Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বৃদ্ধার দেহ পুকুরে, মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা

এক প্রত্যক্ষদর্শী বললেন, ‘‘সকালে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে সূর্য প্রণাম করছিলেন ওই বৃদ্ধা। আমি পুকুরের পাশের রাস্তায় হাঁটছিলাম। কিছুক্ষণ পরে দেখি সিঁড়ির কাছে কেউ ভাসছেন। দেখি ওই বৃদ্ধা। তিনি জলে নেমেছিলেন কি না, বলতে পারব না।’’

শোভারানি দাস

শোভারানি দাস

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৮ ০১:২৭
Share: Save:

পুকুরের সিঁড়ির এক কোণে রাখা একজোড়া গোলাপি জুতো। নিজের সেই জুতো দেখেই চিনতে পেরেছিলেন কসবার যাদবগড়ের বাসিন্দা অনুরাধা দাস। বুধবার ভোরে ওই জুতো পরেই হাঁটতে বেরিয়েছিলেন তাঁর শাশুড়ি শোভারানি দাস (৭৮)। তবে তাঁর দেখা পাননি অনুরাধা। আশপাশের বাসিন্দারা জানান, মৃত্যু হয়েছে শোভারানির। কসবা থানার পুলিশ জল থেকে দেহ তুলে নিয়ে গিয়েছে।

পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে তাঁরা খবর পান, কমলা পার্কের একটি পুকুরে এক বৃদ্ধার দেহ ভাসছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেহটিকে সিঁড়ির কাছে জলে ভাসতে দেখা যায়। সিঁড়িতে পড়ে থাকা অবস্থায় মেলে বৃদ্ধার জুতো। এর পরে পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে এমআর বাঙুর হাসপাতালে পাঠায়। সেখানকার চিকিৎসকেরা শোভারানিকে মৃত ঘোষণা করেন। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে জলে ডুবে শোভারানির মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হলেও তিনি স্বেচ্ছায় জলে নেমেছিলেন নাকি, পড়ে গিয়েছিলেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে পুলিশের। কসবা থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বৃদ্ধা স্বেচ্ছায় জলে নেমেছিলেন না কোনও ভাবে পড়ে গিয়েছিলেন, তা দেখতে হবে।’’ যদিও হাসপাতাল সূত্রের খবর, বৃদ্ধার দেহে কোনও চোট-আঘাতের চিহ্ন মেলেনি।’’

এক প্রত্যক্ষদর্শী বললেন, ‘‘সকালে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে সূর্য প্রণাম করছিলেন ওই বৃদ্ধা। আমি পুকুরের পাশের রাস্তায় হাঁটছিলাম। কিছুক্ষণ পরে দেখি সিঁড়ির কাছে কেউ ভাসছেন। দেখি ওই বৃদ্ধা। তিনি জলে নেমেছিলেন কি না, বলতে পারব না।’’

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যাদবগড়ে ছোট ছেলে তপনকুমার দাসের কাছে থাকতেন শোভারানি। তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে ২১ বছর আগে। বড় ছেলে কালীঘাট এলাকায় থাকেন। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। পরিবারের সদস্যেরা জানাচ্ছেন, প্রতিদিন ভোরে হাঁটতে যেতেন শোভারানি। এ দিন তিনি গিয়েছিলেন কমলা পার্কে। পুত্রবধূ অনুরাধা বলেন, ‘‘বেলা বাড়লেও মা ফিরছিলেন না দেখে খুঁজতে বেরিয়েছিলাম। ওই পুকুরের কাছে গিয়ে দেখি আমার জুতো পড়ে রয়েছে। ওটা পরেই মা বেরিয়েছিলেন। শুনলাম উনি নাকি পা পিছলে জলে পড়ে গিয়েছেন।’’

শোভারানির ছেলে তপন এ দিন দাবি করেন, ‘‘মা রোজই একা একা ঘুরতে চলে যেত। আজও সেরকমই গিয়েছিল। পড়ে গেল না নিজেই এরকম করল, বুঝতে পারছি না।’’ তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার রাতেই বাড়িতে শোভারানির বড় মেয়ে এসেছিলেন। তাঁদের সঙ্গে জমিয়ে গল্পও করেন শোভারানি। তবে ক’দিন ধরে হাঁটুর ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছিলেন। সেই কারণে ভোরে বেরোতেও পারেননি। তপন বললেন, ‘‘আজ বেরিয়েছিল। আর আজই এরকম হল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Woman Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE