Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Increasing mosquitoes

পুলিশি নোটিসেও দেখা নেই মালিকের, রাস্তায় গাড়ির কঙ্কাল যেন মশার কারখানা

কলকাতা পুরসভার অনুরোধ, থানা চত্বরে ও বিভিন্ন রাস্তায় পড়ে থাকা গাড়ির দিকে নজর দিতে। গত কয়েক সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও এই যন্ত্রণা মিটবে কী ভাবে, উত্তর মিলছে না।

An image of Cars

পরিত্যক্ত: এ ভাবেই পড়ে আছে পুরনো গাড়ি। ই এম বাইপাসের কালিকাপুরে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৩ ০৭:৫২
Share: Save:

মামলা হওয়া গাড়ি পুরসভা বা পুলিশ ছুঁয়েও দেখে না! বছরের পর বছর পড়ে থাকতে থাকতেই সে সবের কঙ্কাল বেরিয়ে যায়। বর্ষায় ভিতরে জল জমে থাকে। মশার জন্মস্থানের তালিকায় থাকা এমন গাড়ি নিয়ে এ বারেও বর্ষার শুরু থেকে হইচই হয়েছে। কলকাতা পুলিশের কাছে পুরসভা অনুরোধ করেছে, থানা চত্বরে ও বিভিন্ন রাস্তায় পড়ে থাকা এমন গাড়ির দিকে নজর দিতে। গত কয়েক সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও এই যন্ত্রণা মিটবে কী ভাবে, উত্তর মিলছে না।

কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, পুরসভার বার্তা পেয়ে কিছু দিন আগেই এমন পড়ে থাকা গাড়ি নিয়ে সমীক্ষা করেছে লালবাজার। অন্তত আটটি ট্র্যাফিক গার্ড এলাকায় মামলা হওয়া এমন গাড়ি পড়ে থাকার উদাহরণ সামনে এসেছে সেই সমীক্ষায়। তবে পুলিশের হিসাবে সব মিলিয়ে এমন গাড়ির সংখ্যা মাত্র ৬০। প্রত্যেকটির নম্বর প্লেট ধরে মালিকদের নোটিস পাঠানো হয়েছে। গত ১৫ দিনে নোটিস পেয়ে মাত্র চার জন পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে খবর। কিন্তু তার পরেও এমন গাড়ি সরানো যায়নি।

লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের এক পুলিশকর্মীর দাবি, ‘‘এই ধরনের গাড়ি কোনও না কোনও মামলায় জড়িত। চাইলেই ওই সব গাড়ি সরিয়ে ফেলা যায় না। সরালে পরবর্তী কালে আদালতে সমস্যায় পড়তে হয়। তাই গাড়ি সরিয়ে ফেলার জন্য মালিকদের নোটিস পাঠিয়ে ডাকা হয়েছিল। সাড়া মেলেনি।’’

যদিও পথচারীদের একাংশের দাবি, বছরের পর বছর এমন মামলার বোঝা নিয়ে পড়ে থাকা গাড়ি কিন্তু ৬০টির অনেক বেশি। রাস্তায় ঘুরলেই এমন বহু গাড়ি চোখে পড়ে বলে তাঁদের দাবি। ইএম বাইপাস জুড়ে এমন গাড়ি সব চেয়ে বেশি। দক্ষিণ শহরতলির বাইপাসে রাস্তার দু’ধারে পড়ে থাকা এমন গাড়ির বাইরের অংশ অবশিষ্ট নেই। অধিকাংশেরই নম্বর প্লেট নেই। শুধু কাঠামোটা পড়ে। তার মধ্যেই জমছে জল। আসনের কাঠামোয় আটকে থাকা প্লাস্টিকের পাত্রে, ভাঁড়ে জল জমে। কসবা কানেক্টরে দেখা গেল, বাতিল গাড়িতে রাখা একাধিক ফাটা টায়ার। সেখানেও জমে জল। স্থানীয় এক বাসিন্দার বক্তব্য, ‘‘খালি চোখেই দেখা যায়, লার্ভা রয়েছে। তবে সেগুলি কিসের, বলা মুশকিল। মামলার ভয়ে পুলিশ বা স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি, কেউই কিছু করেন না। চিঠি দিয়ে আমরা ক্লান্ত।’’

একই ছবি তিলজলা, পর্ণশ্রী, ট্যাংরায়। এই ধরনের গাড়ি একটির উপরে আর একটি চাপিয়ে রাখা রয়েছে ট্যাংরায়। বেলেঘাটা এবং ক্যানাল ইস্ট ও ওয়েস্ট রোডে এমন পরিত্যক্ত গাড়ির ছড়াছড়ি। মানিকতলা থানার ক্যানাল ইস্ট রোড লাগোয়া গলিতে আবার এমন ভাবে এই গাড়ি রাখা, যা অন্য গাড়ির যাতায়াতের পথে সমস্যার কারণ হয়ে উঠেছে। জল জমছে গাড়ির নীচের আবর্জনার স্তূপে। দিনকয়েক আগে স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি রাস্তা পিচ করতে এলেও ওই গাড়ির জন্য কাজ শেষ হয়নি। কারণ, মালিকের দেখাই মেলেনি। ফলে, ওই অংশ বাদ দিয়ে পিচ করতে হয়েছে।

এক বাসিন্দার প্রশ্ন, ‘‘পুলিশ কেন আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে না? এমন গাড়ির জন্য আদালতে আবেদন করে যদি লোকালয়ের বাইরে বিকল্প জায়গার ব্যবস্থা হয়, তবে বিপদ কিছুটা কমে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE