Advertisement
E-Paper

রোগীকে ২৫ বছর চিনি, তাই অত রাতেও ছুটে এসেছিলাম: ডাক্তার

রাতভর পরিস্থিতি সামলে শুক্রবার ভোর পাঁচটায় বাড়ি ফেরেন ডাক্তাবাবু। নার্সিংহোমের পরিস্থিতি সকালে আরও ভয়ানক হলে ফের ফোন পান তিনি। তাঁরই অধীনে ভর্তি ছিলেন রোগী। তাই দায়িত্ব এড়াতে পারেননি। বারণ করেছিলেন বাড়ির লোকজন। শোনেননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৭ ০৪:১২
হাসপাতালে জখম চিকিৎসক জগদীশপ্রসাদ অগ্রবাল। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালে জখম চিকিৎসক জগদীশপ্রসাদ অগ্রবাল। নিজস্ব চিত্র

দীর্ঘ ২৫ বছরের সম্পর্ক রোগী ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে। সেই কারণেই বৃহস্পতিবার রাত দু’টোর সময়ে রাজারহাট থেকে ফুলবাগানের নার্সিংহোমে ছুটে গিয়েছিলেন ৬৬ বছরের চিকিৎসক জগদীশপ্রসাদ অগ্রবাল। ততক্ষণে মারা গিয়েছেন তাঁর রোগী অমরনাথ জায়সবাল।

রাতভর পরিস্থিতি সামলে শুক্রবার ভোর পাঁচটায় বাড়ি ফেরেন ডাক্তাবাবু। নার্সিংহোমের পরিস্থিতি সকালে আরও ভয়ানক হলে ফের ফোন পান তিনি। তাঁরই অধীনে ভর্তি ছিলেন রোগী। তাই দায়িত্ব এড়াতে পারেননি। বারণ করেছিলেন বাড়ির লোকজন। শোনেননি।

এ দিন হাসপাতালের শুয়ে জগদীশবাবু বলেন, ‘‘সকালে অনেক লোক জড়ো হয়েছিলেন। এঁদের বেশির ভাগকেই আমি চিনি না। হাফ প্যান্ট, সাদা টি-শার্ট, টুপি পরা যে লোকটি আমাকে ইট ছুড়ে মারল, তাঁকে আমি কখনও দেখিনি।’’

কারা এঁরা? যাঁরা রোগীর আত্মীয় বলে চড়াও হচ্ছেন? রেয়াত করছেন না বৃদ্ধ চিকিৎসককেও?

ওই চিকিৎসকের ছেলে গোপালবাবুর দাবি, খোঁজ নিয়ে তিনি জেনেছেন, এই টুপি পরা ব্যক্তি আদৌ অমরনাথের আত্মীয় নন। তিনি হয় অমরনাথ বা তাঁর কোনও আত্মীয়ের সঙ্গে প্রাতর্ভ্রমণ করেন। এ দিন প্রাতর্ভ্রমণে গিয়ে ওই মৃত্যুর খবর পেয়ে নার্সিংহোমে চলে আসেন তিনি। মারমুখী হয়ে ওঠেন। এমনকী, আহত জগদীশবাবুকে নিয়ে যখন এ দিন সকাল সওয়া ন’টা নাগাদ ফুলবাগান থানায় যান গোপালবাবু এবং অন্যরা, তখনও এই ব্যক্তি কিছু সঙ্গীকে নিয়ে থানায় যান। গোপালের কথায়, ‘‘থানায় আমি পুলিশকে বলেছিলাম, এই ব্যক্তিই মূল দোষী। আমার বাবার মাথা থেকে তখন ঝরঝর করে রক্ত পড়ছিল। ওই ব্যক্তি পুলিশের সামনেই আমাকে চিৎকার করে বলেন, ‘নিজের বাবার সামান্য রক্ত দেখে আপনি বিচলিত হয়ে পড়ছেন, আর আমার ভাই তো মারা গিয়েছেন। আমি কাউকে ছাড়ব না।’ পুলিশ ওঁকে তখন ধরল না। পরে জানলাম, তিনি পালিয়ে গিয়েছেন।’’

২৮ মার্চ তাঁর দ্বিতীয় বারের জন্য বাইপাস সার্জারি হয়েছে। গত ৫ বছরে হার্টে মোট ৮টি অস্ত্রোপচার হয়েছে। জগদীশবাবু জানান, শরীরের কারণে এখন তিনি হাসপাতাল, নার্সিংহোমে রোগী দেখেন না। অমরনাথ পুরনো রোগী। তিনিই হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন তাঁকে। আহত চিকিৎসকের কথায়, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে রোগী দেখে যাচ্ছি। বেশি দিন একটানা দেখার পরে রোগীর বাড়ির লোকের সঙ্গে আত্মীয়তাও তৈরি হয়ে যায়। সেই আত্মীয়তারই মাসুল দিতে হল আজ।’’

Doctor Patient জগদীশপ্রসাদ অগ্রবাল
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy