Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata Metro

Kolkata Metro: মেট্রো স্টেশনের ফলকে ফের হিন্দির প্রাধান্য, বিতর্ক

অভিযোগ, বাংলা ও ইংরেজির মাঝে হিন্দিতে এমন ভাবে নাম লেখা হয়েছে যে, সব ছাপিয়ে একমাত্র ওই ভাষার হরফই চোখে পড়ছে।

তরজা: এই ফলক ঘিরেই উঠছে অভিযোগ। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

তরজা: এই ফলক ঘিরেই উঠছে অভিযোগ। শুক্রবার। ছবি: রণজিৎ নন্দী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২১ ০৬:৪৭
Share: Save:

নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর মেট্রোপথের পরে বিতর্কের কেন্দ্রে এ বার জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রো। নির্মীয়মাণ ওই মেট্রোর একাধিক স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে বসানো নামফলকে বাংলা এবং ইংরেজিকে ব্রাত্য করে হিন্দির আধিপত্য চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। সমাজমাধ্যমে ওই সমস্ত স্টেশনের ছবি ছড়িয়ে পড়ার পরে বিভিন্ন রেলপ্রেমী সংগঠনের সদস্যেরা এ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বলে খবর। মেট্রো কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, স্টেশন এখনও তাঁদের হাতে আসেনি। তাই সাজসজ্জার কিছুই চূড়ান্ত নয়। এর আগে নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর রুটে বরাহনগর ও দক্ষিণেশ্বর স্টেশনের ফলক নিয়েও একই বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। হইচই হওয়ায় সেই নামফলক সরিয়ে ফেলেন কর্তৃপক্ষ।

তারাতলা থেকে জোকা পর্যন্ত অংশে জোকা, ঠাকুরপুকুর, সখেরবাজার, বেহালা চৌরাস্তা, বেহালা বাজার এবং তারাতলা— এই ছ’টি স্টেশনের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পথে। লাইন পাতার কাজও শেষ। যদিও ট্রেন চলাচল শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় জোকা ডিপোর নির্মাণকাজ শেষ হতে সময় লাগবে। রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল) ওই পথ নির্মাণের দায়িত্বে। নোয়াপাড়া-দক্ষিণেশ্বর মেট্রোপথ নির্মাণের দায়িত্বেও তারাই ছিল। জোকা মেট্রোর স্টেশনগুলিতে আপ ও ডাউন প্ল্যাটফর্মে সম্প্রতি নামফলক বসানো হয়েছে। প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে সামনে ও পিছনে দু’টি করে মোট চারটি ফলক বসেছে। কিন্তু অভিযোগ, বাংলা ও ইংরেজির মাঝে হিন্দিতে এমন ভাবে নাম লেখা হয়েছে যে, সব ছাপিয়ে একমাত্র ওই ভাষার হরফই চোখে পড়ছে। বাংলা ও ইংরেজিতে যেখানে সাদার প্রেক্ষাপটে নীল রং ব্যবহার করা হয়েছে, সেখানে হিন্দির ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে লাল এবং নীল রং। ফলে হিন্দি হরফের প্রাধান্য অনেক বেশি চোখে পড়ছে।

একটি রেলপ্রেমী সংগঠনের সদস্য রুদ্রনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘স্টেশনে নামফলক বসানোর ক্ষেত্রে স্থানীয় ভাষা ও বৈশিষ্ট্যকে অগ্রাধিকার দেওয়ার নীতি রয়েছে। রাজ্যের সরকারি ভাষার পরে হিন্দি এবং ইংরেজিতে নাম থাকার কথা। সেখানে এমন প্রবণতা সাংস্কৃতিক আধিপত্যের ইঙ্গিত দেয়, যা নিন্দনীয়।’’ আর এক সদস্য অর্কোপল সরকার বলেন, ‘‘ওই মেট্রো চালু হতে এক বছরের বেশি দেরি। তার আগে কর্তৃপক্ষ তড়িঘড়ি নামফলক বসিয়ে কী প্রমাণ করতে চাইলেন, সেটাই বড় প্রশ্ন। এটা তো কৌশলে সাংস্কৃতিক আধিপত্য চাপিয়ে দেওয়ার মানসিকতা।’’

রসিকতা করে অনেকেই বলছেন, বিজেপি তো এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসেনি। তা-ও হিন্দির এমন বাড়বাড়ন্ত কেন? গত বিধানসভা নির্বাচনে বেহালা পূর্ব কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী পায়েল সরকার বললেন, ‘‘রাজনীতির বাইরে গিয়ে সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার মত হল, এই পরিষেবা চালু হলে সকলেই উপকৃত হবেন। সেটাই মাথায় রাখা উচিত। অন্য বিষয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ নয়।’’ বেহালা পশ্চিমের বিজেপি প্রার্থী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। উত্তর দেননি টেক্সট মেসেজের। কলকাতা মেট্রোর এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই সব স্টেশনের সাজসজ্জা এখনও চূড়ান্ত নয়। ত্রি-ভাষার সূত্র মেনেই ফলকে নাম লেখা হবে। পরিষেবা শুরু করার আগে যাবতীয় খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখে তবেই সব কিছু চূড়ান্ত করা হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Metro controversy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE