—প্রতীকী চিত্র।
প্রথম থেকে আন্ত্রিক নিয়ে ঢিলেঢালা মনোভাব ছিল কলকাতা পুরসভার। এমনকী, পুরসভার সরবরাহ করা জলে যে সংক্রমণ হয়েছে, তা-ও স্বীকার করতে চাননি মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু একাধিক পরীক্ষা করে পুরসভার জলেই যে সংক্রমণ রয়েছে, সেই বিষয়টি প্রায় পরিষ্কার হয়ে যায়। এ বার আর ডেঙ্গির মতো ভুল করেনি পুরসভা। পরিস্থিতি সামাল দিতে রবিবার, ছুটির দিনেও পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার এবং কর্মীদের একাংশ কাজে নেমে পড়েছেন। এ দিন সকাল থেকে যাদবপুর, বাঘা যতীন-সহ আন্ত্রিক আক্রান্ত বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে জলের নমুনা সংগ্রহ করেছেন তাঁরা। আক্রান্ত ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও
পৌঁছে যান পুরকর্মীরা।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, এক দিনেই আন্ত্রিক আক্রান্ত এলাকার শ’খানেক জায়গা থেকে জলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে এ দিন শুধু রাস্তার কল থেকেই নমুনা সংগ্রহ করে তার পরীক্ষা করা হয়েছে। জলের ক্লোরিন পরীক্ষায় প্রাথমিক ভাবে কিছু ধরা পড়েনি বলেই পুরসভা সূত্রের খবর। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘রাস্তার কলে যদি সমস্যা ধরা পড়ে, তা হলে ওই এলাকায় যে সমস্যা রয়েছে, সেটা ধরে নিতে হবে। কারণ ওই একই পাইপলাইনের মাধ্যমে বাড়িতেও জল সরবরাহ করা হচ্ছে। তখন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, ১০১, ১০২, ১০৩, ১১০ নম্বর ওয়ার্ড-সহ আন্ত্রিক আক্রান্ত একাধিক ওয়ার্ড থেকে গত কয়েক দিনে জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পুরকর্তাদের মতে, নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোর খবর এই মুহূর্তে নেই। আপৎকালীন পরিস্থিতি না হলে, বাড়িতে ঢুকে আর জল সংগ্রহ করে বাসিন্দাদের বিরক্ত করবেন না পুরকর্মীরা। পুর প্রশাসনের একাংশের দাবি, শুধু আন্ত্রিক পরিস্থিতির জন্য পুরকর্মীরা জলের নমুনা সংগ্রহ করছেন, তা নয়। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘পুরসভার সরবরাহ করা জলে ক্লোরিন মাপা কিন্তু নিয়মিত কাজ। সেটাই করা হচ্ছে।’’ আন্ত্রিক পরিস্থিতি এখন কেমন তা জানতে, এ দিন পুরসভার কর্মীরা আন্ত্রিক আক্রান্ত ওয়ার্ডের পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে গিয়ে তাঁরা রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন।
তবে আন্ত্রিক আক্রান্ত এলাকার বাসিন্দাদেরআতঙ্ক এখনও পুরোপুরি কাটেনি। বাসিন্দাদের মতে, জলের নমুনা সংগ্রহ করলেই তো শুধু হবে না! সংক্রমণ রুখতে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করতে হবে। এখনও তো পুরসভার সরবরাহ করা জল থেকেই নোংরা বেরোচ্ছে! সে দিকে আগে নজর দিক পুরসভা। ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লির এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘প্রচুর টাকা খরচ করে কেনা জল খেতে হচ্ছে এখনও। এমনকী, বাসনমাজা, কাপড় কাচা সবই ওই জলে করতে হচ্ছে। কল খুললে তো ঘোলাটে জল বার হচ্ছে। অথচ দাম বাড়ছে বোতলের জলের। আগে বোতলবন্দি যে জল ৩০ টাকায় কিনছিলাম, এখন তা বেড়ে ৬০-৬৫ টাকা হয়েছে। আমরা কী করব?’’ বাঘা যতীনের আর এক বাসিন্দার বিস্মিত উক্তি, ‘‘পুরসভা তো দেখছি জলের নমুনাই সংগ্রহ করে যাচ্ছে। সেই জল পরীক্ষা করে কী বেরোচ্ছে তা তো কেউ জানাচ্ছেন না! সব খবরই পাচ্ছি সংবাদমাধ্যম অথবা অন্যদের থেকে। কী করব, সেটাই বুঝতে পারছি না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy