Advertisement
E-Paper

এই শিশুর মাথা মেরে ফাটিয়ে দেওয়া হল!

অটিস্টিক শিশুপুত্রকে প্রিন্স বক্তিয়ার শাহ রোডে একটি বেসরকারি থেরাপি সেন্টারে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন বেহালার দম্পতি অভিক ও কথাকলি মালাকার। সোমবার ছিল দ্বিতীয় দিন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৮ ১৫:৩২
আদ্রিক মালাকার। —নিজস্ব চিত্র।

আদ্রিক মালাকার। —নিজস্ব চিত্র।

আড়াই বছরের শিশুকে দু’পায়ের মাঝখানে চেপে ধরে আটকানোর চেষ্টা করছেন এক মহিলা। আর তাঁর কাছ থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা চালাচ্ছে শিশুটি। সে কথা বলতে পারে না। গোঙানি আর কান্নার আওয়াজ বন্ধ ঘরের বাইরে যাচ্ছে না। এই অসম ধস্তাধস্তির মধ্যেই মহিলার হাত ছাড়াতে গিয়ে মেঝেতে ছিটকে পড়ে শিশুটি। মাথা ঠুকে যায় মেঝেতে। তার মাথা থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। এটা কোনও অপহরণের দৃশ্য নয়। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায় ধরা পড়া এই দৃশ্য একটি চিকিৎসাকেন্দ্রের। আর এই মহিলা এক জন থেরাপিস্ট। শিশুর মায়ের অভিযোগ, থেরাপিস্ট চৈতালি মুখোপাধ্যায়ের বেধড়ক মারেই মাথা ফাটে তাঁর ছেলের।

শিশুপুত্রকে প্রিন্স বক্তিয়ার শাহ রোডে একটি বেসরকারি থেরাপি সেন্টারে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন বেহালার দম্পতি অভিক ও কথাকলি মালাকার। সোমবার ছিল দ্বিতীয় দিন। আড়াই বছরের আদ্রিক প্রথমে যেতে চাইছিল না থেরাপিস্ট চৈতালি মুখোপাধ্যায়ের কাছে। তার পর প্রায় জোর করেই তাকে নিয়ে যাওয়া হয়।

থেরাপির নিয়ম অনুযায়ী চিকিৎসার সময় মা-বাবাকে থাকতে দেওয়া হয় না। কথাকলিও তাই নীচে রিশেপশনের সামনে অপেক্ষা করছিলেন। তিনি তাঁর সে দিনের অভিজ্ঞতার কথা বলেন, “আদ্রিক ঢোকার কিছু ক্ষণ পর থেকেই থেরাপিস্টের চিৎকার শুনতে পাচ্ছিলাম। প্রথমে কিছু বুঝতে পারিনি। তার পর দেখলাম, হঠাৎ রিশেপশনে একটা ফোন এল। তার পরই এক কর্মী ওপরে স্যাভলন আর তুলো নিয়ে দৌড়ল। দেখে আমার সন্দেহ হল। আমিও পিছন পিছন গেলাম। গিয়ে দেখি, আমার ছেলে মেঝেতে পড়ে রয়েছে। মাথার পিছন দিয়ে রক্ত ঝরছে।”

দেখুন ভিডিয়ো

সেই অবস্থাতেই স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে আদ্রিককে নিয়ে যান কথাকলি। সেখানে চিকিৎসার ছেলের সঙ্গে কথা বলেই তিনি বুঝতে পারেন, থেরাপিস্ট আদ্রিককে মারধর করেছে। সময় নষ্ট না করে চারু মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই দম্পতি। তদন্তের শুরুতেই থেরাপি সেন্টার থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। কথাকলির দাবি, “ফুটেজে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে, কী ভাবে আমার ছেলেকে মারধর করছে ওই থেরাপিস্ট। প্রথম থেকেই ওই মহিলার কাছে থাকতে চাইছিল না আদ্রিক। ওকে বোঝানোর বদলে উল্টে গায়ের জোরে আড়াই বছরের শিশুকে আটকে রাখছেন চৈতালি।” ওই থেরাপি সেন্টারের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তাঁরা তাঁদের পক্ষ থেকে কোনও বক্তব্য জানাতে চাননি।

আরও পড়ুন
ঢাকুরিয়ায় অটোতে শ্লীলতাহানি, ঝাঁপ সন্ত্রস্ত তরুণীর

থেরাপিস্টের মারে মাথা ফাটল আড়াই বছরের আদ্রিকের। —নিজস্ব চিত্র।

অভিযোগ পাওয়ার পরই ফুটেজ খতিয়ে দেখে, মঙ্গলবার সকালে চৈতালিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আদালত তাঁকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। গোটা ঘটনায় এখনও স্তম্ভিত কথাকলি। তিনি বলেন, “এখনও আদ্রিক সেই আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এখনও ওর চোখে-মুখে ভয়। এর পর অন্য কোথাও চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাবো কোন সাহসে?”

Crime Behala Video
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy