সাততলা থেকে রোগীর পরিজনেদের নিয়ে নামছিলেন হাসপাতালের লিফটম্যান। হঠাৎ বিকট শব্দ। দরজার একাংশ ভেঙে কাত হয়ে গেল লিফট।
প্রবল চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা। প্রায় পনেরো মিনিট দমবন্ধ পরিস্থিতিতে কাটানোর পরে লিফটের দরজা ভেঙে আটক পাঁচ জনকে উদ্ধার করা হয়। বুধবার দুপুরের এই ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়়ায় ঠাকুরপুকুর ইএসআই হাসপাতালে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঠাকুরপুকুর ইএসআই হাসপাতালের দশতলা পুরনো বিল্ডিংয়ে তিনটি লিফট রয়েছে। একটি লিফট দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে রয়েছে। বুধবার দুপুর দেড়টা নাগাদ বিল্ডিংয়ের পিছনের দিকে লিফটটি সাততলা থেকে নামার সময়ে বিকট আওয়াজ হয়। লিফটম্যান কর্ণধার বারিক বলেন, ‘‘রোগীর পরিজনেদের নিয়ে
সাততলা থেকে নামার সময়ে বিকট আওয়াজ হয়। তার পরেই লিফটটি সোজা ছ’তলায় এসে প্রচণ্ড শব্দে দাঁড়িয়ে পড়ে। ঝাঁকুনির জন্য দরজা ভেঙে যায়। চার জন রোগীর পরিজন-সহ আমি প্রায় পনেরো মিনিট আটকে থাকি। আমাদের চিৎকার শুনে হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরা ছুটে এসে উদ্ধার করেন।’’ এ দিন ঘটনার জেরে আহত হন লিফটম্যান। তাঁকে ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছাড়া হয়।
লিফটম্যানের অভিযোগ, ‘‘লিফটটি কয়েক বছর ধরে সমস্যা করছে। লিফট সারাতে সুপারকে মাস ছয়েক আগে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। আজ আমরা বড়সড় বিপদ থেকে বেঁচে গিয়েছি।’’ হাসপাতাল সূত্রের খবর, ঘটনার সময়ে ছ’তলার দরজার বাইরে এক রোগী হুইলচেয়ারে লিফটে ওঠার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ওই রোগীর অভিযোগ, ‘‘দরজাটি পুরোপুরি ভেঙে গেলে আমার মাথার উপরেই পড়ত। তা হলে আর বাঁচতাম না।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, ঠাকুরপুকুর ইএসআই হাসপাতালের এই লিফটেরই একাংশ ২০১৬ সালের এপ্রিলে ভূমিকম্পের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভূমিকম্পের পরে সাততলা থেকে ন’তলা পর্যন্ত লিফট চলাচল বন্ধ ছিল। এ দিন হাসপাতালে গেলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন কর্মী থেকে শুরু করেন রোগীর পরিজনেরা। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘২০১৬ সালে ভূমিকম্পের ফলে লিফট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার বলা হয়েছিল। তখনও সংস্কার করা হয়নি।’’ এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে ঠাকুরপুকুর ই এস আই হাসপাতালের সুপার সমীর চৌধুরী কোনও মন্তব্য করতে চাননি।