ফাইল চিত্র।
কলকাতা পুরসভার হিসেব অনুযায়ী, এ শহরে করদাতার মোট সংখ্যা প্রায় সাত লক্ষ। সেই করদাতা সংক্রান্ত যে সমস্ত তথ্য পুরসভার তথ্যভাণ্ডারে রয়েছে, তা ভাল ভাবে বিশ্লেষণ করে সেখান থেকে ভবিষ্যতের কর-নীতি ঠিক করতে ‘ডেটা মাইনিং’ পদ্ধতির ব্যবহার শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা।
পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, এখনও শহরের একাধিক এলাকা সম্পত্তিকরের আওতাভুক্ত নয়। তার সঙ্গে ‘ইউনিট এরিয়া অ্যাসেসমেন্ট’ বা এলাকাভিত্তিক সম্পত্তিকরের মূল্যায়নের ফলে অনেক করদাতার সম্পত্তিকরের বিলে বেশ কিছু অসঙ্গতি দেখা গিয়েছে। সাপ্তাহিক ‘টক টু মেয়র’ কর্মসূচিতে সেই অসঙ্গতির কথা জানিয়েছেন একাধিক করদাতা। ফলে সেই সমস্ত অসঙ্গতি দূর করতে এবং আরও বেশি পুর এলাকাকে সম্পত্তিকরের আওতাধীন করার লক্ষ্যেই এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
এই ‘ডেটা মাইনিং’ পদ্ধতি কী?
পুরকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ‘ডেটা মাইনিং’-এর আক্ষরিক অর্থই হল হাতে থাকা তথ্য বিশ্লেষণ করে নতুন কোনও সম্ভাবনা বা নীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে দিক-নির্দেশের হদিস পাওয়া। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘তথ্য বিশ্লেষণের উন্নততর ধাপই হল ‘ডেটা মাইনিং’ বা তথ্যকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বিশ্লেষণ করে আরও নতুন তথ্য তুলে আনা। এত দিন কর সংক্রান্ত বিষয়টি নিয়ে নিয়মিত তথ্য বিশ্লেষণ করা হত। এ বার সেই বিশ্লেষণই আরও সংগঠিত ভাবে করা হবে। তাতে সম্পত্তির বার্ষিক মূল্যায়নে কোনও অসঙ্গতি রয়েছে কি না তা যেমন ধরা পড়বে, তেমনই তা দূর করতে কী করণীয় তা-ও ঠিক করা যাবে।’’
কিন্তু হঠাৎ করে এই নতুন পদ্ধতি প্রয়োগের কারণ কী? এর কারণ ব্যাখ্যা করে পুরকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, পুর ভোটের আগে রাজস্ব আদায় বাড়াতে চেষ্টার কসুর করছে না পুরসভা। গত ডিসেম্বরে একটি নির্দেশিকা জারি করে রাজস্ব আদায়ের দিকে কড়া নজর রাখার কথা বলা হয়েছিল সেই সমস্ত পুর দফতরকে, যারা রাজস্ব আদায়ের কাজ করে। সম্পত্তিকর থেকে আদায়কৃত রাজস্ব (ট্যাক্স রেভিনিউ) থেকে শুরু করে কর বহির্ভূত (নন ট্যাক্স রেভিনিউ) রাজস্বের ক্ষেত্রে লাইসেন্স ফি, বিনোদন কর, গাড়ি পার্কিং বাবদ ভাড়া ও বাজার থেকে প্রাপ্ত ভাড়া— সবেতেই নজরদারি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছিল।
কিন্তু তার পরেও পুরসভার অন্তর্বর্তী সমীক্ষায় ধরা পড়েছিল, কোথাও যেন ফাঁক থেকে
যাচ্ছে। সেই ফাঁক ভরাট করতেই এই নতুন পদ্ধতি প্রয়োগের সিদ্ধান্ত। এর জন্য ইতিমধ্যেই একটি ‘ডেটা মাইনিং সেল’ তৈরি করেছে পুর প্রশাসন। পুরসভার মুখ্য অর্থ আধিকারিকের নেতৃত্বে সেই কমিটিতে রয়েছেন রাজস্ব বিভাগের পাঁচ জন চিফ ম্যানেজার এবং পুর-তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের এক জন আধিকারিক-সহ মোট ন’জন।
পরবর্তী কালে প্রয়োজন হলে সেখানে মোট সদস্য সংখ্যা আরও বাড়তেও পারে। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘সপ্তাহে দু’দিন বৈঠক হচ্ছে। রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত একটি রিপোর্টও তৈরি হয়েছে।’’ তবে পুরসভা সূত্রের খবর, শুধু সম্পত্তিকরের ক্ষেত্রেই নয়। একই ধরনের কমিটি তৈরি
হয়েছে বিজ্ঞাপন দফতরের জন্যও। কী ভাবে বিজ্ঞাপন থেকে রাজস্ব আদায় বাড়ানো যায়, তা পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy