ফাইল চিত্র।
দুর্ঘটনা এড়াতে উল্টোডাঙা উড়ালপুলের দু’দিকের বাঁকে লোহার জাল বসানোর চিন্তাভাবনা শুরু করেছে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)।
ওই উড়ালপুলের যে অংশ লেক টাউনের দিকে নামছে, সেই বাঁকের কাছে গত মার্চ এবং এপ্রিলে দু’জন স্কুটার এবং বাইক আরোহীর দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। দু’টি ঘটনাতেই অতিরিক্ত গতির কারণে যান-সহ উড়ালপুল থেকে নীচে পড়ে যান তাঁরা। এর পরেই কলকাতা ও বিধাননগর পুলিশ উল্টোডাঙা উড়ালপুলের দু’দিকের বাঁকে জাল লাগানোর প্রস্তাব দেয় কেএমডিএ-কে। সূত্রের খবর, তার বাস্তবায়ন নিয়েই চলছে ভাবনাচিন্তা।
বর্তমানে কলকাতা এবং সংলগ্ন উড়ালপুলগুলিতে ফের রাতে গাড়ি চলাচলের অনুমতি দিয়েছে পুলিশ। যদিও মোটরবাইক ও স্কুটারকে সেই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া অনেকেই মোটরবাইক নিয়ে বেপরোয়াগতিতে চলাচল করেন। তাই উড়ালপুলের বাঁক নিয়ে চিন্তায় রয়েছে পুলিশ এবং কেএমডিএ।
কেএমডিএ-র ট্র্যাফিক ও ট্রান্সপোর্ট বিভাগের আধিকারিকদের যুক্তি, লোহার জাল বসানো যেতেই পারে। কিন্তু উড়ালপুলের নিজস্ব ওজন রয়েছে। তার উপরে বিরাট জালের ভার কতটা চাপানো যেতে পারে, সেটা নিয়েও বড় ভাবনা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ওই দুই বাঁক এতটাই অঙ্ক কষে তৈরি যে ওখানে দুর্ঘটনা ঘটলে, বিশেষত বাইকচালকদের ছিটকে নীচে পড়ার আশঙ্কাই বেশি। সংস্থার আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, অঙ্ক কষেই উড়ালপুলের দু’দিকেরবাঁকের নকশা করার জন্য গাড়ির গতি বেঁধে দেওয়া আছে। যদিও বেশির ভাগ চালক সেই হিসেবের ধার ধারেন না বলে অভিযোগ। তিন-চার মাস আগের দুই দুর্ঘটনায় জীবন দিয়ে যার মাসুল দিয়েছেনদুই আরোহী।
কলকাতা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানাচ্ছেন, গার্ডেনরিচ উড়ালপুলেও উল্টোডাঙার মতো কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। যেখানে বাইকআরোহী উড়ালপুল থেকে নীচে পড়ে গিয়েছিলেন। দু’বছর আগে ওই উড়ালপুলে জাল লাগানো হয়েছে। তাই কেএমডিএ-কে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল উল্টোডাঙার ক্ষেত্রেও বিষয়টি বাস্তবায়িত করার পরিকল্পনা নিতে।
উল্লেখ্য, বছর দশেক আগের এক রাতে লেক টাউন থেকে বাইপাসমুখী একটি লরি উল্টোডাঙা উড়ালপুলের নীচে পড়ে যায়। সেই ঘটনার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, লরির মতো ভারী গাড়ি উল্টোডাঙা-সহ শহরের বিভিন্ন উড়ালপুলে উঠতে দেওয়া হবে না। এর জন্য হাইট বারও বসায় কেএমডিএ।
কিন্তু তবুও আটকানো যায়নি এই প্রবণতা। ফলে বেপরোয়া গাড়ি বা ছোট লরি রাতের অন্ধকারে হাইট বার ভেঙেও বহু বার উড়ালপুলে উঠে যায় বলে অভিযোগ ওঠে। উল্টোডাঙা উড়ালপুলে তেমনই বেআইনি ভাবে রাতে বেপরোয়া বাইক উঠে গিয়ে যে দুর্ঘটনার কবলে পড়বে না, সেই নিশ্চয়তাও নেই। উল্টোডাঙা উড়ালপুল থেকে স্কুটার আরোহীর পড়ে যাওয়ার ঘটনাটিও রাতেই ঘটেছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy