Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা

হি ‌ন্দু স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় সংগ্রহের নেশা পেয়ে বসে উৎপল সান্যালকে, ১৯৬৩ তখন। পড়াশোনার শেষে ক্যানসার ইনস্টিটিউটে বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মজীবন শুরু, আর ক্যানসার সচেতনতা তৈরির সূত্রেই গ্রাম-গঞ্জ-মফস্‌সলে ঘুরতে-ঘুরতে অবিরত খুঁজে গিয়েছেন পাখির বাসা, লেন্সবন্দি করেছেন নানান পাখির ছবি।

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

বাড়িতে বাড়িতে সংগ্রহশালা

হি ‌ন্দু স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ার সময় সংগ্রহের নেশা পেয়ে বসে উৎপল সান্যালকে, ১৯৬৩ তখন। পড়াশোনার শেষে ক্যানসার ইনস্টিটিউটে বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মজীবন শুরু, আর ক্যানসার সচেতনতা তৈরির সূত্রেই গ্রাম-গঞ্জ-মফস্‌সলে ঘুরতে-ঘুরতে অবিরত খুঁজে গিয়েছেন পাখির বাসা, লেন্সবন্দি করেছেন নানান পাখির ছবি। কত রকমের পাখির পরিত্যক্ত বাসা তাঁর সংগ্রহালয়ে, পাশাপাশি আরও কত কী! গৌতম বাগচি তাঁর বিচিত্র কলকাতার বিচিত্র সংগ্রাহক (বিগ বুক্‌স) বইটিতে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন এমনই সংগ্রাহকদের সঙ্গে, যাঁদের মধ্যে প্রবীণ সুশীলকুমার চট্টোপাধ্যায় থেকে নবীন সৌভিক মুখোপাধ্যায় সকলেই আছেন। এমন ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকেই উঠে আসে ইতিহাস রচনার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

যেমন এ-বইয়ের চমৎকার এক সাদাকালো স্থিরচিত্রে উপনিবেশের কলকাতায় গঙ্গার তীরবর্তী অঞ্চলের দোকানঘর— ইন্দ্রকুমার কাথোতিয়ার সংগ্রহে কলকাতার এই পিকচার পোস্টকার্ডে মুদ্রিত: ‘নেটিভ রিফ্রেশমেন্ট, স্টলস নিয়ার দ্য জেটিস’। অতীতের কলকাতাকে খুঁজে পেতে, বা তার ইতিহাসের পুনর্নির্মাণে এ রকম বিভিন্ন ব্যক্তিগত সংগ্রহালয়ে ঢুঁ মারতেই হবে। এই বইটির মতোই লিপিনাগরিক-এর (সম্পা: দেবব্রত মিত্র সৈকত মুখোপাধ্যায়) এ বারের সংখ্যাটি ‘সংগ্রাহক’দের নিয়ে। আমাদের সহনাগরিক অথচ স্বভাবত স্বতন্ত্র বহু সংগ্রাহকের রূপরেখা ‘তুলে ধরতে চাওয়া হয়েছে ভবিষ্যতে আরও কোনো বড় কাজের আশায়’, জানিয়েছেন সম্পাদকেরা। সে কালের রাধাপ্রসাদ গুপ্ত সুভো ঠাকুর কমলকুমার ও ইন্দ্রনাথ মজুমদার ডেভিড ম্যাকাচ্চন বসন্ত চৌধুরী সিদ্ধার্থ ঘোষ তারাপদ সাঁতরা থেকে শুরু করে এ কালের পরিমল রায় দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় চন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় সৌমেন নাথ সন্দীপ দত্ত সুশান্তকুমার চট্টোপাধ্যায় অমিত রায় সুদীপ দাস লক্ষ্মী লাহা, কিংবা পি এম বাক্‌চি-র সংগ্রহ-সংরক্ষক জয়ন্ত ও পীযূষ বাক্‌চি প্রমুখ নিরন্তর সদা উদ্যোগী ব্যক্তিগত সংগ্রহে।

বই ও পত্রিকা দু’টিই সুমুদ্রিত, সাদাকালো ও রঙিন স্থিরচিত্রে উজ্জ্বল। সংগ্রাহকদের নিয়ে দু’টি প্রয়াসই অবশ্য সংগ্রহযোগ্য। ডান দিকে সঞ্জিৎ চৌধুরীর তোলা রাধাপ্রসাদ গুপ্তের ছবি, ‘লিপিনাগরিক’ থেকে।

জাতীয় শিক্ষক

• তিনি যে সময়টায় হিন্দু স্কুলে ছিলেন (১৯৪১-১৯৬৫), সেই পর্বটি ছিল স্কুলের ইতিহাসে ধারাবাহিক সাফল্যের সেরা উদাহরণ। নানা সমস্যার মধ্যেও এই ফলাফল কতটা প্রধান শিক্ষকের কৃতিত্বের স্বাক্ষর, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। জাতীয় শিক্ষক কানাইলাল মুখোপাধ্যায় হিন্দু স্কুল থেকে অবসর নেওয়ার পর পরই রাজ্যপাল হরেন্দ্রনাথ রায়চৌধুরীর সুপারিশে সদ্য স্থাপিত টাকী বয়েজ স্কুলের নেতৃত্ব দিতে তাঁকে ডেকে নেন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়। অল্প দিনের মধ্যেই তিনি টাকী বয়েজকে কলকাতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়ে পরিণত করেন। এখানে তিনি ছিলেন ১৯৬৫ থেকে ৫ বছর। এ বার স্কুলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে স্কুল প্রাঙ্গণে তাঁর ব্রোঞ্জের আবক্ষ মূর্তি স্থাপিত হবে ৪ মার্চ সকাল ১১টায়। মূর্তি উন্মোচন করবেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

প্রাণপুরুষ

• ঘড়ির দোকানে কাজ দিয়ে জীবন শুরু। এর পর ওষুধের দোকান, বইয়ের দোকান হয়ে অবশেষে নিজে প্রেস কিনে সেখান থেকে ‘জ্ঞানাঙ্কুর’, ‘বসুমতী’-র মতো পত্রিকা প্রকাশ করেন। এখান থেকেই বসুমতী সাহিত্য মন্দিরের প্রাণপুরুষ উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের অর্থভাগ্য ফিরেছিল এবং ব্যবসাক্ষেত্রেও প্রতিষ্ঠিত হন। তিনি বিশ্বাস করতেন, এই সবেরই মূলে ছিল শ্রীরামকৃষ্ণের আশীর্বাদ। এ বার তাঁরই নামাঙ্কিত ‘ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও শ্রীরামকৃষ্ণ’ শীর্ষক প্রথম বর্ষের স্মারক বক্তৃতা আয়োজন করেছে সূত্রধর, ১ মার্চ সন্ধে ৬টায় রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার, গোলপার্ক-এর শিবানন্দ হলে। বলবেন, স্বামী ত্যাগরূপানন্দ। প্রাক-কথনে দেবাঞ্জন সেনগুপ্ত। এ দিনেই ম্যাক্স মুলার রচিত বইয়ের মহেশ্বর ভট্টাচার্য কৃত অনুবাদ শ্রীরামকৃষ্ণ: তাঁর জীবন এবং কথামালা ও দেবাঞ্জন সেনগুপ্তর শ্রীরামকৃষ্ণ ও বাংলার মুক্তি আন্দোলন (সূত্রধর) প্রকাশ করবেন স্বামী দিব্যানন্দ।

সংগীত চর্চা

• তিনি যেমন গানে, তেমনি মৃদঙ্গ বাদনেও ওস্তাদ ছিলেন। নৃত্যশিল্পী না হলেও তিনি অবশ্যই নৃত্যের এক জন ভাল ডিমনস্ট্রেটর। স্বামী বিবেকানন্দের সংগীত চর্চার এই সব দিক নিয়ে রামকৃষ্ণ মিশন স্বামী বিবেকানন্দের পৈতৃক আবাস এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সঙ্গে যৌথ ভাবে নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলন দক্ষিণ কলকাতা শাখার নিবেদন ‘সুর ও ছন্দ— বিবেকানন্দ’ ভিডিয়োটি। প্রদর্শিত হবে ৩ মার্চ সন্ধে সাড়ে ৭টায়, বেলুড় রামকৃষ্ণ মঠে। ভিডিয়োতে স্বামীজির ব্যবহৃত বোলবাণী মৃদঙ্গে বাজিয়েছেন নিশান্ত সিংহ এবং সরোদে দীপঙ্কর চৌধুরী। বোলগুলি নৃত্যে রূপ দিয়েছেন তাপস দেবনাথ। সহযোগিতায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যানিম্যাট্রিক্স মাল্টিমিডিয়া। পরিকল্পনা ও পরিচালনায় সর্বানন্দ চৌধুরী।

হাসির নাটক

• সম্প্রতি ‘অন্য থিয়েটার’ আয়োজিত এক বিতর্ক সভার বিষয় ছিল ‘হাসির নাটকের এন্তেকাল ঘটেছে।’ প্রস্তাবের পক্ষের বক্তাদের মধ্যে ছিলেন মেঘনাদ ভট্টাচার্য এবং বিপক্ষে চন্দন সেন। আপাতত তাঁরা বিভেদ ভুলে একটি নির্ভেজাল হাসির নাটকেরই প্রস্তুতি নিয়েছেন। সায়ক প্রযোজিত নাটকটির নাম ‘প্রেমকথা’। নাটকটি ফরাসি নাট্যকার মলিয়ের-এর রচনা অবলম্বনে লিখেছেন চন্দন সেন। অপেরাধর্মী প্রযোজনাটির সংগীত করেছেন প্রতীক চৌধুরী। প্রথম দুটি অভিনয় যথাক্রমে মিনার্ভা থিয়েটারে ২ মার্চ ও অ্যাকাডেমিতে ৫ মার্চ সন্ধে সাড়ে ৬টায়।

প্রেক্ষাগৃহ

• গড়িয়া স্টেশন কেন্দ্রিক প্রতিটি নাট্য তথা সাংস্কৃতিক সংগঠন ও সংস্কৃতিমনস্ক মানুষের আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম ‘সংস্কৃতি সংহতি’ তৈরি হয় ২০০৯-এ। মূল লক্ষ্য রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা অঞ্চলে গড়িয়া স্টেশন লাগোয়া একটি প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ। অঞ্চলের সংস্কৃতিমনা সাধারণ মানুষ, খান বারো নাট্যদল, এবং অঞ্চলের রিকশাচালকদের কয়েকটি জনপ্রিয় নাট্যদলও এই আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত। সম্প্রতি ভাষা দিবসে তারা সোনারপুর উত্তর বিধানসভার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ‘প্রদীপকুমার নস্কর স্মৃতি পুরস্কার’ প্রদান করল বাংলা ভাষায় নেপালি কবি নরবাহাদুর লামাকে। পাশাপাশি, ‘সংস্কৃতি সংহতি’র উদ্যোগে গড়িয়া স্টেশন অঞ্চলে প্রেক্ষাগৃহের দাবিতে ৫ মার্চ বিকেল ৫টায় একটি বর্ণাঢ্য পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।

ভূবিজ্ঞানী

• সঙ্কর্ষণ রায় পেশায় ছিলেন ভূবিজ্ঞানী, কিন্তু নেশায় পুরোদস্তুর সাহিত্যিক। জিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার অধিকর্তা পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের খনিজভিত্তিক শিল্পায়নের কাজে যেমন যুক্ত ছিলেন, তেমনই ভূবিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষের কাছে সরস, আকর্ষক করে পেশ করার কাজেও তাঁর জুড়ি মেলা ভার ছিল। প্রবন্ধকে গল্পের ছলে পেশ করে তার নাম দেন ‘প্রগল্প’। শুধু মাটি আর খনিজ নয়, মাটির নীচের সেই সম্পদকে কেন্দ্র করে যে আরণ্যক জীবন, সঙ্কর্ষণ রায়ের কলম বেয়ে সেই মানুষ ও পশুপাখির কথাও প্রবেশ করেছিল বাংলা সাহিত্যে। ভূতাত্ত্বিকের চোখে পশ্চিমবাংলা বইটির জন্য পেয়েছিলেন রবীন্দ্র পুরস্কার। ৮৯ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন তিনি, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি।

স্মরণ

• বহুরূপী-র সঙ্গে সুদীর্ঘ সহযাত্রায় কুড়িরও বেশি নাটক পরিচালনা করেন কুমার রায়। শূদ্রকের ‘মৃচ্ছকটিকম’ থেকে ব্রেশট-এর ‘গ্যালিলেও’, রবীন্দ্রনাথের ‘মালিনী’ থেকে ‘মিস্টার কাকাতুয়া’, ‘দীপদণ্ড’ বা ‘ফুল্লকেতুর পালা’-র মতো মঞ্চসফল ও দর্শকধন্য প্রযোজনাগুলির প্রাণপুরুষ তিনিই। শম্ভু মিত্রের পর তিনি ছিলেন বহুরূপী-র সুযোগ্য কাণ্ডারী। ২০১০-এ তাঁর প্রয়াণের পর থেকে প্রতি বছর আয়োজিত হয় কুমার রায় স্মারক বক্তৃতা ও স্মারক সম্মান প্রদান অনুষ্ঠান। ২ মার্চ কুমার রায়ের জন্মদিন, স্মরণ ও উদ্‌যাপনও সে দিনই। গোর্কি সদনে সন্ধে সাড়ে ছ’টায় বলবেন বিশিষ্ট সমাজবিজ্ঞানী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সঙ্গে আলাপচারিতায় শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়। স্মারক সম্মান তুলে দেওয়া হবে কালীঘাট কুমার রায় নাট্য অ্যাকাডেমি-র হাতে।

তথ্যচিত্র

• বাজার বা বিপণন দূর স্থান, তথ্যচিত্রের প্রকৃত গুণগ্রাহী এ শহরে ক’জন, সন্দেহ। অথচ কলকাতাতেই প্রতি বছর সোৎসাহে অনুষ্ঠিত হয় ‘ডকেজ কলকাতা: এশিয়ান ফোরাম অব ডকুমেন্টারি’। সপ্তাহভর সেখানে তথ্যচিত্রের প্রদর্শন, আলোচনা, দেশবিদেশের ছবি-নির্মাতাদের উপস্থিতিতে নতুন ভাবনার উপস্থাপন। গ্যেটে ইনস্টিটিউটের ম্যাক্সমুলার ভবনে, ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ। ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, কানাডা, কোরিয়া, ইজরায়েলের পরিচালক-প্রযোজকরা থাকছেন ‘টিউটর’ বা ‘মেন্টর’ হিসেবে। কান উৎসবে পুরস্কারজয়ী ছবি ‘দ্য সিনেমা ট্র্যাভেলার্স’ দেখানো হবে উৎসব-শুরুর সন্ধ্যায়।

ঝড়

• হিন্দু কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হন হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরোজিয়ো। তৎকালীন সেই হিন্দু কলেজ ভেঙেই সূচনা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের। দ্বিশতবর্ষ উদ্‌যাপন উপলক্ষে সেই ডিরোজিয়োর কর্মজীবন অবলম্বনে উৎপল দত্ত রচিত ‘ঝড়’ নাটকটি মঞ্চস্থ করল প্রেসিডেন্সি প্রাক্তনী সংসদ। ২৫ ফেব্রুয়ারি শিশির মঞ্চ অবাক বিস্ময়ে দেখল প্রাক্তনীদের অভিনয় কুশলতা। এই প্রযোজনায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন দুই প্রাক্তনী, নাট্যব্যক্তিত্ব অরুণ মুখোপাধ্যায় ও বিভাস চক্রবর্তী। অভিনয়ে ছিলেন পঞ্চাশের দশকের ছাত্র অনিন্দ্য মিত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রজন্মের ছাত্রছাত্রী— মৈনাক সেনগুপ্ত, সুশ্রুত চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বজিৎ দত্ত, কথাকলি জানা, ঊর্মি চট্টোপাধ্যায়, সুকৃতি লহরী প্রমুখ। নির্দেশনায় ছিলেন বিতানবিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়।

বৈষম্য

• বেঙ্গালুরুতে এক তানজানিয়ান ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনা বা তার ঠিক পর পরই নয়াদিল্লিতে কঙ্গোর এক যুবককে পিটিয়ে মেরে ফেলা। আমাদের দেশে আফ্রিকানদের ওপর এ রকম নানা আক্রমণ দেখে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ‘ফোটোগ্রাফিক প্রোজেক্ট’ শুরু করেন বেঙ্গালুরুর আলোকচিত্রী মহেশ শান্তারাম। ভারতে পড়তে বা কর্মসূত্রে এসে বৈষম্যের শিকার আফ্রিকানদের ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। এ বার তাঁর সে সব ছবিই তসবির-এর উদ্যোগে হ্যারিংটন স্ট্রিট আর্ট সেন্টারে ‘দ্য আফ্রিকান পোর্ট্রেটস’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে। চলবে ৩ মার্চ, ১২-৭ পর্যন্ত। সঙ্গে তারই একটি।

পরিযায়ী

ছোটবেলায় কেন্দুলিতে থাকার সময় বাড়িতে না বলে চলে যেতাম শ্মশানে। দেখতাম চিতায় শরীর জ্বলছে, দেখা যাচ্ছে শুধু দুটি পা। এই দৃশ্য আমাকে খুবই উতলা করে তুলত, বলছিলেন শিল্পী পাপিয়া দাস বাউল। এই কি মানুষের ভবিতব্য, এমন ভাবনাই আমাকে বাউলমুখী করে তুলেছে।’ এই শহরের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য বন্ধন শিল্পীর। লেখাপড়া নিউ আলিপুরের বিদ্যাভারতী স্কুলে। তারপর আশুতোষ কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক। সঙ্গে ছিল সমাজবিদ্যা আর সংগীত। বেঙ্গল মিউজিক কলেজে পেয়েছেন চণ্ডীদাস মাল এবং পূরবী দত্তের মতো শিক্ষককে। ১৯৯৯-এ তিনি চলে যান লন্ডনে। সেখানে ছবি আঁকা শিক্ষা। অতঃপর, গান ছবি লেখা— এই নিয়েই প্রাত্যহিকের জীবন। ছেলেবেলায় খুব রোগা আর দুষ্টু ছিলাম, স্বীকারোক্তি শিল্পীর। দৌড়, খেলা, গান, ছবি আঁকা এ সবের মধ্যেই কেটে গিয়েছে দিন। পেয়েছি পূর্ণ দাস বাউলের সস্নেহ শিক্ষা। কলকাতায় এলেই স্মৃতির ঝাঁপি উজাড় হয়ে আসে। ওঁর ছবিতেও ফিরে ফিরে আসে বাউলের সেই তত্ত্বকথা, সঙ্গে মানবজমিনের ইতিহাস। দ্য লন্ডন মিসেলেনি এবং আই সি সি আর –এর যৌথ উদ্যোগে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর গ্যালারিতে হয়ে গেল ওঁর সঙ্গীতানুষ্ঠান একতারা সেতার সঙ্গম শীর্ষকে। সেতারে সঙ্গত করলেন জার্মান শিল্পী সেবাস্টিয়ান ড্রেয়ার। প্রাককথনে ছিলেন অশোক বিশ্বনাথন। এর পর যাবেন পুরুলিয়ার পলাশ উৎসবে, তারপর কেরল, চেন্নাই হয়ে আবার পরিযায়ী পাখির মতো ডানা মেলা!

আশি পেরিয়ে

তিনি গণনাট্য সঙ্ঘে কাজ করেছেন। যুক্ত ছিলেন কো-অর্ডিনেশন কমিটির সংস্কৃতিক কাজকর্মেও। হাওড়া শিবপুরের বনেদি পরিবারে ১৯৩৭ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি জন্ম বিপিনবিহারী-বসুমতী দেবীর পুত্র নাট্যকার-অভিনেতা অরুণ মুখোপাধ্যায়ের। তিনিই এ বার আশি পূর্ণ করে একাশির পথে পা বাড়ালেন। প্রেসিডেন্সিতে পড়াশোনা, হোম ডিপার্টমেন্টে চাকরির সময় নাটকপ্রেমী কয়েকজন সহকর্মী পান এবং তাঁদের নিয়েই প্রযোজনা করেন ব্রেশটের ‘মা’ নাটকটি। ১৯৭২ সালে জন্ম হয় তাঁর নিজের নাট্যদল ‘চেতনা’-র। ১৯৭৩-এর জানুয়ারিতে মঞ্চস্থ হয় দলের প্রথম প্রযোজনা ‘মারীচ সংবাদ’। তাঁর নির্দেশিত এবং অভিনীত নাটকগুলির মধ্যে আছে ‘জগন্নাথ’, ‘স্পার্টাকাস’, ‘রামযাত্রা’, ‘রোশন’, ‘ভালো মানুষের পালা’, ‘দিবা রাত্রির কাব্য’, ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’, ‘চিরকুমার সভা’, ‘চলচ্চিত্ত চঞ্চরী’। কাজ করেছেন উৎপল দত্ত ও শম্ভু মিত্র-র সঙ্গে, পেয়েছেন সঙ্গীত নাটক সহ একাধিক পুরস্কার। অভিনয় করেছেন ঋত্বিক ঘটকের ‘কোমল গান্ধার’-এ। মৃণাল সেনের ‘পরশুরাম’ ছবিতে অভিনয় করেই শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জাতীয় পুরস্কার পান। তাঁর অভিনয় ধরা আছে ‘মহানগর @ কলকাতা’, ‘কাঙাল মালসাট’, ‘মুক্তধারা’, ‘পিস হ্যাভেন’-এর মতো ছবিতে। আগামীতে তাঁর দুটি নাট্য প্রযোজনা— ব্রেখট-এর ‘দ্য ককেশিয়ান চক সার্কেল’ অবলম্বনে মিনার্ভা রেপার্টরির ‘খড়ির গণ্ডি’ আর ইবসেন-এর ‘ডলস হাউস’ অবলম্বনে আর একটি নতুন নাটক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkatar Korcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE