে তাঁকে নানা রকম বুদ্ধি দিয়েছেন অন্য বন্দিরা। সেই বু্দ্ধি ধার করতে গিয়েই কয়েক ঘণ্টা ম্যানহোলে লুকিয়ে থেকে কর্তৃপক্ষকে নাজেহাল করলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের বাসিন্দা অর্ঘ্য মণ্ডল। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। বুধবার রাতেই তাঁর খোঁজ পান সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।

একটি ডাকাতির মামলায় গ্রেফতার হয়ে সাত-আট দিন আগে আলিপুরে এসেছেন অর্ঘ্য। অন্য দিনের মতো বুধবারও নিয়ম অনুসারে সবই করেছিলেন তিনি। এমনকি, বিকেলেও তাঁকে দেখেছিলেন কারারক্ষীরা। কিন্তু বিকেলের পরে বিভিন্ন ওয়ার্ডের বন্দির সংখ্যা মেলাতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ কর্তৃপক্ষের। এক জন বন্দির হিসেব মিলছে না। বিভিন্ন ওয়ার্ড, ক্যান্টিন, মাঠ— সর্বত্রই তল্লাশি শুরু করেন সংশোধনাগারের রক্ষীরা। আড়াই ঘণ্টা ধরে গলদঘর্ম হন তাঁরা। কিন্তু তাতেও খোঁজ মেলেনি ওই বন্দির।

এই পরিস্থিতির মধ্যে সংশোধনাগারের নিকাশিনালার একটি ম্যানহোলের দিকে নজর পড়ে কয়েক জন কারারক্ষীর। কারণ, ম্যানহোলের ঢাকনা ঠিক মতো লাগানো ছিল না। সেটি কিছুটা আলগা থাকায় কারারক্ষীদের সন্দেহ বাড়ে। এর পরে ওই ম্যানহোলের ঢাকনায় দু’-একটি লাথি মারেন তাঁরা। তখনই তাঁরা ম্যানহোলের ভিতর থেকে সামান্য আওয়াজ পান। ম্যানহোলের ঢাকনা খুলে দেখা যায়, গোড়ালি পর্যন্ত জলে পা ভিজিয়ে কাঁচমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন অর্ঘ্য। সেখান থেকে রাত পৌনে ন’টা নাগাদ তাঁকে উদ্ধার করেন কর্তৃপক্ষ।

ম্যানহোলে লুকিয়ে থেকে কি পালানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি? সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে সরাসরি জবাব দেননি অর্ঘ্য। বরং অন্য বন্দিদের ঘাড়ে ‘দোষ’ চাপিয়েছেন। অর্ঘ্য কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন, অন্য কয়েক জন বন্দি তাঁকে বলেছিলেন ম্যানহোলে কিছু ক্ষণ লুকিয়ে থাকার পরে সন্ধ্যা নামলে পালানোর একটা সুযোগ মিলতে পারে। তাই ম্যানহোলে জল থাকলেও তার মধ্যে ঘণ্টা তিনেক লুকিয়েছিলেন অর্ঘ্য। তাঁর এই অভিযোগের বাস্তবতা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই কয়েক জন বন্দিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন কর্তৃপক্ষ। তাতে অর্ঘ্যর বক্তব্যের সত্যতা এখনও মেলেনি। এক কারাকর্তার মতে, বিভিন্ন সংশোধনাগারে নিরাপত্তা থেকে তল্লাশি— সবই বেড়েছে। আলিপুরও তার ব্যতিক্রম নয়। তাতে পুরনো কিছু বন্দির সমস্যা হচ্ছে। তাঁরা কর্তৃপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত করার পাশাপাশি সংশোধনাগারের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করতে নতুন আসা বন্দিদের ব্যবহার করছেন। এই ঘটনাটিও তেমন ভাবে ঘটেছে বলে অনুমান কারাকর্তাদের। এই ঘটনার পরে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছেন আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। পালানোর চেষ্টা করায় অর্ঘ্যর বিরুদ্ধে একটি নতুন মামলা রুজু করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই আলিপুর থানার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।

Alipore Central Jail Inmate Embarrassment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy