Advertisement
০৭ মে ২০২৪

হর্টিকালচারে বন্ধ করা হল অবৈধ নির্মাণ

পুরসভা এবং এগ্রি-হর্টিকালচারাল সোসাইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানকার প্রায় ২০ একর জায়গায় এক দিকে রয়েছে একটি প্রদর্শনী হল।

এগ্রি-হর্টিকালচারাল সোসাইটিতে এই বেআইনি নির্মাণকাজই বন্ধ করে দিয়েছে পুরসভা। নিজস্ব চিত্র

এগ্রি-হর্টিকালচারাল সোসাইটিতে এই বেআইনি নির্মাণকাজই বন্ধ করে দিয়েছে পুরসভা। নিজস্ব চিত্র

নীলোৎপল বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ০২:৩৮
Share: Save:

বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ উঠল আলিপুরের ‘এগ্রি-হর্টিকালচারাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়া’য়। অভিযোগ পেয়েই ওই নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিল কলকাতা পুরসভা।

পুরসভা সূত্রের খবর, আলিপুর রোডে ‘এগ্রি-হর্টিকালচারাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়া’ পুরসভার হেরিটেজ তালিকায় গ্রেড ওয়ান-এ পড়ে। নিয়ম অনুযায়ী, পুরসভার হেরিটেজ কমিটির অনুমতি ছাড়া সেখানে নতুন নির্মাণ তো দূর, সামান্য সংস্কার পর্যন্ত করা যাবে না। অথচ, সেই হর্টিকালচারেই বিনা অনুমতিতে চলছিল নির্মাণকাজ। সোসাইটির দাবি, যে নির্মাণ সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, গাফিলতি তাদেরই। আর ওই নির্মাণ সংস্থার বক্তব্য, যা বলার সোসাইটি-ই বলবে।

পুরসভা এবং এগ্রি-হর্টিকালচারাল সোসাইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানকার প্রায় ২০ একর জায়গায় এক দিকে রয়েছে একটি প্রদর্শনী হল। সেটি কানোই এগজিবিশন হল নামে পরিচিত। সেখানে নানা প্রদর্শনীর পাশাপাশি, সোসাইটির সদস্যদের পারিবারিক নানা অনুষ্ঠান হত। সম্প্রতি সোসাইটির তরফে সেই হল লিজ-এ দেওয়া হয় এক নির্মাণ সংস্থাকে। সূত্রের খবর, সেই হল সংস্কার করে সেখানে দোতলা রেস্তরাঁ এবং ব্যাঙ্কোয়েট তৈরির পরিকল্পনা হয়। রেস্তরাঁ সংলগ্ন জায়গায় গাড়ি রাখার জায়গাও তৈরি হওয়ার কথা। গত জানুয়ারি থেকে ওই হল-এ নির্মাণকাজ শুরু হয়। এর মধ্যেই পুরসভার কাছে ওই নির্মাণকাজের খবর পৌঁছে যায়। পুরসভার আধিকারিকেরা গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন।

সোসাইটির সদস্যেরা জানাচ্ছেন, বাড়তি আয়ের জন্যই তাঁরা এই পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে এই কাজের জন্য কোনও রকম দরপত্র ডাকা হয়নি। জীববৈচিত্র রক্ষার দিকেও নজর দেওয়া হয়নি। এখানে নির্মাণকাজ হলে হর্টিকালচারে কী কী সমস্যা হতে পারে, তা-ও ভাবা হয়নি। সেই কারণে সদস্যদের একাংশ অখুশি। এক সদস্য বললেন, ‘‘রোজ সকালে এখানে হাঁটতে আসি। সোসাইটির এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমরা একমত নই। এগ্রি-হর্টিকালচারাল সোসাইটির মধ্যে এ ভাবে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে, ভাবাই যায় না। গাড়ি থাকলে তো এমনিই গাছগুলো শেষ হয়ে যাবে।’’

এক দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, সোসাইটির মধ্যে প্রায় দুই বিঘা জমির উপরে রয়েছে ওই হল। তার সামনে বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী ডাঁই করে রাখা। তবে কাজ বন্ধ। নির্মাণ সংস্থার তরফে রজত পোদ্দার বলেন, ‘‘পুরসভার লোক এসে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম, সোসাইটির নিজের জায়গা ওরাই বুঝে নেবে। তাই আর অনুমতির জন্য ভাবিনি।’’ সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘এই হলের সংস্কার প্রয়োজন। গাছের এতে ক্ষতি হওয়ার কথাই নয়।’’

সোসাইটির তরফে এক জন নির্মাণ সংস্থার উপরে দায় চাপিয়ে বললেন, ‘‘ওরা যে পুরসভাকে জানায়নি, আমরা জানব কী করে?’’ ওই সদস্যের কথায়, ‘‘ভুল একটা হয়েছে। পুরসভার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে এ বার বাকি কাজে হাত দেওয়া হবে।’’

পুরসভার হেরিটেজ তালিকা অনুযায়ী, ভবনটি গ্রেড ওয়ান হেরিটেজের অন্তর্ভুক্ত। গ্রেড ওয়ান হেরিটেজে এমনিতেই কোনও নির্মাণ বা পরিবর্তন করা যায় না। সংস্কারের প্রয়োজন হলে পুরসভার হেরিটেজ কমিটির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তেমনটা করা হয়নি বলেই পুরসভা সূত্রের খবর। এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা এই নির্মাণের ব্যাপারে কিছু জানি না। আমরা কোনও অনুমতিও দিইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

construction Agri-Horticultural Society
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE