Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

সত্যজিৎ লিখেছেন, বরং ‘অ্যারিফ্লেক্স ক্যামেরা নানা রকম কাজের উপযোগী।’ সিনেমাটোগ্রাফার সুব্রত মিত্রের চাহিদা অনুযায়ী অ্যারিফ্লেক্স ক্যামেরা বম্বে থেকে আনানো হলেও শুটিংয়ের সময় শটের মাঝখানেই ক্যামেরাটি জ্যাম হয়ে যেতে থাকে।

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

বাংলা ছবির অন্য ইতিহাস

অপরাজিত’ ১৯৫৬-য় ভেনিস ফেস্টিভ্যালে স্বর্ণসিংহ জিতে যতই ভারতের মুখ উজ্জ্বল করুক, সে ছবি তুলতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল সত্যজিৎ রায়কে। এর আগে ‘পথের পাঁচালী’ তুলেছিলেন মিচেল ক্যামেরায়, কিন্তু ‘যন্ত্রটি বিশাল। যেমন ভারী, তেমন জগদ্দল।’ সত্যজিৎ লিখেছেন, বরং ‘অ্যারিফ্লেক্স ক্যামেরা নানা রকম কাজের উপযোগী।’ সিনেমাটোগ্রাফার সুব্রত মিত্রের চাহিদা অনুযায়ী অ্যারিফ্লেক্স ক্যামেরা বম্বে থেকে আনানো হলেও শুটিংয়ের সময় শটের মাঝখানেই ক্যামেরাটি জ্যাম হয়ে যেতে থাকে। তখন সাউন্ড রেকর্ডিস্ট দুর্গাদাস মিত্র বিপত্তারণের ভূমিকা নিয়ে ছবিটিকে বাঁচান। কিছু কালের মধ্যেই অরোরা স্টুডিয়োতে যখন ‘জলসাঘর’-এর ব্যয়বহুল সেট তৈরি করছেন শিল্পনির্দেশক বংশী চন্দ্রগুপ্ত, ‘সত্যজিৎবাবু বলেই ফেলেন বাবাকে (অজিত বসু), এত সবই যখন হচ্ছে তখন একটা অ্যারিফ্লেক্স এলে ষোলোকলা পূর্ণ হত। ব্যস, বাবা ক্যামেরাটা কিনে ফেললেন।’ বলছিলেন অরোরা-র কর্ণধার অঞ্জন বসু। কলকাতা চলচ্চিত্রোৎসবে গগনেন্দ্র প্রদর্শশালায় পুরনো অভিজাত ক্যামেরার ‘লুক থ্রু’ শীর্ষক যে প্রদর্শনীটি চলছে তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের আয়োজনে, তাতে অ্যারিফ্লেক্স-সহ (সঙ্গের ছবি) বেশ কিছু ক্যামেরাই অরোরা-র। বহুবিধ ক্যামেরার এ প্রদর্শনী যেন বাংলা ছবির গৌরবময় ইতিহাস, ‘নতুন প্রজন্ম যাতে তার সাক্ষী হতে পারে তাই এই উদ্যোগ’, জানালেন উৎসব অধিকর্তা যাদব মণ্ডল। পাশেই নন্দনে পোস্টার-বুকলেট-লবিকার্ডে সাজানো ‘বেঙ্গল ইন বলিউড’ প্রদর্শনীটি তুলে এনেছে সর্বভারতীয় হিন্দি ছবিতে বাঙালির সোনালি অতীত (১৯৩৫-১৯৯৫)। কিউরেটর সোমনাথ রায়।

জন্মদিন

গ্রামবাংলার নিজস্ব সংস্কৃতির মধ্যেই তাঁর বড় হওয়া। গান গাইতেন, অভিনয়ও করতেন, ভাল বাঁশিও বাজাতে পারতেন তাই মুর্শিদাবাদের গ্রামেগঞ্জে আলকাপ দলের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন। স্থানীয় ভাবে খ্যাতি হয়েছিল সিরাজ মাস্টার নামে— পথ বদলে তিনি হয়ে উঠলেন জনপ্রিয় লেখক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ। মুর্শিদাবাদের খোসবাসপুর গ্রামের এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে ১৯৩০ সালের ১৪ অক্টোবর তাঁর জন্ম। কঠোর সংগ্রামের ম‌ধ্য দিয়ে বড় হওয়া। তার মধ্যেই আগ্রহ ইতিহাস ধর্ম নৃতত্ত্ব সমাজতত্ত্ব সাহিত্য নানা বিষয়ে। ১৯৬৬ সালে প্রকাশ পেল প্রথম উপন্যাস নীলঘরের নটী। সত্তরের দশকে আনন্দবাজার পত্রিকায় চাকরিতে যুক্ত হন। গল্প উপন্যাস প্রবন্ধনিবন্ধ সর্বোপরি গোয়েন্দাকাহিনি রচনায় ছিলেন সিদ্ধহস্ত। তাঁর ‘কর্নেলসমগ্র’ ইতিমধ্যে ১৭ খণ্ড প্রকাশিত হয়েছে। লিখেছেন আড়াইশোর বেশি বই। সাহিত্যসৃষ্টির জন্য পেয়েছেন আকাদেমি, বঙ্কিম ও আনন্দ পুরস্কারসহ নানা সম্মান। ২০১২ সালে ৮২ বছর বয়সে তিনি প্রয়াত হন, ওই বছরেই অনুরাগীরা গড়ে তোলেন ‘সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ আকাদেমি’। তাঁর বিশাল গ্রন্থসংগ্রহ এখনও যথাযথ সংরক্ষিত হচ্ছে। তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত হয় সাহিত্য সমাবেশ। সম্প্রতি রোটারি সদনে এ বারের অনুষ্ঠানে অভিজিৎ সেনের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন শঙ্খ ঘোষ।

আলোকচিত্র

ক্যামেরার চোখ দিয়ে দেখা অনেকেরই শখ। এই শখটিই এখন শিল্পের মর্যাদা পেয়েছে সারা বিশ্বে। এই ভাবনায় জারিত হয়ে জনি এমএল-এর ভাবনায় এসেছিল বিষয়টি। অতঃপর শুরু হয়েছিল অনুসন্ধান। তার পর সারা দেশের শ্রেষ্ঠ পঞ্চাশ জন আলোকচিত্রীর কাজ নিয়ে গ্রথিত হয়েছে একটি প্রদর্শনী ৫০:৫০ শীর্ষকে। তবে এর মধ্যে সকলেই পেশাদার আলোকচিত্রী নন, রয়েছেন শিল্পপতি, শিল্পী বা অন্য পেশার ব্যক্তিত্ব। এ দেশের অনেক পরিচিত আলোকচিত্রীর কাজও রয়েছে। এ কালের আলোকচিত্রীদের সঙ্গেই আছেন সত্যজিৎ রায়, জ্যোতি ভট্ট, নিমাই ঘোষ, শম্ভু সাহা, বীণা ভার্গব, গৌতম ঘোষ এমনকী বসন্তকুমার বিড়লাও (সঙ্গে তাঁরই তোলা ছবি)। ২৮ অক্টোবর বিড়লা অ্যাকাডেমিতে শুরু হল এই প্রদর্শনীটি, চলবে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত, ৩-৮ টা।

প্রসঙ্গ জ্যোতিষ

ইংরেজির মেধাবী ছাত্র সত্যজিৎ রায় ইংরেজি না পড়ে ‘আর্ট শিখিতেছে’ শুনে শিক্ষক সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্তর মনে হয়েছিল, মেধাবী ছেলের ‘এ কী দুর্মতি! বলিহারি আমার মাস্টারি বুদ্ধির।’ জানি না অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফিজিক্সের কোনও মাস্টার মশাইয়ের মনেও এমন আক্ষেপ ছিল কি না! ভাগ্যিস পদার্থবিজ্ঞানের মেধাবী ছাত্র অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর মাথায় গণবিজ্ঞানের পোকা নড়ে উঠেছিল, নইলে আশির দশকের সাড়া-জাগানো পত্রিকা ‘উৎস মানুষ’-এর জন্ম হত কি না সন্দেহ! তাঁর প্রাণের সেই পত্রিকা আজ ৩৭ বছর পেরনোর পথে। ১৭ নভেম্বর ২০০৮ অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রয়াণদিবস। পত্রিকার পক্ষ থেকে প্রতি বছর প্রয়াণ মাসে তাঁর স্মরণে একটি বক্তৃতার আয়োজন করা হয়। এ বারের অনুষ্ঠানটি হবে ১৮ নভেম্বর সন্ধে সাড়ে ৫টায় বিড়লা প্ল্যানেটারিয়াম সেমিনার হলে। বিষয়: ‘জ্যোতিষ কি আদৌ বিজ্ঞান?’ বক্তা অমলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়— যে-বর্ষীয়ান জ্যোতির্বিজ্ঞানী দশকের পর দশক ধরে জ্যোতিষের সঙ্গে জ্যোতির্বিজ্ঞানের বিপ্রতীপ সম্পর্ক নিয়ে জনমনে সচেতনতা জাগানোর ব্রত পালন করে চলেছেন। অনুষ্ঠানটি
উদ্বোধন করবেন শঙ্খ ঘোষ।

বাচিক শিল্পী

শহরে আবারও বাচিক শিল্পী ছন্দা রায়ের একক আবৃত্তি ও কথানাট্যের অনুষ্ঠান। ১৫ নভেম্বর বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় আইসিসিআর-এ, সর্জন আবৃত্তি আকাদেমির প্রযোজনায়। এ দিনের সন্ধ্যাকে দুটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্বে থাকবে আবৃত্তি। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত থেকে একেবারে আধুনিক কালের সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় শঙ্খ ঘোষ প্রমুখ কবির নির্বাচিত কবিতার আবৃত্তি শোনা যাবে এই অংশে। দ্বিতীয় পর্বের বৈশিষ্ট্য কথানাট্য। কবি দেবেশ ঠাকুরের লেখা দুটি কথানাট্য থাকছে এই পর্বে। প্রথমে ‘আরাধিতা’— কংসের আমন্ত্রণে শ্রীকৃষ্ণ এবং বলরামকে মথুরায় নিয়ে যেতে এসেছেন অক্রূর। অক্রূর এবং শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশে শ্রীরাধার মনোভাবের বহিঃপ্রকাশই ‘আরাধিতা’। পরে থাকবে ‘কৃষ্ণা চতুর্দশী’— পঞ্চপাণ্ডব-জায়া দ্রৌপদীর আত্মকথন। এই সঙ্গে থাকবে ‘অমৃতকথা’ অ্যালবামের উদ্বোধন। প্রসঙ্গত, এর আগে ভিন্নধর্মী ত্রিশটি কবিতা নিয়ে রবীন্দ্রসদনে ১৬ জানুয়ারি ছন্দা রায় একটি অনুষ্ঠান করেছিলেন ‘সৃজন সন্ধ্যায় একাকী ছন্দা’। শুধু অনুষ্ঠানেই থেমে থাকেননি তিনি, প্রতিনিয়ত পরিমার্জন করে চলেছেন নিজেকে, এগিয়ে চলেছেন বহতা নদীর মতো।

হারানো গান

যে গান হারিয়ে গিয়েছে, যে গান হারিয়ে যেতে বসেছে, সেই সব গান দিয়েই সাজানো ‘স্মৃতি-বিস্মৃতির গান’। রবীন্দ্রনাথ, দ্বিজেন্দ্রলাল, রজনীকান্ত, অতুলপ্রসাদ, হিমাংশু দত্ত এবং দিলীপকুমার রায়ের অনেক সুপরিচিত গানের আড়ালে রয়ে গিয়েছে এই সব হারানো গান। ১৮ নভেম্বর সন্ধে ৬টায় আইসিসিআর-এ অবনীন্দ্র সভাকক্ষে এই সব গান শোনাবেন হৈমন্তী শুক্ল, লোপামুদ্রা মিত্র, দেবজিত্‌ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাহানা বক্সি। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিকল্পনা-পরিচালনায় ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দিনই প্রকাশিত হবে ঋদ্ধির ‘প্রণাম’ অ্যালবামটি। এটির বিষয় অতুলপ্রসাদের গান (রাগা মিউজিক)। অতীতের গায়ক-নায়ক, অতুল-শিষ্য পাহাড়ী সান্যালের একটি অপ্রকাশিত গান এবং ঋদ্ধির গাওয়া ছ’টি গান দিয়ে অ্যালবামটি সাজানো— পাহাড়ী সান্যালের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ এটি।

রং ও রেখা

মডেল স্টাডি, স্টিল লাইফ, পোর্ট্রেট পেন্টিং— যা-ই করতেন অনিতা রায়চৌধুরী, তাঁর মাস্টারমশাইরা বলতেন: অনিতার স্টাডি-টা ছবি হয়ে গিয়েছে। আউটডোরে গিয়েছেন ইজেল সঙ্গে নিয়ে, খুব অল্প সময়ের মধ্যে কাজটা হয়ে গিয়েছে, মাস্টারমশাইরা এসে বলতেন: আর হাত দিয়ো না, ছবি শেষ। ‘এটা প্রশংসার কথা বুঝতে বেশ সময় লেগেছিল তখন।’ লিখেছেন অনিতা তাঁর ‘আমার মাস্টারমশাইরা’ পুস্তিকাটিতে (দেবভাষা)। যোগেন চৌধুরীর সতীর্থ এই শিল্পীর কলমচিত্রে গোপাল ঘোষ অনিল ভট্টাচার্য সত্যেন ঘোষাল প্রদোষ দাশগুপ্ত কিশোরী রায় চিন্তামণি কর রথীন মৈত্র প্রমুখ। শেষোক্ত শিক্ষক বলেছিলেন ‘বিশ্বের আলোছায়া কেমন ধরা দিয়েছে! একে ধরো।... তাঁর এই কথা আমায় আরও বেশি করে আলো ছায়ার গভীর বোধে নিয়ে গেল।’ অনিতার স্কেচ-সহ পুস্তিকাটি প্রকাশ করবেন সুশোভন অধিকারী। রবীন মণ্ডল বলবেন ‘বন্ধু ও শিল্পী অনিতা’। ১৬ নভেম্বর সন্ধে ৬টায় ‘দেবভাষা বই ও শিল্প আবাস’-এ (৬বি যতীন দাস রোড, লেক মার্কেট)। সে সন্ধ্যায় অনিতার ছবির প্রদর্শনী ‘রং ও রেখা’-র উদ্বোধন করবেন গণেশ হালুই। চলবে ৬ ডিসেম্বর অবধি (৩-৯টা)। ছবি আঁকাই ছিল যাঁর আনন্দপথ, নীরবে চলে গেলেন সম্প্রতি। তাঁর মৃত্যুর পর এই প্রথম প্রদর্শনী। সঙ্গে তাঁরই একটি ছবি।

সমরকুমার

চক্রবেড়িয়া হাই স্কুলে পাঠরত এগারো বছরের সমরকুমারকে শিশু শিল্পী হিসেবে পছন্দ, তাই পেছনে ধাওয়া করে একেবারে ভবানীপুরের ৫, পদ্মপুকুর রোডের বাড়িতে হাজির ‘নবীনযাত্রা’ ছায়াছবির কর্তারা। ‘মন্টু’ চরিত্রে প্রথম অভিনয়েই সেরা শিশুশিল্পীর পুরস্কার, ১৯৫২-’৫৪ পরপর তিন বছরই বি এফ জে-র শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পীর শিরোপা তাঁর ঝুলিতে। ধীরাজকুমার চট্টোপাধ্যায় ও সুপ্রভা দেবীর বড় ছেলের জন্ম বর্ধমানে মামাবাড়িতে। রক্ষণশীল পরিবারে বাবা অভিনয় করা অপছন্দ করতেন। ‘সপ্তপদী’র শুটিং শেষে সুচিত্রা সেন নিজের গাড়ি করে বাড়িতে এনে মাকে বলতেন আপনার গোপালকে (ডাকনাম) দিয়ে গেলাম। ১৯৬৬-তে ‘সুভাষচন্দ্র’ চলচ্চিত্রে কিশোর সুভাষের অভিনয়ে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাপ্তি। ‘ছোট উত্তমকুমার’ হিসেবে পরিচিত সমরকুমার শিল্পী, চলাচল, দেয়া নেয়া, চুপি চুপি আসে, বালিকা বধূ, মৌচাক, অগ্নীশ্বর, নায়িকার ভূমিকায়, অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি, দত্তা-সহ প্রায় আড়াইশো ছবিতে অভিনয় করেছেন। আশুতোষ কলেজের স্নাতক, গীতবিতানে রবীন্দ্র সংগীত ও উদয়শঙ্কর ব্যালে ট্রুপে শিক্ষা নেওয়া অভিনেতা উৎপল দত্ত ও অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নাটকে কাজ করেছেন।
এক বছর সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে যাত্রায় অভিনয় করেছেন। ২০ অক্টোবর বার্ধক্যজনিত রোগে প্রয়াত হলেন সমরকুমার।

বাংলাদেশ বইমেলা

বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সেতু রচনার উদ্দেশ্যে এ বছরও ‘বাংলাদেশ বইমেলা কলকাতা’ অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ১৫ নভেম্বর, বিকেল ৪টেয় মোহরকুঞ্জ প্রাঙ্গণে। চলবে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত। এটি ৭ম আয়োজন। বইমেলায় থাকছে ঢাকার বাংলা একাডেমিসহ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ৪৩টি প্রকাশনা সংস্থা। মেলায় বই বিক্রির পাশাপাশি প্রতি দিন সন্ধ্যায় থাকবে আলোচনা, কবিতা পাঠ এবং বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। উদ্বোধনী দিনে সংগীত পরিবেশন করবেন বাংলাদেশের গণসংগীত শিল্পী ফকির আলমগীর। ১৮ নভেম্বর গাইবেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। শেষ দিনে সংগীত পরিবেশন করবেন কণ্ঠশিল্পী, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন।

অতিথি

বাংলাদেশের বরিশালের ছেলে অনন্ত হিরা ছাত্রজীবনে বাংলাদেশ স্টুডেন্টস ইউনিয়নে যুক্ত ছিলেন, ওদের ‘ধানসিঁড়ি’তে নিয়মিত আবৃত্তি ও নাটক করতেন। ‘চেতনায় হানছে আঘাত’ নাটকের অভিনয়ে জাত চিনিয়ে দেন। ১৯৯০-তে স্বৈরাচার বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ায় প্রায় তিন মাস জেল খাটেন। ব্রজমোহন কলেজের বাংলায় অনার্স, চেয়েছিলেন শ্রমিকনেতা হয়ে জনসেবার কাজে লিপ্ত থাকতে। ’৮৪-তে ‘বরিশাল নাটক ও উদীচী’- র মুস্তাফা কামাল জাহাঙ্গিরের আহ্বানে প্রথম মঞ্চাভিনয় নিখিল সেনের নির্দেশনায় ‘পিতামহদের উদ্দেশে’ নাটকে। ’৯০-এ ঢাকার ‘নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়’-এ যোগদান। কাল সন্ধ্যা, দেওয়ান গাজীর কিসসা, অচলায়তন, রথের রশি, নূরলদীনের সারাজীবন, রক্তকরবী প্রভৃতি নাটকে উল্লেখযোগ্য অভিনয়ে নিজেকে দলে অপরিহার্য করেছিলেন। ২০০৩-এ কলকাতায় বসেই ‘প্রাঙ্গণেমোর’ নতুন নাট্যদল গড়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ পর্যন্ত ৪০টিরও বেশি মঞ্চনাটকে অভিনয়, নির্দেশনা আটটি নাটকে। নিজস্ব নাট্যদলের পনেরো বছরে বারোটি প্রযোজনার পাঁচটি তাঁর নির্দেশনায়। ঈর্ষা, আমি ও রবীন্দ্রনাথ (সঙ্গে তারই ছবি), শেষের কবিতা, কনডেমড সেল, আওরঙ্গজেব নাটকে তাঁর অভিনয়ে মুগ্ধ কলকাতার দর্শক। টেলিভিশনে নাট্যকার নাট্যনির্মাতা নির্দেশক হিসাবে ব্যস্ততা তুঙ্গে। নিজ কাহিনি চিত্রনাট্য সংলাপ পরিচালনায় নির্মাণ করছেন চলচ্চিত্র ‘ও আমার দেশের মাটি’। সম্প্রতি ছ’দিনে সাতটি প্রযোজনা নিয়ে কলকাতার আইসিসিআর-এ ‘প্রাঙ্গণেমোর বাংলাদেশ নাট্যোৎসব ২০১৭’ করে গেলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Karcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE