Advertisement
E-Paper

শিশু পাচারকারী সন্দেহে আটক দিদা, মৃত্যু অসুস্থ নাতনির

জিআরপি সূত্রের খবর, ট্রেন শিয়ালদহ ছাড়ার পরেই অনন্যা কাঁদতে থাকে। ৫০ বছরের প্রৌঢ়া তাকে থামাতে পারছেন না দেখে মহিলা যাত্রীদের সন্দেহ হয়, তিনি পাচারকারী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৮ ০৩:০৬
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শিশু পাচারকারী সন্দেহে বনগাঁ লোকালের কামরায় হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন এক মহিলা। সাত ঘণ্টার দীর্ঘ টানাপড়েন শেষে জানা যায়, অভিযুক্ত প্রৌঢ়াই ওই শিশুকন্যার দিদিমা। সোমবারের সেই ঘটনার পরে মঙ্গলবার সকালে পরিবারের লোকজনের সাহায্যে দু’মাসের ‘সুস্থ’ নাতনিকে নিয়ে হাবড়ার বাড়িতে ফেরেন সীমা দাস। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মারা গেল সেই মেয়ে।

সোমবার মেয়ে চম্পা দে ও জামাই কুশ দে-কে সঙ্গে নিয়ে নাতনি অনন্যার নিয়মমাফিক শারীরিক পরীক্ষার জন্য কলকাতায় আসেন সীমা। ফেরার সময়ে শিয়ালদহ থেকে রাত ৮টা ৫ মিনিটের বনগাঁ লোকাল ধরেন তাঁরা। পরিবার সূত্রের খবর, বাড়ি ফেরার আগে অশোকনগরে বড় জামাইয়ের বাড়ি যাওয়ার কথা বলেছিলেন সীমা। তাই তিনি নাতনিকে নিয়ে মহিলা কামরায় ওঠেন। চম্পা এবং কুশ সাধারণ কামরাতেই উঠেছিলেন।

জিআরপি সূত্রের খবর, ট্রেন শিয়ালদহ ছাড়ার পরেই অনন্যা কাঁদতে থাকে। ৫০ বছরের প্রৌঢ়া তাকে থামাতে পারছেন না দেখে মহিলা যাত্রীদের সন্দেহ হয়, তিনি পাচারকারী। এ দিন সীমা বলেন, ‘‘ওঁদের বললাম, আমি মেয়ের দিদুন হই। মেয়ে-জামাই অন্য কামরায় আছে। কথাই শুনল না। জোর করে দমদম ক্যান্টনমেন্টে নামিয়ে দিল।’’

আরও পড়ুন: স্বপন খুনে পাকড়াও গাজিপুর গ্যাংয়ের ৬

খবর পেয়ে ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে যায় দমদম থানার জিআরপি। উত্তেজিত মহিলাদের শান্ত করে শিশুকন্যাকে আর জি করে পাঠানো হয়। এর পরে মহিলা ঠিক বলছেন কি না, তা যাচাইয়ে নামে জিআরপি। রেল পুলিশ সূত্রের খবর, বনগাঁ জিআরপি-র সাহায্যে মহিলা যে ঠিকানা বলছেন, সেখানে পুলিশকর্মীদের পাঠানো হয়। পাশাপাশি, সীমাদেবীর সঙ্গে কী ঘটেছে, তা চম্পা এবং কুশকে জানানোর জন্য হাবড়া স্টেশনে ঘোষণার ব্যবস্থা হয়। সেই ঘোষণা অবশ্য দম্পতির কানে পৌঁছয়নি। এ দিন কুশ জানান, শাশুড়ি অশোকনগরে নেমে গিয়েছেন ভেবে তিনি নিশ্চিন্তে স্ত্রীকে নিয়ে দক্ষিণ হাবড়ার পালপাড়ার বাড়িতে চলে আসেন। এ দিকে, ঠিকানা খুঁজতে নেমে কুশদের এক আত্মীয়ের নম্বর পান পুলিশকর্মীরা। তাতেই সীমা যে সত্যি বলছেন, তা স্পষ্ট হয়। এর পরে গাড়ি জোগাড় করে পরিবারের সদস্যেরা দমদমে পৌঁছন। সেখান থেকে রাত তিনটের পরে হাবড়ার উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা।

কুশ জানান, সকাল ৯টা নাগাদ জিয়লডাঙার বাড়িতে মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে যান শাশুড়ি। ঘণ্টা দেড়েক পরে খবর আসে, মেয়ে অসুস্থ। তাকে হাবড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কুশের কথায়, ‘‘আর জি কর থেকে রাতেও বাচ্চা সুস্থ বলে জানিয়েছিল। সকালেও খেলছিল। কোনও সমস্যা দেখিনি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কী হল, বুঝতে পারছি না।’’

শিশুকন্যার মৃত্যু প্রসঙ্গে সীমার দাবি, ‘‘দুধ খাওয়ানোর পরে দেখলাম, ও নেতিয়ে পড়ছে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা গেল।’’ হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপার শঙ্করলাল ঘোষ বলেন, ‘‘শিশুটির দেহের ময়না-তদন্ত হবে। রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ বোঝা যাবে।’’

Grandmother child trafficking Child death Local Train
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy