Advertisement
০৩ মে ২০২৪

হেনস্থা করার অভিযোগে দুই শিক্ষিকা থানায়

অধ্যক্ষ এবং ওই শিক্ষকও দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে থানায় পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:১৮
Share: Save:

অধ্যক্ষ এবং এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে টালিগঞ্জ থানায় হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করলেন চারুচন্দ্র কলেজের দুই শিক্ষিকা। গত শুক্রবার দায়ের করা ওই অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়েছে, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে নানা ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে ওই দুই শিক্ষিকাকে। অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির পাশাপাশি তাঁদের উদ্দেশে কুরুচিকর মন্তব্যও করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। ওই দুই শিক্ষিকার দাবি, কলেজের ‘অ্যান্টি সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট সেল’-এ বিষয়টি জানিয়েও কাজ না হওয়ায় তাঁরা বাধ্য হয়ে থানায় গিয়েছেন।

পাশাপাশি, অধ্যক্ষ এবং ওই শিক্ষকও দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে থানায় পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই শিক্ষকের অভিযোগ, ‘‘দুই শিক্ষিকা আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। আদতে ওঁদের বিরুদ্ধেই একাধিক অভিযোগ রয়েছে।’’ কলেজের অধ্যক্ষ সত্রাজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘নিয়মিত কলেজে আসেন না ওই দুই শিক্ষিকা। কেন আসেন না, জানতে চাওয়ায় ওঁরা আমাকে অসম্মান করেছেন।’’ পুলিশ জানায়, এটি কলেজের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কলেজ কর্তৃপক্ষই বিষয়টির নিষ্পত্তি করুন। তবে তাঁরা পুলিশের সাহায্য চাইলে তদন্ত শুরু করা হবে।

অভিযোগকারী দুই শিক্ষিকার এক জন রবিবার জানান, গত ৩ ফেব্রুয়ারি অধ্যক্ষ সত্রাজিৎবাবুর সঙ্গে কথা বলতে তাঁর ঘরে গিয়েছিলেন তাঁরা। সে সময়েই ঘরে ঢোকেন অন্য অভিযুক্ত শিক্ষক। এক শিক্ষিকার কথায়, ‘‘ঘরেই অধ্যক্ষ এবং ওই শিক্ষক আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। আমাদের চরিত্র নিয়েও নানা আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে।’’ আর এক শিক্ষিকা বললেন, ‘‘আমি বর্তমানে স্বামীর সঙ্গে থাকি না। সে জন্য অসম্মানজনক কথা শুনতে হয়েছে। যা বলেছেন, মুখে আনতে পারব না।’’

দুই শিক্ষিকার দাবি, ফেব্রুয়ারিতেই তাঁরা বিষয়টি কলেজের ‘অ্যান্টি সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট সেল’-এ জানিয়েছিলেন। কিন্তু দু’মাস কেটে গেলেও কোনও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের। এ বিষয়ে অধ্যক্ষের বক্তব্য, ‘‘সেলে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নিশ্চয়ই সিদ্ধান্ত হত। আসলে ওই শিক্ষিকাদেরই ধৈর্য নেই।’’

গত শুক্রবার বিষয়টি নিয়ে কলেজের টিচার্স কাউন্সিলের বৈঠকে আলোচনা হয়। দুই শিক্ষিকা আরও অভিযোগ করেছেন, সেখানে তাঁদের শারীরিক ভাবে হেনস্থা করা হয়। এর পরেই তাঁরা থানায় অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেন।

ঘটনাটি জানানো হয়েছে কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ তথা দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস কুমারকেও। দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘অভিযোগ দায়ের হয়েছে। কলেজ এবং পুলিশ তদন্ত করবে। আমায় ওঁরা জানিয়েছিলেন, আমিও কলেজের সঙ্গে কথা বলেছি।’’ টিচার্স কাউন্সিলের সম্পাদক বিমলশঙ্কর নন্দ বলেন, ‘‘অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি লিখিত ভাবে জানিয়েছেন, এমন কিছুই ঘটেনি। সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে। বিষয়টি টিচার্স কাউন্সিলের বৈঠকে ওঠে। তবে গলা টেপার মতো কিছু ঘটেনি। আর এটি কলেজের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। ফলে কলেজ কর্তৃপক্ষ মেটালেই ভাল হত। থানা-পুলিশ করলে শিক্ষকদের সম্মান থাকে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Harassment Police Complaint
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE