নতুন করে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভের সংখ্যা বৃদ্ধিতে আগ্রহ নেই বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত দমদম এবং দক্ষিণ দমদম পুরসভার। অথচ ক্ষমতায় আসার পরে পুর এলাকার সৌন্দর্যায়নে ত্রিফলাই ছিল মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের বাতিস্তম্ভ। তাঁর ইচ্ছাপূরণে প্রায় প্রতিটি পুরসভায় ত্রিফলা লাগানোর ধুম পড়েছিল। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণে অত্যধিক খরচের জন্য ত্রিফলা থেকে মুখ ফেরাচ্ছে অনেক পুরসভা।
গ্রিন সিটি প্রকল্পের অধীনে আলো লাগানোর পরিকল্পনা করেছে দমদম এবং দক্ষিণ দমদম পুর কর্তৃপক্ষ। এ জন্য রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তাতে ন’মিটার উঁচু এলইডি বাতিস্তম্ভ ছাড়াও বিভিন্ন এলইডি আলোর উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু নেই ত্রিফলা। দমদম পুরসভা সূত্রের খবর, এলাকার প্রধান রাস্তা এবং উদ্যানে সাড়ে চার কোটি টাকার আলো লাগানোর পরিকল্পনা হয়েছে। সম্প্রতি নির্মল সেনগুপ্ত সরণিতে এলইডি বাতিস্তম্ভের উদ্বোধন হয়েছে। রবীন্দ্র-নজরুল এবং ইস্ট কমলাপুর উদ্যানে আলোকসজ্জা ইতিমধ্যেই শেষ। সুরভি মোড় পার্ক, পশ্চিম কমলাপুর উদ্যান ও সেন্ট্রাল জেল সংলগ্ন বি আর অম্বেডকর পার্কেও কাজ প্রায় শেষ। এই সব জায়গায় বোলার্ড, কে-লাইটের মতো শৌখিন আলো শোভা পেলেও বাদ ত্রিফলা! এ নিয়ে দমদমের পুরপ্রধান হরীন্দ্র সিংহের প্রতিক্রিয়া, ‘‘নতুন করে ত্রিফলা লাগানো হচ্ছে না। তবে আমাদের ত্রিফলা খুব বেশি ছিল না।’’
দক্ষিম দমদম পুরসভা সূত্রের খবর, গ্রিন সিটি প্রকল্পে ৩৫টি ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা এবং আলো লাগাতে চেয়ে নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে ৪৮ কোটি টাকা খরচের হিসাব পাঠানো হয়েছিল, যার মধ্যে আলোর জন্য ধরা হয়েছিল ২০ কোটি টাকা। আনুমানিক ৩০ কোটি টাকা মঞ্জুরের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভের জন্য এক টাকাও চাওয়া হয়নি! দুই পুরসভা সূত্রের খবর, পুরনো বাতিস্তম্ভ রক্ষণাবেক্ষণ করা হলেও, নতুন করে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ লাগানোর কথা ভাবা হচ্ছে না। এমনকি, কোনও ত্রিফলা নষ্ট হলে তার পরিবর্তে ন’মিটার উঁচু বাতিস্তম্ভ লাগানোর নীতি নিয়েই চলছে ওই দুই পুরসভা।
কেন এই সিদ্ধান্ত? নগরোন্নয়ন দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘রক্ষণাবেক্ষণে অত্যধিক খরচের জন্য ত্রিফলার ভার বইতে নারাজ পুরসভাগুলি।’’ তাঁর বক্তব্য, ত্রিফলার একটি বাতি খারাপ হলে পুরো বাতিস্তম্ভের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বাতিস্তম্ভের আলো খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ফলে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভের খরচ অনেক বেশি। তাই ত্রিফলা থেকে মুখে ফেরাচ্ছেন অধিকাংশ পুর কর্তৃপক্ষ। দমদমের এক পুরকর্তাও বলছেন, ‘‘অনেক অসুবিধা রয়েছে ত্রিফলায়। চারদিকে এত তার ঝোলে যে সে সবের ধাক্কায় বাতি ভেঙে যাচ্ছে। বাতিস্তম্ভ খুব উঁচু না হওয়ায় প্রায়ই আলো চুরি হচ্ছে। এ ছাড়া ত্রিফলা আলোর ঢাকনা খুলে পরিষ্কার করতে হয়। ন’মিটার উঁচু এলইডি বাতিস্তম্ভে এ সব ঝক্কি নেই। ত্রিফলার তুলনায় বিদ্যুতের খরচও কম। অথচ আলো অনেক বেশি!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy