Advertisement
E-Paper

Festival: খুশির ইদে রঙিন শহর, দেখা গেল বিধি ভাঙার ছবিও

এ দিন সাতসকালে আকাশ কালো করে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি কিছুটা হলেও বাদ সেধেছিল ইদের উৎসবে। তবে বেলা বাড়তেই দেখা মেলে ঝলমলে রোদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২২ ০৬:২৯
প্রার্থনা: খুশির ইদে নমাজ পড়তে ভিড় নাখোদা মসজিদে। মঙ্গলবার।

প্রার্থনা: খুশির ইদে নমাজ পড়তে ভিড় নাখোদা মসজিদে। মঙ্গলবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

লম্বা ঝুলের পাঠানি কুর্তার সঙ্গে মানানসই ফেজ় টুপি, চোখে সুরমা আর পায়ে বাহারি জুতো। ইদের সকালে এ ভাবেই সেজেগুজে বাবার সঙ্গে হেঁটে আসছিল ছোট্ট হামিদ। মসজিদের সামনের রাস্তায় ‘জয়রাইড’ চোখে পড়তেই বাবার হাত ছাড়িয়ে তারই একটিতে সটান চেপে বসল সে। চলল অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে খুনসুটিও। কিছুক্ষণ পরে হামিদকে ডাকতে হাঁক পাড়লেন বাবা— ‘ঘোড়া চড়তে যেতে হবে তো!’

শখের ঘোড়ায় চড়া, নতুন পোশাক থেকে রকমারি খাবার, ভিড় করে মেলা দেখা— মঙ্গলবার খুশির ইদে শহর জুড়ে চলল এ সবই। পাশাপাশি উৎসবের দিনে শহরের রাস্তায় দেদার বিধি ভাঙার সেই পুরনো রোগের দেখা মিলল এ বছরেও। ট্র্যাফিক নিয়ম থেকে শুরু করে কোভিড বিধিভঙ্গ— খুশির ইদে শহরে বাদ গেল না কোনওটাই।

এ দিন সাতসকালে আকাশ কালো করে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি কিছুটা হলেও বাদ সেধেছিল ইদের উৎসবে। তবে বেলা বাড়তেই দেখা মেলে ঝলমলে রোদের। সকালের অন্ধকার কেটে বেলার দিকে আকাশ পরিষ্কার হতেই ভিড় বেড়েছে শহরের বিভিন্ন জায়গায়। পাঞ্জাবি ও ফেজ় টুপি পরে গঙ্গার পাড় থেকে ভিক্টোরিয়া, ময়দান— সর্বত্রই দেদার ভিড় ছিল এ দিন। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছিল ছোট ছোট মেলার আয়োজনও।

খিদিরপুরের কবিতীর্থ সরণির রফি গার্ডেনে ইদ উপলক্ষে সকাল থেকেই মেলা বসেছিল। বিভিন্ন ‘জয়রাইড’ থেকে শুরু করে নাগরদোলা— ছিল সবই। নাগরদোলা থেকে নেমে সালোয়ার সামলানোর ফাঁকে ফতেমা খাতুন বললেন, ‘‘গত দু’বছর তো খুশির ইদে এই আনন্দগুলোই ছিল না। এ বছর তা-ও অনেকটা আগের মতোই সব হয়েছে।’’ ইদ উপলক্ষে
সকাল থেকেই ভিড় ছিল গঙ্গার ঘাটগুলিতে। বেলা বাড়তেই ভিড়ের সঙ্গে আতরের গন্ধে ম ম করেছে প্রিন্সেপ ঘাট ও ময়দান চত্বর। প্রিন্সেপ ঘাটে দাঁড়িয়ে বন্ধুদের সঙ্গে নিজস্বী তোলার ফাঁকে আলাউদ্দিন বললেন, ‘‘সকালে নমাজ পড়েই বন্ধুরা মিলে ময়দানে গিয়েছিলাম। তার পরে ওখান থেকে গঙ্গার ঘাটে। বিকেলে খাওয়াদাওয়া করে তার পরে বাড়ি ফেরা। আজ চুটিয়ে আনন্দ করার দিন!’’

নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন জ়াকারিয়া স্ট্রিটে এ বছর ছিল কচিকাঁচাদের জন্য ছিল হরেক রকমের জয়রাইড। নমাজ শেষ হতেই এখানে ভিড় করে ছোটরা। তবে সেখানে ছোটদের নজর কাড়ে ঘোড়ারা। ছোট্ট জায়গার সামনে ভিড় করে এ দিন ঘোড়ায় চড়তে গেল ছোটদের। সঙ্গে ঘোড়ায় সওয়ারি হলেন বড়দেরও কেউ কেউ। দুপুর থেকেই ভিড় ছিল ময়দান ও ভিক্টোরিয়া চত্বরে। ময়দানে দাঁড়িয়ে নিজস্বী, হই হুল্লোড়, ঘোড়ার পিঠে চেপে ক্যামেরার সামনে পোজ় দেওয়া— বাদ ছিল না কিছুই। ময়দানে ঘোড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ওয়াসিম বললেন, ‘‘গরমের জন্য তো এক সপ্তাহ ধরে কেউ এমুখো হচ্ছিলেন না। আজ আর ও সবের চিন্তা নেই। সব মনে হচ্ছে পুষিয়ে যাবে।’’

দুপুরে রাস্তার ভিড়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে রেস্তরাঁগুলির ভিড়ও। পার্ক স্ট্রিট, নিউ মার্কেট, পার্ক সার্কাসের একাধিক রেস্তরাঁর সামনে এ দিন ছিল লম্বা লাইন। ভিড় ছিল বিভিন্ন সিনেমা হলের টিকিটের লাইনেও।

তবে উৎসবের দিনে বিধিভঙ্গের সেই পুরনো অভ্যাসের বদল হল না এ দিনও। শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশি নজরদারি থাকলেও তার ফাঁক গলেই একাধিক জনকে পিছনে বসিয়ে ছুটল মোটরবাইক। বাদ রয়েই গেল মাথায় হেলমেট, মুখে মাস্ক। যদিও এ নিয়ে কলকাতা পুলিশের এক কর্তা বললেন, ‘‘ইদ উপলক্ষে শহরের রাস্তায় অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ট্র্যাফিক বিধি ভাঙলে সতর্ক করার পাশাপাশি, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।’’

eid Kolkata
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy