কলকাতা পুলিশের একাধিক উদ্যোগ এবং সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফের প্রচারেও সজাগ হচ্ছেন না যাত্রীরা। যার সদ্য উদাহরণ বুধবারের দুর্ঘটনা। এ দিন সকাল ছ’টা নাগাদ পার্ক সার্কাস কানেক্টর এবং তিলজলা রোডের সংযোগস্থলে ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে হেলমেটহীন এক মোটরবাইক সওয়ারির। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মোটরবাইকে সওয়ার অন্য দু’জনের মাথাতেও হেলমেট ছিল না।
এ দিন লরির সঙ্গে মোটরবাইকের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে প্রিয়া সিংহ নামে এক বাইক আরোহী মহিলার। পেশায় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কর্মী প্রিয়া বাগমারির বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রের খবর, পরমা উড়ালপুলের দিক থেকে বাইক চালিয়ে আসছিলেন সমীর খান। তাঁর পিছনে বসেছিলেন মৌমিতা মিশ্র এবং প্রিয়া। তাঁদের কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। ওই সময়ে পরমা উড়ালপুলের দিকে যাচ্ছিল একটি লরি। সেটি হিন্দু কবরস্থানের দিকে ঘোরার সময়ে বাইকটির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। বাইক থেকে পড়ে যান তিন জনেই। আহতদের কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সমীর এবং মৌমিতাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসকদের দাবি, প্রিয়ার মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই।
পুলিশ জানায়, বাইকটি নিয়ম মানেনি। সিগন্যাল ভেঙে সরাসরি লরিতে ধাক্কা মারে। তিন জনেই মত্ত অবস্থায় ছিলেন। প্রিয়ার উপর দিয়ে লরির চাকাটি চলে যায়। মোটরবাইক এবং লরিটি আটক করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে লরিচালককে।
এ দিন প্রিয়ার এক আত্মীয় জানান, কিছু দিন আগে বিয়ে হয়েছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কর্মী প্রিয়ার। সমীর এবং মৌমিতাও ওই একই পেশায় রয়েছেন। মঙ্গলবার রাতে বাইপাসের ধারের একটি কাজ সেরে সকালে ফিরছিলেন তাঁরা। প্রিয়ার ওই আত্মীয়ের আক্ষেপ, ‘‘মেয়েটার মাথায় হেলমেট থাকলে হয়তো বেঁচে যেতেও পারত।’’
পরিজনদের প্রশ্ন, পুলিশের নজরদারি এড়িয়ে কী ভাবে একই মোটরবাইকে তিন হেলমেটহীন যাত্রী পার পেলেন? ট্র্যাফিক দফতরের এক আধিকারিক অভিযোগের কথা মেনে নিয়ে বলেন, ‘‘গভীর রাতে বা ভোরে সে ভাবে পুলিশের নজরদারি থাকে না। সেটা সম্ভবও নয়। কারণ অত লোকবল আমাদের নেই।’’