Advertisement
E-Paper

কলকাতার কড়চা: দুই জীবনশিল্পীর সংলাপ

ফুলের আগুন লাগল নীল দিগন্তে। শুরু হল এক ধ্বংসোন্মুখ পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য তাঁদের আশ্চর্য কথোপকথন।

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০০

জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নাইটহুড প্রত্যাখ্যানের কয়েক দিন পর, ক্ষুব্ধ ও বিষণ্ণ রবীন্দ্রনাথের হাতে এসে পৌঁছল বিশিষ্ট ফরাসি ঔপন্যাসিক ও মানবভাবুক রম্যাঁ রলাঁর চিঠি, ‘মুক্তমনের স্বাক্ষরপত্র’-তে সই করার আর্ত আবেদন নিয়ে। রবীন্দ্রনাথ মুহূর্তমাত্র চিন্তা না করে সই করলেন (২৪ জুন ১৯১৯)। ফুলের আগুন লাগল নীল দিগন্তে। শুরু হল এক ধ্বংসোন্মুখ পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য তাঁদের আশ্চর্য কথোপকথন। ‘‘হে আমার অতি প্রিয় বন্ধু’’, রবীন্দ্রনাথ লিখছেন, ‘‘আমি তো মহাত্মা গাঁধীর হাতে হাত রাখতে চাই, যাতে জনসাধারণ খুশি হয়। কিন্তু আমি তো বেশি দিন লুকিয়ে রাখতে পারব না যে আমাদের সত্যানুসন্ধান ও ভাবনা সম্পূর্ণ আলাদা।’’ (১৯২৫) রলাঁ লিখছেন, ‘‘আমরা যে নীড় বেঁধেছি অনন্ত বৃক্ষের ওপর।’’ তাঁর আন্তর্জাতিকতাকে ভারতবর্ষে কেউ বুঝল না বলে রবীন্দ্রনাথ এ দেশ ছেড়ে চিরকালের মতো ঘর বাঁধতে চাইছেন রলাঁর বাড়ির কাছে, জেনিভা হ্রদের তীরে। এ বার ইংরেজিতে প্রকাশিত হল ব্রিজিং ইস্ট অ্যান্ড ওয়েস্ট: রবীন্দ্রনাথ টেগোর অ্যান্ড রম্যাঁ রলাঁ করেসপন্ডেন্স ১৯১৯-১৯৪০ (অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস), বিশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দুই জীবনশিল্পীর অবিস্মরণীয় সংলাপ। সবসুদ্ধ ৫৬টি চিঠি, তিনটি সংলাপ। ফরাসি থেকে রলাঁর চিঠিগুলির নতুন অনুবাদ-সহ সম্পূর্ণ পত্রাবলি সম্পাদনা করে দীর্ঘ ভূমিকা ও টীকা লিখেছেন চিন্ময় গুহ। আছে ওঁদের টেলিগ্রাম, রথীন্দ্রনাথের চিঠি, সম্পর্কিত ঘটনাবলি ও চরিত্রদের সম্পর্কে জরুরি তথ্য, গাঁধী-রবীন্দ্রনাথ-রলাঁর সম্পর্ক, মুসোলিনি-বিতর্ক, সে বিষয়ে পাশ্চাত্যের সমকালীন বিশিষ্টজনের চিঠিপত্রের উদ্ধৃতি, গাঁধী বিষয়ে রলাঁ ও সৌম্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিস্ফোরক পত্রবিনিময়। শঙ্খ ঘোষের কথায়, ‘‘এই প্রায়-বিস্মৃত চিঠিপত্র হয়তো আজকের পৃথিবীতে এই ক্রমবর্ধমান পাশবিক জাতীয়তাবাদের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করবে।’’ ২২ নভেম্বর সন্ধে সাড়ে ছ’টায় আলিয়াঁস ফ্রাঁসেজ-এ (৫৭এ পার্ক স্ট্রিট) বইটি উদ্বোধন করবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গের ছবিতে রলাঁ ও রবীন্দ্রনাথ (প্রচ্ছদ থেকে)।

বিরল কার্তিক

মদনমোহন প্রামাণিক হুগলি সপ্তগ্রামের অন্তর্গত সাহাগঞ্জের বাড়িতে কার্তিক পুজো শুরু করেন। আজও এই পুজো অব্যাহত। মদনমোহনের নাতি তৈজস শিল্পী গুরুচরণের পুত্র স্বনামধন্য তারক প্রামাণিকের উত্তরপ্রজন্ম আজও পুজো করে আসছেন উত্তর কলকাতায় তারক প্রামাণিক রোডের নিজস্ব বসত বাড়িতে, স্মৃতি রোমন্থন করছিলেন চুয়াত্তর বছরের সত্যেন্দ্রকুমার প্রামাণিক। ওঁদের কার্তিকের বিশেষত্ব, মূর্তিটি সিংহাসনের উপর পদ্মাসনে রাজবেশে উপবিষ্ট, নাম ‘রাজা কার্তিক’। নীচে বাহন হিসেবে তিনটি ময়ূর। পিছনে চালচিত্রের জায়গায় ময়ূরপুচ্ছ দিয়ে সাজানো। বংশপরম্পরায় কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীই মূর্তি গড়েন। বর্তমান শিল্পী স্বপন পাল জানালেন, তিনটি ময়ূর-সহ কার্তিক বিরল, এই মূর্তি কুমোরটুলিতে একটিই হয়। সঙ্গে তারই ছবি।

বাচিক শিল্পী

তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। বিনোদন জগতে অন্য ধরনের ফ্যাশন স্টেটমেন্ট যেমন তাঁকে চিনিয়ে দেয়, তেমনই তাঁর অভিনয় ক্ষমতা— সে পর্দায় হোক বা মঞ্চে, সাবলীল ও নিখুঁত উচ্চারণ এবং সুরেলা কণ্ঠটি তাঁর জাতটি চিনিয়ে দেয়। কলকাতার এই বাচিক শিল্পী বিবিসি রেডিয়ো থ্রি-তে ইংরেজি নাটকেও অভিনয় করেছেন। তাঁর লেখা একক নাটক ‘হ্যাপি বার্থডে’ কানাডার ক্যুইয়র থিয়েটারে অভিনীত হয়েছে। অর্থনীতির স্নাতক ও এমবিএ সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায় অভিনয় করেছেন শেখর দাস পরিচালিত ‘নেকলেস’, ‘যোগাযোগ’, অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের ‘মহাপুরুষ ও কাপুরুষ’, শিবপ্রসাদ ও নন্দিতার ‘বেলাশেষে’ প্রভৃতি চলচ্চিত্রে। ২০০৩ থেকেই নিজেকে শিল্পে সম্পূর্ণ নিয়োজিত করেন সুজয়। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে এগিয়ে তিনি শিল্পীজীবনের পনেরো বছরে পৌঁছেছেন। এই উপলক্ষে আইসিসিআর-এ ১৭ নভেম্বর ৬:৪৫-এ ‘ফ্রোজ়েন’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলার বিশিষ্ট সঙ্গীতজ্ঞ, কবি, সাহিত্যিক ও অভিনেতারা।

পড়শি যদি...

মুসলমান চাষিদের গ্রাম ছিল রায়নগর। ব্রহ্মপুর বাজারের লাগোয়া সেই গ্রাম আজ নগরায়ণের গ্রাসে। সেখানে ‘মেটে মসজিদ’ আর লাগোয়া ‘ইদগা’ ঘিরে এখন আকাশছোঁয়া আবাসন। ইদগায় একটা পলাশ গাছ থাকলে বড় ভাল লাগত, চাইছিলেন ইদগার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহিদুল শেখ। তাঁর স্বপ্ন আর সেখানে এক ফ্ল্যাটের বাসিন্দা সুমিত-ঈপ্সিতার ইচ্ছের যোগাযোগে ইদগার মাঠে বসছে গোটা দশেক গাছ। ওঁদের পুত্র তিমির আবর্তের এক বছরের জন্মদিন এ ভাবেই উদ্‌যাপন হবে ১৫ নভেম্বর, বিকেল ৪টেয়। হবে পড়শিদের মেলামেশা, সংলাপ ইত্যাদি। দেশ জুড়ে ধর্মের নামে বৈরিতা আর হানাহানির মধ্যে এ এক দ্যুতিময় উদ্ধার। সঙ্গে আছে ‘সহমন’— বৈরিতা মুছে সহজ সমাজে পৌঁছনোর এক প্রয়াস। তাদের মন্ত্র লালন সাঁইয়ের সেই পদ: ‘‘পড়শি যদি আমায় ছুঁতো/ যম যাতনা সকল যেত দূরে’’। এ দিকে শিশু দিবস উপলক্ষে ‘প্রতিবেশীকে চিনুন’ ও ‘স্ন্যাকিং’-এর উদ্যোগে ১৮ নভেম্বর লেক গার্ডেন্সে আয়োজন করা হয়েছে ‘ইউনিফেস্ট’। মিলেমিশে বাঁচার গল্প শোনাবেন জয়া মিত্র, অনিতা অগ্নিহোত্রী ও দীপাঞ্জন ঘোষ। ভিন্ন ভাষাভাষী শিশুরা শোনাবে নিজের ভাষায় গল্প। গান গেয়ে বিভেদের বাঁধ ভাঙতে শিশুদের সঙ্গে গলা মেলাবেন রূপম ইসলাম। অনুষ্ঠানের সূচনা করবেন ইউনিসেফ-এর পশ্চিমবঙ্গ শাখার প্রধান মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।

কাপুরুষ

‘কেন? নিজের ঘরে বসে কথা বলা কি ভারতীয় সংবিধানে বারণ নাকি?’— প্রশ্ন তুলেছিল বিশু, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘বৃহন্নলা’ নাটকের (নাটকসমগ্র ১, আনন্দ) একটি চরিত্র। আর-একটি চরিত্র ধীরেনও প্রশ্ন তোলে: ‘‘এ দেশে শান্তি নিরাপত্তা এ সব কি আর কোনওদিন ফিরে আসবে না?’’ শন ও’কেসি-র ‘দ্য শ্যাডো অব আ গানম্যান’ অবলম্বনে ১৯৭০-এ নাটকটি লেখেন সৌমিত্র। আটচল্লিশ বছর পর এই প্রথম নাটকটি মঞ্চস্থ হচ্ছে ‘দুটি কাপুরুষের কথা’ নামে, বিলু দত্ত ও তাঁর ‘মুখোমুখি’-র প্রযোজনায়। নির্দেশনায় সৌমিত্র-কন্যা পৌলমী। ‘‘সত্তর দশকে নকশাল আন্দোলনের পটভূমিতে লেখা এ নাটক পড়ে আমার মনে হয়েছিল নাটকটা এখনকার সময়ের কথাও বলে। বড় অস্থির সময়ে বসবাস করছি, কিন্তু দেশের শাসনক্ষমতা যাঁদের হাতে তাঁদের বিরুদ্ধে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিছু বলতে পারছি কি আমরা?’’ এত বছর পর এ নাটক মঞ্চায়নের অভিপ্রায় জানাচ্ছিলেন পৌলমী। তাঁর সঙ্গে অভিনয়ে তরুণ অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। প্রথম অভিনয় অ্যাকাডেমিতে, ১৬ নভেম্বর দুপুর ৩টেয়।

ঐতিহ্য সম্মেলন

প্রয়াত লোকসংস্কৃতিবিদ তারাপদ সাঁতরা এমন এক ‘পশ্চিমবঙ্গকোষ’-এর স্বপ্ন দেখতেন, যাতে ধরা থাকবে এ রাজ্যের প্রতিটি গ্রামের বিবরণী। সেই ভাবনায় সওয়ার হয়ে তাঁর ভাবশিষ্য দেবাশিস বসু গুরুর প্রতিষ্ঠিত ‘কৌশিকী’ পত্রে অনেককে দিয়ে গ্রাম বিবরণী লিখিয়েছিলেন। কিন্তু এ কাজ তো আর একটি পত্রিকা বা ব্যক্তিবিশেষের দ্বারা সম্পূর্ণ হওয়ার নয়। তাই তাবৎ আঞ্চলিক ইতিহাসপ্রেমীকে উদ্বুদ্ধ করার আশায় দেবাশিস রচনা করেছেন একটি প্রাথমিক নির্দেশিকা। ‘আঞ্চলিক ইতিহাসের গুরুত্ব ও তথ্যসংগ্রহের পদ্ধতি’ শীর্ষকে তিনি সেটি নিবেদন করবেন ১৪ নভেম্বর দুপুর দেড়টায়, রামমোহন লাইব্রেরির সভাকক্ষে। বিকেল ৫টায় দেখানো হবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তথ্যচিত্র ‘চন্দ্রকেতুগড়’, ‘দমদম: এক বিস্মৃত নগরী’ বিষয়ে বলবেন মৌমিতা সাহা। সারা দিনের এই ‘ঐতিহ্য সম্মেলন’-এর উদ্যোক্তা দেশকাল/ পিপলস গ্রিন সোসাইটি সে দিন বিভিন্ন ক্ষেত্রের দশ জন কৃতীকে পুরস্কার অর্পণ করবে।

নাট্যকর্মী

‘‘এক জন নাট্যকর্মী নিছক এক জন অভিনেতা নন, তার থেকে অনেক বেশি কিছু,’’ মনে করেন ফয়সল আলকাজ়ি। বিশ শতকের ভারতীয় নাট্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নির্দেশক তথা নাট্য-প্রশিক্ষক, ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা-র প্রাক্তন অধিকর্তা ইব্রাহিম আলকাজ়ির ছেলে ফয়সল দিল্লির রুচিকা থিয়েটার গ্রুপের ৪৬ বছরের নাট্যচর্চায় ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রেখেছেন। তাঁর কাছে ‘শিল্প কোনও না কোনও ভাবে সমাজদর্পণ’, নাটক করার পাশাপাশি সমাজকর্মেও একই রকম ওতপ্রোত তিনি, বিশেষ করে সেই সব শিশুদের নিয়ে যারা ট্রমার শিকার। এ বার কলকাতার ‘বহুস্বর’-এর আয়োজনে ১৬-১৮ নভেম্বর জ্ঞানমঞ্চে ও পদাতিক স্টুডিয়ো থিয়েটারে দেখা যাবে ফয়সল-নির্দেশিত রুচিকা-র তিনটি নাটক, সাম্প্রতিক প্রয়োজনা দ্য গ্যাদার্ড লিভ্স-সহ, টি ও গুডবাই ফরএভার। থাকছে বাংলার নাট্যকর্মীদের কর্মশালাও।

টেরাকোটা কর্মশালা

বীরভূমের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে গড়িয়া ব্রহ্মপুরে বর্তমান বাসস্থান ও স্টুডিয়োয় পৌঁছতে বহু চড়াই-উতরাই পেরোতে হয়েছে। বিশ্বভারতী কলাভবনে ১৯৬৭- ৭২ পর্যন্ত পেলেন রামকিঙ্কর-সহ বহু শিল্পীর সান্নিধ্য। পাঠ শেষে কলকাতায় এসে প্রথমে ইন্টিরিয়ার ডিজ়াইনের কাজে যোগ দিলেন তারক গরাই। শিল্পের নানা কাজে সচ্ছলতা এলেও অধরা ছিল স্বপ্ন। ’৮৪-তে সব ছেড়ে মন দিলেন নিজস্ব শৈলীতে চিত্র-ভাস্কর্যে। সব রকম ভাস্কর্যে সাবলীল, তবে ব্রোঞ্জ তাঁকে বাড়তি আনন্দ দেয়। এখন ভবিষ্যতের শিল্পী গড়তে দেশবিদেশে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালায় ব্যস্ত প্রবীণ ভাস্কর। তাঁরই তত্ত্বাবধানে ১৩-১৮ নভেম্বর (রোজ ৯টা-সাড়ে ৬টা) ব্রহ্মপুরে গরাই আর্ট সেন্টারে ভারত ও বাংলাদেশের চৌদ্দ জন শিল্পী একত্র হবেন ‘টেরাকোটা মাস্টার ক্লাস ২০১৮’ শীর্ষক কর্মশালায়। আয়োজনে আইজিএ গ্যালারিয়া পুণে। উপস্থিত থাকতে পারবেন আগ্রহী জন।

বেসুরো কথা

যাদবপুরে সেন্ট্রাল গ্লাস অ্যান্ড সেরামিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের দ্বারোদ্ঘাটনে এসে সি ভি রামন কিছু বেসুরো কথা বলেছিলেন: “এই অনুষ্ঠানে যে জাঁকজমক দেখছি, তাতে তো বেশ কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে, এর পরিবর্তে সাধারণ একটু সভা করে ওই টাকা দিয়ে যদি এই ল্যাবরেটরির জন্য আরও যন্ত্রপাতি কেনা যেত, সেটা সার্থক হত...।’’ সবাই নিঃশব্দ। ১৯৮০ থেকে ‘উৎস মানুষ’-এর বেসুরো কথা বলা শুরু। যাঁর সম্পাদনাগুণে পত্রিকার সেই ধারা বজায় ছিল তিনি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৭ নভেম্বর ২০০৮ তাঁর অকাল প্রয়াণ ঘটে। ‘উৎস মানুষ’ এখনও নিয়মিত বেরোয়। প্রতি বছরের মতো এ বারও ১৭ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায় বিড়লা তারামণ্ডলের সেমিনার হলে দশম অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা। নদী বিশেষজ্ঞ তপোব্রত সান্যাল বলবেন ‘বছর বছর বন্যা— এই বিপর্যয় কি আদৌ ঠেকানো যাবে?’ শীর্ষকে।

বিজয়লক্ষ্মী

জীবনে প্রথম আবৃত্তি প্রতিযোগিতা। মেয়েটি কুণ্ঠায় জড়সড়। তাতেই প্রথম! ১৯৭০-এর সেই রূপোর পদক এখনও অম্লান। তার পর বিস্তর প্রতিযোগিতায় নানা পুরস্কার। আস্তে আস্তে প্রতিযোগিতার আঙিনা থেকে মঞ্চে আবৃত্তি। টান তৈরি হল অভিনয়েও। সেই থেকে সমান তালে আবৃত্তি আর অভিনয় নিয়ে এগিয়ে চলেছেন বিজয়লক্ষ্মী বর্মন। এই দুই ধারার কাজ এক বিন্দুতে মিলেছে ‘যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল’-র মঞ্চ উপস্থাপনায়। কাব্য-উপন্যাসের কাব্যকে অটুট রেখেই মঞ্চে অভিনয়। নিজের পরিচালনায় দ্বিতীয় একক অভিনয়— ‘যাজ্ঞসেনী অগ্নিকন্যা’। ১৮ নভেম্বর মধুসূদন মঞ্চে তাঁর দু’টি একক নাটক— বিকেল ৪টেয় ‘যারা বৃষ্টিতে ভিজেছিল’ এবং সন্ধে ৭টায় ‘যাজ্ঞসেনী অগ্নিকন্যা’। নাটক দু’টির ডিভিডি-ও প্রকাশ করতে চলেছে ভাবনা রেকর্ডস।

চেতনা

শিবপুরের বাড়িতে থাকেন তখন, ‘মারীচ সংবাদ’ লেখার চেষ্টা করছেন। একদিন সন্ধেবেলায় বাড়ি ফেরার পথে সামনের বিরাট মাঠটা থেকে পুত্র লাল-কে (সুমন) আনতে গিয়েছেন অরুণ মুখোপাধ্যায়... রামযাত্রা করছিল একটি দল, সেখানে শুনতে পেলেন রাবণ ডেকে পাঠানোর পর মারীচ কালনেমিকে বলছে: ডাকলেই যেতে হবে? আমি কি রাবণের বেতনভোগী কর্মচারী?— ‘‘কথাটা আমাকে ভয়ংকর স্ট্রাইক করেছিল।... বেশির ভাগটাই স্পনটেনিয়াসলি করে ওরা।... ‘মারীচ’কে আমি কী ভাবে করব তার ক্লু-টা পেলাম।...’’ এক কথোপকথনে বলেছেন অরুণবাবু। তাঁর এই রকম কয়েকটি আলাপচারিতা আর গুরুত্বপূর্ণ রচনায় সেজে উঠেছে অরুণ আলোয় থিয়েটার (সম্পা: অনুপ মুখোপাধ্যায়। পুরুলিয়া অন্যচোখে, পরি: ভাষালিপি)। তাঁকে নিয়ে লিখেছেন বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্বরা, চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেন... প্রায় সকলেই। নান্দীমুখ-এ শমীক বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন ‘‘তিনি তাঁর থিয়েটারে অবিচলিতভাবেই এক বামপন্থী নাট্যসংস্কৃতিকে লালন করে এসেছেন।... ওই বামপন্থী সংস্কৃতিরই আরও দু’টি চিহ্ন অরুণের গানপ্রীতিতে ও সাহিত্যপ্রীতিতে।’’ সত্তর দশকের আদিতে জন্ম হয়েছিল চেতনা-র, ‘মারীচ’-এর বছর চারেক পরের প্রযোজনা ‘জগন্নাথ’ চেতনা-কে করে তুলল বঙ্গদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাট্যগোষ্ঠী। অরুণবাবুর নেতৃত্বে তাঁরা বরাবরই অস্থির সময়ে দাঁড়িয়ে থিয়েটারের শিল্পভাষার ভিতর দিয়ে মানুষকে ভাবনার রসদ আর মনের তৃপ্তি দুইই জুগিয়েছেন। ৪৬ বছর পূর্তিতে তাঁদের নাট্যোৎসব অ্যাকাডেমিতে, ২১-২৩ নভেম্বর। প্রকাশ পাবে ‘চেতনা নাট্যপত্র’। যে নাটকগুলি মঞ্চস্থ হবে এ উৎসবে, তাতে যেমন থাকছে ‘ঘাসীরাম কোতোয়াল’ কিংবা ‘ডন— তাকে ভালো লাগে’, তেমনই ‘মারীচ সংবাদ’ও, সেখানে অভিনয়ও করবেন অশীতিপর অরুণবাবু। উৎসব উদ্বোধন করবেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

Korcha Kolkata Kolkatar Korcha কলকাতার কড়চা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy