Advertisement
E-Paper

টেক-অফে সময় বাঁচাতে নয়া প্রযুক্তি

যার অর্থ, রানওয়ের কাছে পৌঁছেও টেক-অফ করার জন্য কমপক্ষে মিনিট দশেক অপেক্ষা করতে হবে। দু’টি ইঞ্জিন চালু। জ্বালানি পুড়বে। নষ্ট হবে সময়। এই জ্বালানি ও সময় বাঁচাতে তৎপর হয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১১ মে ২০১৮ ০০:৪৬

‘রেডি ফর স্টার্ট-আপ’— পাইলটের এই বার্তা পেয়ে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) বিমান ছাড়ার অনুমতি দিল। পাইলট যাত্রীদের নিয়ে গড়াতে গড়াতে রানওয়ের কাছে পৌঁছে দেখলেন, তাঁর সামনে আরও তিনটি বিমান দাঁড়িয়ে। তারা একে একে টেক-অফ করলে তবেই তিনি উড়তে পারবেন। তবে তার আগে নামবে আরও খান তিনেক বিমান।

যার অর্থ, রানওয়ের কাছে পৌঁছেও টেক-অফ করার জন্য কমপক্ষে মিনিট দশেক অপেক্ষা করতে হবে। দু’টি ইঞ্জিন চালু। জ্বালানি পুড়বে। নষ্ট হবে সময়। এই জ্বালানি ও সময় বাঁচাতে তৎপর হয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর। এখানকার এটিসি যাঁর অধীনে, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সেই আঞ্চলিক অধিকর্তা কুন্দনলাল শর্মা জানিয়েছেন, এমন একটি সফ্‌টওয়্যার নিয়ে আসা হয়েছে, যার সাহায্যে আগামী দিনে কলকাতা থেকে টেক-অফ করতে চাওয়া কোনও বিমানকে রানওয়ের কাছে গিয়ে আর অপেক্ষা করতে হবে না। রানওয়েতে পৌঁছনোর পরেই গতি বাড়িয়ে উড়ে যেতে পারবে সেটি।

কুন্দনলালের কথায়, ‘‘সফ্‌টওয়্যার বসানোর প্রাথমিক কাজ শেষ। আরও কিছু কাজ বাকি। আশা করি, অগস্ট মাসের মধ্যেই আমরা এটা কলকাতায় চালু করতে পারব।’’

ইতিমধ্যেই মুম্বই বিমানবন্দরে ‘এয়ারপোর্ট কোলাবোরেটিভ ডিসিশন মেকিং’ নামে ওই সফ্‌টওয়্যার বসিয়ে বিপুল সাড়া পাওয়া গিয়েছে। মুম্বইয়ে কলকাতার দ্বিগুণ সংখ্যক বিমান ওঠানামা করে। মুম্বইয়ে এই সফ্‌টওয়্যার ব্যবহার করে গত এক বছরে ১২ হাজার ৪১৭ টন জ্বালানি বাঁচানো গিয়েছে। কর্তৃপক্ষের হিসেব অনুযায়ী, দিনে সব বিমানের সম্মিলিত প্রায় ৪৭ ঘণ্টা সময় বাঁচানো যাচ্ছে।

কলকাতা বিমানবন্দরের জেনারেল ম্যানেজার (এয়ার ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্ট) কল্যাণ চৌধুরীর কথায়, ‘‘সময় ও জ্বালানির পাশাপাশি, দূষণের বিষয়টিও খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিমান থেকে যে দূষণ ছড়ায়, তা কমাতে মরিয়া গোটা বিশ্ব। মুম্বইয়ে ওই সফ্‌টওয়্যার ব্যবহারের ফলে বছরে ৩৯ হাজার ৪৮৭ টন কম কার্বন নির্গত হচ্ছে।’’ জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ে যে অফিসারের তত্ত্বাবধানে ওই সফ্‌টওয়্যার বসানো হয়েছিল, সেই মানস দাসকে সম্প্রতি নিয়ে আসা হয়েছে কলকাতায়। চেন্নাই এবং দিল্লিতেও চালু হয়েছে ওই সফ্‌টওয়্যার।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠিক কোন সময়ে এরোব্রিজ বা পার্কিং বে থেকে টেক-অফের জন্য রওনা হলে বিমানকে আর রানওয়ের কাছে গিয়ে অপেক্ষা করতে হবে না, সেটাই অঙ্ক কষে বলে দেবে এই নতুন সফ্‌টওয়্যার। সেটি যে তথ্য কম্পিউটারে পাঠাবে, তা দেখতে পাবে বিমান সংস্থাগুলিও। যে বিমানের বিকেল ৪টে ৫০ মিনিটে ছাড়ার কথা, দেখা যাবে, সেটি ৪টে ৪৮ মিনিটে ছাড়লে তাকে আর অপেক্ষা করতে হবে না।

বিমান যে পার্কিং বে অথবা এরোব্রিজে দাঁড়িয়ে থাকবে, সেখান থেকে রানওয়ে পর্যন্ত পৌঁছতে তার কত সময় লাগবে, আগের বিমান কখন টেক-অফ করছে, তার মধ্যে কোনও বিমান কলকাতায় নেমে আসবে কি না — এ সব তথ্য নিয়ে হিসেব কষে ক্রমাগত আপডেট করা হবে কম্পিউটারে। সেই আপডেট দেখে প্রতিটি উড়ানকে ‘স্টার্ট আপ’-এর সময় বলে দেওয়া হবে।

রানওয়ের কাছে যেখানে গিয়ে এখন বিমানকে অপেক্ষা করতে হয়, তাকে ‘হোল্ডিং পয়েন্ট’ বলে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা বিমানকে আগামী দিনে এটিসি-র নির্দেশ ‘‘নাও ক্লিয়ার ফর টেক অফ’’ আর শুনতে হবে না।

Plane Air Port
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy