Advertisement
E-Paper

কেষ্টপুরে থমকে বাগজোলা সংস্কারের কাজ, চাপান-উতোর

কখনও স্রোতে ভেসে আসছে মৃত পশু, কখনও ছেঁড়া বালিশ, তোষক, প্লাস্টিক। এই সব বর্জ্য এত দিন স্রোতে ভেসে চলে যেত। কিন্তু এখন সেগুলি জড়ো হচ্ছে সেতুর নীচেই। তাই এই বর্ষাতেও কেষ্টপুর এলাকায় বাগজোলা খাল কার্যত অবরুদ্ধ।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৪ ০০:০১
বর্জ্য জমে এ ভাবেই অবরুদ্ধ খাল। —নিজস্ব চিত্র

বর্জ্য জমে এ ভাবেই অবরুদ্ধ খাল। —নিজস্ব চিত্র

কখনও স্রোতে ভেসে আসছে মৃত পশু, কখনও ছেঁড়া বালিশ, তোষক, প্লাস্টিক। এই সব বর্জ্য এত দিন স্রোতে ভেসে চলে যেত। কিন্তু এখন সেগুলি জড়ো হচ্ছে সেতুর নীচেই। তাই এই বর্ষাতেও কেষ্টপুর এলাকায় বাগজোলা খাল কার্যত অবরুদ্ধ।

সেচ দফতরের অভিযোগ, কেষ্টপুর এলাকায় বাগজোলা খাল এখন কার্যত বদ্ধ জলাশয় হয়ে গিয়েছে। এর অন্যতম কারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার অভাব। সাধারণ মানুষ এখনও বাগজোলা খালে নানা বর্জ্য ফেলছেন। অন্য দিকে সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশের দাবি, বাগজোলা খালের সংস্কারের কাজ চললেও বাগুইআটি উড়ালপুলের কাজ চলার জন্য কেষ্টপুর এলাকায় খাল সংস্কারের কাজ থমকে গিয়েছে।

সেচ দফতরের আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, উড়ালপুল নির্মাণের সময়ে একটি স্তম্ভ এমন জায়গায় করা হয়েছে যে ওই এলাকায় খাল-সংস্কার শুরু করা যাচ্ছে না। উড়ালপুল নির্মাণের সময় যাতে যানজট না হয় সে জন্য ভিআইপি রোডের দু’দিকে দু’টি অতিরিক্ত সেতু তৈরি হয়েছে। অভিযোগ সেতু দু’টির উচ্চতা যতটা হওয়ার কথা ছিল ততটা হয়নি। সে কারণেও বাগজোলার জল ওই দুই সেতুর কাছে এসে আটকে যাচ্ছে।

তবে উড়ালপুলের কাজের জন্য বাগজোলা খালের সংস্কার করা যাচ্ছে না এই অভিযোগ মানতে নারাজ পিডব্লিউডি-এর ইঞ্জিনিয়ারেরা। ওই প্রকল্পের চিফ ইঞ্জিনিয়ার সত্য বসু বলেন, “উড়ালপুল তৈরির জন্য খাল সংস্কার আটকে আছে এই অভিযোগ ঠিক নয়। খাল সংস্কারে যাতে বাধা না পড়ে সেই ভাবেই স্তম্ভ বসানো হচ্ছে। নতুন যে দুটো সেতু তৈরি হয়েছে তাদের উচ্চতাও আমরা সেচ দফতরের সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করেছি।”

এত দিন বর্ষায় বাগজোলা খালের কোথাও জল উপচে উঠলে কেষ্টপুর এলাকার ভিআইপি রোডে সেতুর নীচে জমে থাকা বর্জ্য পরিষ্কার করলেই অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যেত। কিন্তু সেচ দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, এ বছর পরিস্থিতি আলাদা। জলের স্রোত কেষ্টপুরে এসে থমকে যাচ্ছে। ফলে ভিআইপি রোডে সেতুর নীচে আটকে থাকছে বর্জ্য। তাঁদের দাবি, এখনই সেতুর নীচের ‘ভেন’ বা প্রকোষ্ঠের সংখ্যা না বাড়ালে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।

সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা জানাচ্ছেন, কেষ্টপুর সেতুর নীচে জল যাওয়ার জন্য ৬টি ভেন আছে। এগুলি দিয়ে ২১০০ কিউসেক জল প্রবাহিত হওয়ার কথা। সেখানে এত দিন ১২০০ কিউসেক জল যেত। ভেনগুলি দিয়ে এ বছর বর্ষায় মাত্র ৯৫০ কিউসেকের মতো জল প্রবাহিত হচ্ছে।

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা কেষ্টপুরের সেতুর নীচে ভেনের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছেন। সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার (মেট্রোপলিটন ড্রেনেজ ডিভিশন-২) সোমনাথ দে বলেন, “ওই সেতুর নীচে আরও ৪টি ভেন বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। ভেন বাড়লে ২০০০ কিউসেকের মতো জল প্রবাহিত হবে। তা হলে আর জল জমার সমস্যা থাকবে না।”

সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই এলাকায় যত দিন না পর্যন্ত অতিরিক্ত ‘ভেন’ তৈরি হচ্ছে তত দিন পাম্পের সাহায্যে অতিরিক্ত জল বের করে দেওয়া হচ্ছে। তবে বেশি বৃষ্টিতে সেটা সব সময় যথেষ্ট হয় না। এ ছাড়া বাগজোলা খাল সংলগ্ন এলাকাবাসী যাবতীয় আবর্জনা ওই খালে ফেলেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা না বাড়লে খাল সংস্কার করেও সমস্যা মিটবে না। সংশ্লিষ্ট পুরসভাকেও সচেতনতা বাড়াতে উদ্যোগী হতে বলেছি।”

keshtopur bagjola khal renovation aryabhatta khan kolkata news online kolkata news latest news canal reforms work
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy