মিন্টো পার্কে বিক্ষোভরত কম্পিউটার শিক্ষক-শিক্ষিকারা। নিজস্ব চিত্র।
চুক্তি মতো ন্যায্য বেতনের দাবিতে মিন্টো পার্কের কাছে অবস্থানে বসেছিলেন সরকারি স্কুলের কম্পিউটার শিক্ষকরা। সেই অবস্থান তুলে দিতে ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপর লাঠি চার্জের অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। লাঠির ঘায়ে আহত হয়েছেন অনেকে। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের ‘আইসিটি’ প্রকল্পের অধীনে বছর ছয়েক আগে ‘স্কুল কোঅর্ডিনেটর’ পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। কেন্দ্রের এই প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্ব পায় রাজ্য সরকার মনোনীত সংস্থা ওয়েবেল। ওয়েবেল সেই প্রকল্পের দায়িত্ব তুলে দেয় আইএলএফএস নামে এক সংস্থার হাতে। ওই সংস্থা শিক্ষকদের বেতন দেওয়া ও প্রকল্পের নানাবিধ কাজকর্ম করে।
ওই শিক্ষকদের অভিযোগ, কেন্দ্রের প্রকল্প অনুসারে প্রতি বছর তাঁদের ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু তাঁরা প্রতি মাসে চার-পাঁচ হাজার টাকা পাচ্ছেন। অথচ কম্পিউটার শিক্ষার পাশাপাশি স্কুলের অতিরিক্ত কাজও করতে হয় তাঁদের। তবুও নিজেদের হকের বেতন থেকে বঞ্চিত তাঁরা— এমনটাই অভিযোগ।
বঞ্চনার কথা এর আগে সরকারের বিভিন্ন মহলে বারবার জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে আন্দোলকারীদের দাবি। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ হাজার দুয়েক শিক্ষক-শিক্ষিকা মিন্টো পার্কে আইএলএফএস-র প্রধান কার্যালয়ের সামনে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে জড়ো হন। আইএলএফএস কর্তৃপক্ষ তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করতে না চাইলে তাঁরা ওই অফিসের সামনেই অবস্থানে বসেন। পরে আইএলএফএস-র তরফে ওই প্রকল্পের প্রধান নীচে এসে অবস্থানরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে দেখা করেন। আন্দোলনকারীদের তরফে সুজাতা মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তি আমাদের জানান, এক টাকাও বেতন বৃদ্ধি হবে না।’’
এরপরেই পুলিশ এসে অবস্থান তুলে নিতে বলে আন্দোলনকারীদের। কিন্তু নিজেদের দাবিতে অটল থেকেই অবস্থান চালিয়ে যান তাঁরা। তারপরেই শিক্ষকদের হঠাতে লাঠি চার্জ করে পুলিশ— এমনটাই অভিযোগ। অবস্থানকারী শিক্ষকদের অভিযোগ, শিক্ষিকাদের উপরেও নির্মমভাবে লাঠি চালানো হয়েছে। অবস্থানকারী এক শিক্ষিকা বলছেন, ‘‘শৌচালয়ে গিয়েছিলাম। ফিরে এসেই কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাকে মারতে শুরু করে পুলিশ।’’
আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধ্বস্তিতে অনেকের জামাকাপড় ছিঁড়ে গিয়েছে। বেশ কয়েকজন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে আটকও করেছে পুলিশ। ঘটনার বিচার চাইতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবে কম্পিউটার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটি প্রতিনিধি দল।
আরও পড়ুন: মোদীর সভা ঘিরে ভোগান্তির আশঙ্কা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy