Advertisement
০২ এপ্রিল ২০২৩

নিরাপত্তা বৃদ্ধির দাবি উঠতেই এল তাইকোন্ডো-র পরামর্শ

বৃহস্পতিবার সাময়িক ভাবে সমস্যা মিটলেও শুক্রবার ফের বিক্ষোভ শুরু করেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ।

সামনে রোগী। চলছে জুনিয়র চিকিৎসকদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

সামনে রোগী। চলছে জুনিয়র চিকিৎসকদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:০২
Share: Save:

নিরাপত্তা বাড়ানোর লিখিত আশ্বাসের দাবি ছিল। পরিবর্তে মিলল তাইকোন্ডো প্রশিক্ষণের পরামর্শ। তাতেই আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলেন বিক্ষোভকারীরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সাময়িক ভাবে সমস্যা মিটলেও শুক্রবার ফের বিক্ষোভ শুরু করেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ। ওই চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে হাসপাতালে পৌঁছন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। সেখানে তিনি জানান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পর্যায়ের এক জনকে হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে রাখার পরিকল্পনা হচ্ছে। পাশাপাশি, মহিলা পুলিশ-সহ দশ জন পুলিশকর্মীও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। বিপুল রোগীর চাপ সামলাতে জুনিয়র চিকিৎসকদের তাইকোন্ডো শেখানোর পরিকল্পনার কথাও তখনই জানান তিনি। এর পরেই জুনিয়র চিকিৎসকেরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। যদিও দিন দুই আগেই রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে তিনি চিঠি পাঠিয়েছেন পাঠ্যক্রমে তাইকোন্ডো চালু করার জন্য। চিঠিতে তিনি জানিয়েছিলেন, মার্শাল আর্টস শরীরের থেকে মনকে বেশি প্রভাবিত করে। চিকিৎসকদের জন্য তা জরুরি।

বিক্ষোভকারীরা জানান, হাসপাতালের পরিকাঠামো পর্যাপ্ত না থাকার কারণেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাইকোন্ডো শিখে তাঁরা কি রোগীর পরিজনেদের সঙ্গে হাতাহাতি করবেন, সেই প্রশ্নও তোলেন কেউ কেউ। জুনিয়র চিকিৎসকদের সংগঠন ‘জুনিয়র ডক্টর্স ইউনিটি’-র তরফে কবিউল হক বলেন, ‘‘নিরাপত্তা এবং পরিকাঠামো পর্যাপ্ত নেই বলেই সমস্যা বা়ড়ছে। সে দিকে গুরুত্ব না দিয়ে তাইকোন্ডো শেখানোর পরিকল্পনা কেন?’’ স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, চিকিৎসকদের আত্মরক্ষার কথা ভেবেই তাইকোন্ডোর পরিকল্পনা হচ্ছে। তবে পরিকাঠামোর উন্নয়নের সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই।

বুধবার রাতে রোগী-মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ন্যাশনাল মেডিক্যাল। রোগীর পরিজনেদের বিরুদ্ধে কর্তব্যরত তিন জুনিয়র চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ দায়ের করা হয়। বৃহস্পতিবার নিরাপত্তার দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভে বসেন জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ। পরে কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেন, পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা হবে।

Advertisement

মৌখিক আশ্বাসে সাময়িক ভাবে বিক্ষোভ তুলে নিলেও এ দিন ফের হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান শুরু করেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। তাঁদের অভিযোগ, গোলমাল হলেই কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার আশ্বাস দেন, কিন্তু পরিস্থিতি অপরিবর্তিতই থাকে। তাই কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানাতে হবে, তাঁরা কী ব্যবস্থা নেবেন।

এ দিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, জরুরি বিভাগের মূল ফটকের দু’পাশে পুলিশ ব্যারিকে়ড করে দিয়েছে। তার উপরে জরুরি বিভাগের সামনেই বসে বিক্ষোভকারীরা। ফলে গাড়ি ঢুকতে পারছে না। এমনকী, জায়গা কম থাকায় ট্রলির যাতায়াতেও সমস্যা হচ্ছে। অনেকেই রোগীকে কোলে করে ভিতরে নিয়ে যান। যদিও বিক্ষোভকারীদের দাবি, হাসপাতালের কাজে কোনও সমস্যা হয়নি।

বিকেলে ফের পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তা এবং অধ্যক্ষ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বিক্ষোভকারীরা জানান, কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ করেন, সেটা দেখে পরবর্তী আন্দোলন হবে। এ দিনের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.