ছিল ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি, হয়ে গেল পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র! পুরসভার সম্পত্তি তালিকায় ফের এমন বিভ্রাট। আর গরফা মেন রোডের এই ঠিকানা-বিভ্রাটের ঘটনাটি নজরে আসতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে কলকাতা পুরসভার অন্দরে। সম্প্রতি পুর প্রশাসনের বৈঠকেও বিষয়টি তোলা হয়েছে।
পুরসভা সূত্রের জানা গিয়েছে, ১২ নম্বর বরোর অধীনে ১০৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৪৭, গরফা মেন রোডের ঠিকানা নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জমির মালিকেরা দীর্ঘ দিন ধরেই সম্পত্তিকর জমা দেওয়ার জন্য দৌড়োদৌড়ি করছেন। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষ সম্পত্তিকর জমা নিতে নারাজ। কারণ, তাঁদের তালিকায় ওই ঠিকানা পুরসভার সম্পত্তি। নিজেদের সম্পত্তি থেকে কী ভাবে কর নেওয়া যায়? একই কারণে বাড়ি মেরামতিতেও হাত দিতে পারছেন না মালিকপক্ষ।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট বাড়ির মালিকেরা যখন সম্পত্তিকর নির্ধারণের জন্য আবেদন করেন, তখন পুর আধিকারিকদেরা দেখতে পান ওই ঠিকানা ১২ নম্বর বরোর স্বাস্থ্যকেন্দ্র হিসেবে নথিভুক্ত। এমনকী, পুরসভার জমি ও সম্পত্তির ঠিকানা-বিবরণ সংক্রান্ত ‘ইনভেন্টরি অফ ইমমুভেবল প্রপার্টিজ’ নামে যে বই, তাতেও ওই ঠিকানা স্বাস্থ্যকেন্দ্র হিসেবে রয়েছে।
এর পরেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেন পুর আধিকারিকদের একাংশ। অ্যাসেসমেন্ট ও সার্ভে দফতরের কর্তারা যৌথ ভাবে ওই ঠিকানা পরিদর্শনও করেন। তাতে দেখা যায়, বরো স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিঠি পাঠানোর ঠিকানা হল ৪৭, গরফা মেন রোড। সেখানেই তৈরি হয়েছে সমস্যা।
পুর আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, এই অসঙ্গতির মূলে রয়েছে ‘মেলিং অ্যাড্রেস’ বা চিঠি পাঠানোর ঠিকানার সঙ্গে ‘প্রেমিসেস নম্বর’ বা জমির দাগের ফারাক। যেমন, এই বাড়িটির ক্ষেত্রে মেলিং অ্যাড্রেস ৫৫/৫, গরফা মেন রোড। কিন্তু প্রেমিসেস নম্বর ৪৭, গরফা মেন রোড। সংযুক্ত এলাকার ক্ষেত্রে অনেক জায়গাতেই এই সমস্যা। সেই বিভ্রান্তি দূর করতে হলে ঠিকানা পিছু পরিদর্শন করে পুর সম্পত্তির যে তালিকা তৈরি করতে হত, তা করা হয়নি। তাতেই ভোগান্তির মুখে পড়ছেন করদাতারা। এর আগেও চার্চ লেনের একটি ঘটনায় দেখা গিয়েছিল, হঠাৎ করেই সংশ্লিষ্ট করদাতার নাম পাল্টে জমির মালিক হয়ে গিয়েছিল পুরসভা।
পরিস্থিতি গুরুতর বুঝে একটি নির্দেশিকাও জারি করেছিলেন পুর কর্তৃপক্ষ। শহরে কোন কোন জমির ক্ষেত্রে এই সমস্যা রয়েছে, তা দ্রুত চিহ্নিত করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, নানা টালবাহানায় সে কাজ পিছিয়ে যাচ্ছে। এক পুর আধিকারিক বলেন, ‘‘একটা ঠিকানা সংশোধনে দিনের পর দিন ফাইল আটকে থাকছে। তার জন্য ভুগতে হচ্ছে করদাতাদের।’’
তবে গরফা মেন রোডের সংশ্লিষ্ট ঠিকানা-বিভ্রাটটি দ্রুত ঠিক করে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিচ্ছেন পুরকর্তারা। এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ঠিকানায় যা বিভ্রান্তি তা ঠিক করে দেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy