Advertisement
২৩ মার্চ ২০২৩

‘রাত বাড়লে দেখা মেলে না পুলিশের’

রবিবার সকালে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ঘাট সংলগ্ন পুলিশের কিয়স্কটি তালাবন্ধ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছরের অন্যান্য সময়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ওই কিয়স্কে পুলিশ থাকে না।

অরক্ষিত: শুক্রবার রাতের ঘটনার পরেও বন্ধ পুলিশের কিয়স্ক। রবিবার সর্বমঙ্গলা ঘাটে। নিজস্ব চিত্র

অরক্ষিত: শুক্রবার রাতের ঘটনার পরেও বন্ধ পুলিশের কিয়স্ক। রবিবার সর্বমঙ্গলা ঘাটে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:০০
Share: Save:

পুলিশ আধিকারিককে মারধরের ঘটনার পরে পেরিয়ে গিয়েছে আটচল্লিশ ঘণ্টা। তবু স্বাভাবিক হয়নি চিৎপুরের সর্বমঙ্গলা ঘাট সংলগ্ন জ্যোতিনগর কলোনির পরিস্থিতি। থমথমে সেই পরিবেশের মধ্যেই বারবার উঠছে নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করার দাবি। শুক্রবার রাতে গঙ্গার ঘাটে বসে মদ্যপানের প্রতিবাদ করায় ওই আধিকারিককে মারধরের অভিযোগ ওঠে এক দল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে।

Advertisement

রবিবার সকালে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ঘাট সংলগ্ন পুলিশের কিয়স্কটি তালাবন্ধ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বছরের অন্যান্য সময়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ওই কিয়স্কে পুলিশ থাকে না। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘রাত বাড়লে পুলিশের আর দেখাই পাওয়া যায় না।’’ ফলে নিরাপত্তার অভাবে ভোগেন তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি করতে পুলিশ আউটপোস্ট তৈরি হোক।

এ দিকে, সর্বমঙ্গলা ঘাট সংলগ্ন জ্যোতিনগর কলোনি চিৎপুর থানার কাছাকাছি হলেও এলাকাটি উত্তর বন্দর থানার আওতাধীন। হাওড়া ব্রিজের কাছে উত্তর বন্দর থানা থেকে এই এলাকা প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দায়িত্বপ্রাপ্ত থানা থেকে ওই অঞ্চলটি এত দূরে হওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। এই কারণেই সর্বমঙ্গলা ঘাট সংলগ্ন এলাকাটিতে সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্য দিনে দিনে বেড়ে চলেছে। আবার চিৎপুর থানা কাছাকাছি হলেও স্থানীয়েরা সেখানকার পুলিশের সাহায্য পান না বলে অভিযোগ। সর্বমঙ্গলা ঘাট ও সংলগ্ন এলাকায় বহিরাগতদের উৎপাত যে বে়ড়েছে, মানছেন স্থানীয় বিধায়ক, তৃণমূলের মালা সাহা। তিনি বলেন, ‘‘সর্বমঙ্গলা ঘাটে দীর্ঘ দিন ধরে বহিরাগত দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বেড়েছে। শীঘ্রই এই এলাকায় পুলিশ আউটপোস্ট প্রয়োজন। ডিসি (বন্দর)-কে সে কথা জানিয়েছি।’’ লালবাজারের এক কর্তা জানান, আউটপোস্ট তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে। তবে সর্বমঙ্গলা ঘাটের কাছে কিয়স্কে পুলিশ না থাকার প্রসঙ্গে ওই কর্তা বলেন, ‘‘ওই কিয়স্কে পুলিশ একদম থাকে না, এটা ঠিক নয়।’’ তবে পুলিশের একাংশের বক্তব্য, থানায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশের অভাবে ঘাট সংলগ্ন কিয়স্কে নিয়মিত পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয় না।

এ দিকে, শুক্রবার রাতে দুষ্কৃতীদের মারে মাথায় আঘাত পেয়ে চিৎপুর থানার অতিরিক্ত ওসি শচীন মণ্ডল একবালপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁর মাথায় পাঁচটি সেলাই হয়েছে। ওই পুলিশকর্তা ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন। তাঁকে শীঘ্রই আইসিসিইউ থেকে জেনারেল বেডে দেওয়া হবে।

Advertisement

এই ঘটনায় ধৃত ন’জনকে রবিবার দুপুরে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাঁদের ৫ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশ হেফাজত হয়েছে। ধৃতদের পক্ষের আইনজীবী কৃষ্ণকান্ত সিংহ এ দিন অভিযোগ করেন, ‘‘যারা পুলিশকে মেরেছে, তাদের না ধরে নির্দোষ কিছু বাসিন্দাকে জোর করে তুলে এনেছে পুলিশ।’’ তাঁর বক্তব্য, কোনও সিজার-লিস্ট দেখানো হয়নি। কীসের ভিত্তিতে পুলিশ জ্যোতিনগরের বাসিন্দা ওই ন’জনকে গ্রেফতার করল, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.