Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জল প্রকল্প বাঁচাতে জমা পড়বে নকশা

জোয়ার-ভাঁটার সময়ে জলস্তর কতটা ওঠে-নামে, পাড়ের মাটির অবস্থাই বা কী, সেই হিসেবনিকেশ করা প্রায় শেষ। আর মাস খানেকের মধ্যেই পলতা জল প্রকল্প সংলগ্ন গঙ্গার পাড় বাঁধানোর কাজ কী ভাবে হবে, তার নকশা কলকাতা পুরসভার কাছে জমা পড়তে চলেছে।

রামগড়ের বিদ্যাসাগর কলোনিতে জন্ডিস আক্রান্তের বাড়িতে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

রামগড়ের বিদ্যাসাগর কলোনিতে জন্ডিস আক্রান্তের বাড়িতে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশিস মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯ ০২:১০
Share: Save:

জোয়ার-ভাঁটার সময়ে জলস্তর কতটা ওঠে-নামে, পাড়ের মাটির অবস্থাই বা কী, সেই হিসেবনিকেশ করা প্রায় শেষ। আর মাস খানেকের মধ্যেই পলতা জল প্রকল্প সংলগ্ন গঙ্গার পাড় বাঁধানোর কাজ কী ভাবে হবে, তার নকশা কলকাতা পুরসভার কাছে জমা পড়তে চলেছে। দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে সংস্থা গঙ্গার পাড় বাঁধানোর কাজের জন্য নির্বাচিত হয়েছে, এ বার তারা অনুমোদন পেতে পুরসভাকে নকশা জমা দেবে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। পুরসভা সে নকশা অনুমোদন করলে দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত হওয়া কাজ অবশেষে শুরু হবে। তেমনটা হলে তবেই কলকাতার সর্ববৃহৎ জল শোধনাগারকে গঙ্গার ভাঙন থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ।

পুরসভা সূত্রের খবর, ব্যারাকপুরে গঙ্গার ধারে ওই প্লান্টের চৌহদ্দিতে ক্রমাগত গঙ্গার স্রোত আছড়ে পড়া নিয়ে কয়েক বছর আগেই শোরগোল শুরু হয়েছিল। পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ শঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন যে, গঙ্গার পাড় না বাঁধানো গেলে অদূর ভবিষ্যতে ওই জল প্রকল্প গঙ্গায় তলিয়ে যেতে পারে। ফলে তার পর থেকেই দফায় দফায় ওই প্রকল্প রূপায়ণের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে পুরসভা। কিন্তু কখনও অর্থাভাবে, কখনও অন্য কোনও কারণে প্রকল্পের কাজ ক্রমাগত পিছোতে থাকে।

বর্তমানে অবশ্য সে জট কেটেছে। পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাকে গত ডিসেম্বরে ওয়ার্ক অর্ডারও দেওয়া হয়েছে। এর পর থেকেই সেখানে মাটি পরীক্ষা, কী ধরনের ধাতব পাত বসানো (শিট-পাইল) হবে, সে ব্যাপারে এত দিন যাবতীয় সমীক্ষা করছিল সংশ্লিষ্ট সংস্থা। এ বার তারই চূড়ান্ত নকশা অনুমোদনের পালা।

পুরসভা সূত্রের খবর, অন্য কাজের সঙ্গে গঙ্গার পাড় বাঁধানোর কাজের প্রকৃতিগত পার্থক্য রয়েছে। কারণ, এ ক্ষেত্রে হিসেবের সামান্য গরমিল হলেও যে উদ্দেশ্যে পাড় বাঁধানো হচ্ছে, তা ফলপ্রসূ হবে না। ফলে পলতা জল প্রকল্প নিয়ে সংশয়ও কাটবে না। ইঞ্জিনিয়ারেরা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র পাড় থেকেই শিট পাইল বসানো হবে না। বার্জ এনেও গঙ্গার অনেক জায়গায় ওই ধাতব পাত বসানো হবে। তাই জোয়ার-ভাঁটার সময়ে জলস্তর কতটা ওঠে-নামে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। পুরসভার এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘এমনি নির্মাণের সঙ্গে এই প্রকল্পের কাজের আকাশ-পাতাল তফাৎ। তাই সব দিক খতিয়ে কাজ করা হচ্ছে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, ৪৮০ একর জায়গা জুড়ে ব্রিটিশ আমলে সেই ১৮৬৪-’৭০ সালের মধ্যে পলতা জল প্রকল্পটি নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রাথমিক জল উৎপাদনের ক্ষমতা ছিল প্রতিদিন ৬০ লক্ষ গ্যালন। তার কয়েক বছর পরে ওই প্রকল্প থেকে তৈরি শুদ্ধ জল নিয়ে যাওয়া হয় টালায়। তার পর থেকে টালা জলাধার থেকেই উত্তর ও মধ্য কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশ ছাড়াও দক্ষিণ কলকাতার একাংশে পানীয় জল সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে এই প্রকল্পের জল উৎপাদনের ক্ষমতা ২৪ কোটি ৩০ লক্ষ গ্যালন। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই এই বৃহৎ জল প্রকল্পের সুরক্ষাকেই সব থেকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন পুর ইঞ্জিনিয়ারেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

KMC Blueprint Water Treatment Plant
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE