Advertisement
E-Paper

কফি দিবসে জয়যাত্রার দ্বিতীয় ইনিংস

লড়াই কঠিন বুঝেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্যের আবেদন রেখেছিলেন ওঁরা। সেই ডাকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন দেশ ও বিদেশের অনেকে। পাঁচ টাকা থেকে কয়েক হাজার, সাহায্যের ঢেউ উঠেছিল এ ভাবেই।

দীক্ষা ভুঁইয়া

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২০ ০২:২৭
পুনর্জন্ম: নতুন ঠিকানায় সেজে উঠেছে কাফে। নিজস্ব চিত্র

পুনর্জন্ম: নতুন ঠিকানায় সেজে উঠেছে কাফে। নিজস্ব চিত্র

এ-ও এক পজ়িটিভ। তবে আতঙ্কের নয়, জেদ আর সঙ্কল্পের অন্য নাম। বছর দুই আগে সাড়ে সাতশো বর্গ ফুটের জায়গা খুঁজতে ওঁরা হিমশিম খেয়েছিলেন। কারণ যাঁদের জন্য এই জায়গা, তাঁদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলেন অনেকেই। শেষে অবশ্য মিলেছিল ছোট্ট গ্যারাজ। যেখান থেকে শুরু ওঁদের কফি শপের স্বাবলম্বী যাত্রা।

রমরমিয়ে চলা সেই কাফে, কোভিড পজ়িটিভের বাতাবরণে থমকে যেতে বসেছিল। শেষ হয়ে গিয়েছিল ঠিকানার মেয়াদ। তার উপরে লকডাউন। কিন্তু ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত বুঝেও হাল ছাড়তে চাননি ১২ জন তরুণ-তরুণী। যার ফলে আজ, বৃহস্পতিবার ‘বিশ্ব কফি দিবস’ উপলক্ষে ‘কাফে পজ়িটিভ’ শুরু করছে তার দ্বিতীয় ইনিংস। এ বার ঠিকানা ৬৪এ, লেক ভিউ রোড।

লড়াই কঠিন বুঝেই সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্যের আবেদন রেখেছিলেন ওঁরা। সেই ডাকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন দেশ ও বিদেশের অনেকে। পাঁচ টাকা থেকে কয়েক হাজার, সাহায্যের ঢেউ উঠেছিল এ ভাবেই। সব মিলিয়ে ভাণ্ডে জমেছে কয়েক লক্ষ টাকা। সেই টাকায় স্বপ্নকে সত্যি করে সেজে উঠেছে নয়া ঠিকানা। মনীষা, নীহারিকা, মানসরা সকলেই এইচআইভি পজ়িটিভ। তাই যে বাড়ির একতলা ভাড়া নিয়ে তাঁরা কফি শপ খুলেছেন, তার কয়েক জন প্রতিবেশীর থেকে এসেছিল প্রতিবাদ। কিন্তু তাতেও পিছিয়ে যাননি মূল উদ্যোক্তা কল্লোল ঘোষ এবং তাঁর ছেলে-মেয়েরা।

আরও পড়ুন: বদলের ডাকে বিপাকে মিষ্টি-বিক্রেতারা ​

কেউ পাঁচ বছর, কেউ আবার সাত-আট বছর বয়স থেকে বারুইপুরের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হোমে থেকে বড় হয়েছেন। অনাথ ছেলেমেয়েদের কেউ উচ্চ মাধ্যমিক, তো কেউ স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। কিন্তু চাকরি কে দেবে? এইচআইভি পজ়িটিভ-দের আজও ছুঁতে ভয় পান অনেকেই। অথচ আঠারোর পরে এঁদের হোমেও রাখা যায় না। তাই স্বাবলম্বী হতেই বছর দুই আগে যোধপুর পার্কে তৈরি

হয়েছিল প্রথম কফি শপ। ভালই চলছিল। কিন্তু ভাড়া নেওয়া হয়েছিল দু’বছরের জন্য। তাই মেয়াদ শেষ হতেই গোটাতে হয়। নতুন করে পথ চলতে গিয়ে মেলে লেক ভিউয়ের এই জায়গা। কিন্তু ভাড়ার টাকা দেবে কে? তাই সকলকে ছোট্ট ভিডিয়ো বার্তায় আবেদন করেছিলেন ওঁরা। বুধবার দুপুরে নতুন ঠিকানায় দেখা হল নিশির সঙ্গে। নিজের হাতে দেওয়ালে এঁকে চলেছেন তিনি। কেউ আবার ভিতরের দেওয়ালে কারুকাজ করতে তখন মগ্ন। ওঁদের কাছে এ শুধু কারুকাজ নয়, নতুন করে দৌড়ের শুরু।সঙ্গে ওঁদের আবেদন, “আমাদের তৈরি কফি খেলে এইচআইভি আক্রান্ত হবেন না। করুণা করে নয়, স্বাধীনভাবে বাঁচতে দিন।”

Kolkata Cafe
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy