Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কলকাতার কড়চা: বাহনের বায়নাক্কা

পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা নিরন্তর যাঁদের কাজ, যাঁরা প্রতিনিয়ত সরব পশুপাখির সংরক্ষণ নিয়ে, তাঁদের সেই শুভপ্রয়াসই যেন ছায়া ফেলেছে এই গল্পগুলিতে

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

বাহনের গুণে আকর্ষিত হয়েই দেবতারা তাদের চান। আমাদের চার পাশে যে সমস্ত পশুপাখি দেখি তারা এই জগৎ-সংসারে বড়ই উপকারে আসে, অতএব মানুষেরও কর্তব্য মানবিক ভাবে তাদের আগলে রাখা। পুরাণের দেবদেবীরা সে চেতনা সঞ্চারের জন্যেই যেন অনেকটা রক্ষাকর্তা কিংবা রক্ষয়িত্রীর ভূমিকায় আবির্ভূত হন, পশুপাখিকে নিজেদের বাহন করে তোলেন, যাতে তারা অকারণে মানুষের হাতে পীড়িত না হয়।’’ বাহনের বায়নাক্কা গল্প-সঙ্কলনটি লেখার অভিপ্রায় বলছিলেন দীপান্বিতা রায়। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা নিরন্তর যাঁদের কাজ, যাঁরা প্রতিনিয়ত সরব পশুপাখির সংরক্ষণ নিয়ে, তাঁদের সেই শুভপ্রয়াসই যেন ছায়া ফেলেছে এই গল্পগুলিতে। শিশু-কিশোরদের জন্য রচিত তাঁর এই গল্পগুলি থেকে ওই নামেই নতুন নাটক মঞ্চস্থ করছে নান্দীকার। তিন দশক জুড়ে শিশু-কিশোরদের কাছে থিয়েটারকে পৌঁছে দিয়েছে এই নাট্যগোষ্ঠী। এ বারে পুজোর আগে সব বয়সিদেরই আনন্দ দিতে এই মজাদার নাট্যনির্মাণ। কৈলাসে দুর্গা আর শিবের সংসার, চার ছেলেমেয়ে গণেশ-লক্ষ্মী-সরস্বতী-কার্তিক, এবং তাঁদের বাহন সিংহ ষাঁড় ইঁদুর পেঁচা হাঁস ময়ূর— এক আশ্চর্য রসায়নে বাঙালি দর্শককে মাতিয়ে তুলতে সংকল্পবদ্ধ নান্দীকারের তরুণ-তরুণীরা। ‘‘কমবয়সিরাই এখন দলটাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। এদের মধ্যে থেকেই আগামী দিনের অভিনেতা-অভিনেত্রী তৈরি হয়ে উঠছে। তৈরি পরিচালকও— যেমন গল্পগুলিকে একত্রে একটি নাটকে রূপ দিয়েছে অর্ঘ্য দে সরকার, নির্দেশনাও ওরই। বাবা-মা-আমি সকলেই মনে করি প্রাক-পুজোর অনুভব এনে দেবে এই টিম-নান্দীকার। আর দীপান্বিতাদি এগিয়ে এসে গল্প-সঙ্কলনটিকে আমাদের না দিলে এ প্রযোজনা অপূর্ণ থেকে যেত।’’ বলছিলেন রুদ্রপ্রসাদ ও স্বাতীলেখার কন্যা সোহিনী, তিনিই মুখ্য উপদেষ্টা এই নাট্যপ্রযোজনার। মঞ্চসজ্জা দেবব্রত মাইতির, আলোকনির্মাণ অভ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের, আবহসঙ্গীতে শৌভিক ভট্টাচার্য। প্রথম অভিনয় অ্যাকাডেমিতে ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধে সাড়ে ৬টায়। সঙ্গে মহড়ার একটি দৃশ্যে গণেশ ও তাঁর বাহন ইঁদুর।

দৃশ্যপট

ছবি-ভাস্কর্যের প্রদর্শনী তো কতই হয়। কিন্তু প্রদর্শবস্তুকে একেবারে অন্য ভাবে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে দেবভাষা। দর্শক দেখবেন একটি পত্রিকাই যেন খুলে মেলে রাখা হয়েছে দেখার জন্য। পত্রিকায় থাকে প্রচ্ছদ-নিবন্ধ, এখানে তেমনই ‘মুখচ্ছবি’। পুজো সামনে, তাই এ মাসের মুখচ্ছবি দুর্গা (সঙ্গে সৌমিত্র করের দুর্গা)। থাকছে শিল্পকাজের ধারাবাহিক, ‘বিশেষ রচনা’র মতো ‘বিশেষ শিল্পকাজ’— এ বারে মজিলপুরের দক্ষিণরায়। ফোটোফিচারের অনুষঙ্গে ‘এ মাসের প্রিন্ট’— নন্দলাল বসু আর কে জি সুব্রহ্মণ্যনের ছবির প্রিন্ট। এমনই অনেক কিছু নিয়ে পত্রিকার চেহারায় সেজে উঠেছে দেবভাষার আদি আবাস (৬বি যতীন দাস রোড, লেক মার্কেট), যার প্রধান কক্ষটি মণীন্দ্র গুপ্তের নামে চিহ্নিত। মাসিক ‘দৃশ্যপট’ উদ্বোধন হল ১৬ সেপ্টেম্বর।

পাহাড়ের ছবি

‘‘...সেদিন ছিলো পাহাড়টার জন্মদিন/পাহাড় মেঘকে বললে/— আজ তুমি লাল শাড়ি পরে আসবে।/মেঘ পাহাড়কে বললে/— আজ তোমাকে স্নান করিয়ে দেবো চন্দন জলে।...’’ চিত্রকূট আর্ট গ্যালারির ‘মাউন্টেন্‌স অব গডস’ প্রদর্শনী দেখতে দেখতে শিল্পী-কবি পূর্ণেন্দু পত্রীর এই কল্পনাই যেন মনে পড়ে। ছবিগুলি দেখে বোঝা যায় পাহাড়ের সৌন্দর্য শিল্পীদের মনে কতখানি প্রভাব ফেলেছিল। অবন ও গগন ঠাকুর, যামিনী রায় (সঙ্গের ছবি), নিখিল বিশ্বাস, নন্দলাল বসু, বসন্ত পণ্ডিত, প্রাণকৃষ্ণ পাল প্রমুখের রংতুলিতে উঠে এসেছে পাহাড়ের নৈসর্গিক নির্জনতার ছবি। ‘পাখি’ ও ‘গাছ’ নিয়ে ছবির প্রদর্শনীর পর এ বার পাহাড়ের ছবিতে ভরে উঠেছে চিত্রকূট। চলবে ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, বিকাল ৩-৮টা।

জীবনে ফেরা

‘‘...এখানে ওঁরা গারদ না বলে সংশোধনাগার বলেন। আমেরিকায় দেখা জিনিসের মধ্যে আমার কাছে এটা মহত্তম।’’ আলাসিঙ্গা পেরুমলকে চিঠিতে লিখেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। পশ্চিমবঙ্গের কারাগারগুলির নাম এখন ‘সংশোধনাগার’। শ্রীমা সারদাদেবীর সার্ধশতজন্মবর্ষে মালদহ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সন্ন্যাসী, ব্রহ্মচারী ও ভক্তরা মালদহ জেলা সংশোধনাগারের অন্তরিনদের সেবা করার সুযোগ পান। পরে আরও অনেকগুলি সংশোধনাগারে এই সেবা প্রসারিত হয়েছে। ফলে অন্তরিনদের অনেকেরই উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। এই কর্মকাণ্ডের সামগ্রিক চিত্র ফুটে উঠেছে স্বামী দিব্যানন্দের জীবনে ফেরা (সূত্রধর) বইটিতে। ২২ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টায় রামকৃষ্ণ মিশন শিক্ষণ মন্দির, বেলুড় মঠের বিবেকানন্দ মণ্ডপে সূত্রধর আয়োজিত অনুষ্ঠানে বইটি প্রকাশ করবেন স্বামী সুবীরানন্দ।

কথা সেলাই

‘‘কাঁথা সেলাইয়ের মতোই কথা সেলাই। আখ্যান তৈরির বুননের কথা বলব। একজন কথাকার কী ভাবে কথার ফাঁকে না-বলা কথাকেও বুনে দেন, কিংবা বুনে দেন নৈঃশব্দ্যকেও, বলব সে কথাই। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার সূত্রেই বলব নিশ্চয়ই। আর সুনীলদার গল্প-উপন্যাসের কথা সেলাই নিয়েও বলব।’’ জানালেন স্বপ্নময় চক্রবর্তী। কৃত্তিবাস আয়োজিত সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা দেবেন তিনি এ বার, বিষয়: ‘কথা সেলাই’। অমর মিত্রের সভাপতিত্বে গল্পপাঠ করবেন তিলোত্তমা মজুমদার। কবিতাপাঠে বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাকা দাশগুপ্ত। গানে সুরজিৎ। সুনীলের কবিতা পাঠ করবেন ঊর্মিমালা বসু ও সুমন্ত্র সেনগুপ্ত। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মদিন উপলক্ষেই এ অনুষ্ঠান বাংলা আকাদেমিতে ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধে ৬টায়।

বিজ্ঞান ও রবীন্দ্রনাথ

‘‘এখন বিজ্ঞান যতই প্রকৃতি ও মানবের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটাচ্ছে ততই প্রকৃতি প্রাকৃতভাবে আমাদের কাছে জাগ্রত হয়ে উঠছে।’’— লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ (‘সাধনা’, ১২৯৯ ব.)। বস্তুত বিভিন্ন রচনায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে তাঁর মতামত আমাদের বিজ্ঞান-ব্যবহারকে সতর্ক করে। বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা রবীন্দ্রনাথের বিজ্ঞান বিষয়ক প্রায় সমস্ত উক্তি ও রচনা (বিশ্বপরিচয় বাদে) সঙ্কলন করেছেন সুব্রত ঘোষ তাঁর রবীন্দ্রচিন্তনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (দি সী বুক এজেন্সি) বইটিতে। ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেল চারটেয় বইটি উদ্বোধন করবেন জয় গোস্বামী, কেন্দ্রীয় কাচ ও সিরামিক গবেষণা কেন্দ্রের (যাদবপুর) মেঘনাদ সাহা প্রেক্ষাগৃহে। দ্বিতীয় পর্বে পুণের জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্রের অধিকর্তা সোমক রায়চৌধুরী বলবেন ‘মহাবিশ্ব ও আমরা’ বিষয়ে। আয়োজক অহর্নিশ এবং সিজিসিআরআই। অন্য দিকে ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের নতুন লাইব্রেরি ভবনের সভাকক্ষে সোমক রায়চৌধুরী বলবেন ‘দ্য ফিউচার অব দ্য ইউনিভার্স’ শিরোনামে।

ধর্মস্থান

শুধু কি পর্তুগিজ বা ইংরেজ, বাণিজ্যপথে বাংলা তথা কলকাতায় এসেছে আর্মেনীয়, ইহুদি, পার্সি, গ্রিক, স্কট, চিনা, জাপানিরাও। তাঁদেরই বাহিত ধর্মবিশ্বাস এই শহরে নানা সময়ে তৈরি করেছে প্রার্থনাস্থল। শক্তিপীঠ কালীঘাট, নাখোদা মসজিদ, সেন্ট পল’স ক্যাথিড্রালের পাশেই স্থান করে নিয়েছে পরেশনাথ জৈন মন্দির, মাগেন ডেভিড সিনাগগ, জাপানি বুদ্ধমন্দির বা পার্সি অগ্নিমন্দির (সঙ্গের ছবি)। দু’মলাটের মধ্যে লেখায় ও ছবিতে মহানগরের বিবিধ বিচিত্র ধর্মস্থানগুলিকে বেঁধেছেন জ্যেল সিলিমান ও মালা মুখোপাধ্যায়— হোয়্যার গডস রিসাইড: সেক্রেড প্লেসেস অব কলকাতা বইয়ে (নিয়োগী বুকস)। নিছক পাতা ওল্টানোর কফি টেবল বই নয়, ইতিহাস ছুঁয়ে-থাকা শিল্পভাবনারও রসদ। ম্যাক্সমুলার ভবনে এক সন্ধেয় জ্যেল ও মালা বললেন এই বইয়ের পশ্চাৎপট, প্রকাশকের উৎসাহের কথাও। দিল্লির নিয়োগী বুকস সম্প্রতি নতুন বই-দোকান খুলেছে কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ায়, আনন্দসংবাদ।

শৃঙ্গ জয়

সাফল্যের ধারা বজায় রইল। হিমাচল হিমালয়ের কোয়ারাং টু (৬১৮৭ মিটার) শৃঙ্গ জয় করল ‘পর্বত অভিযাত্রী সঙ্ঘ’। ১৯৬০ সালে ভারতবর্ষের প্রথম অসামরিক পর্বতাভিযান হয় নন্দাঘুণ্টিতে। সেই অভিযানের সাফল্য বাঙালির পর্বতাভিযানের দুয়ার খুলে দিয়েছিল। ষাটের দশকেই তৈরি হয় ‘পর্বত অভিযাত্রী সঙ্ঘ’। পর পর অভিযানে আসে সাফল্য। কোয়ারাং টু-ও তার ব্যতিক্রম হল না। ২৬ অগস্ট সকাল ১১:৩০ মিনিটে দশ জন অভিযাত্রী চূড়ায় পৌঁছন। নেতৃত্বে ছিলেন নিতাই মণ্ডল, সহ-নেতৃত্বে সঞ্জয় ভৌমিক। ছিলেন সংগ্ৰামী সামন্ত, কমল আঢ্য, অমিয় মিত্র, সুমিত দাস, অর্ঘ্যদীপ সিংহ, পার্থপ্রতিম বিশ্বাস, যশঙ্ক মিদ্যা ও বিতান চন্দ্র।

জন্মদিনে

‘‘এই যে তোমরা রবীন্দ্রনাথের গান শিখছ, গাইছ, মনের মধ্যে কোনও ছবি ফুটে উঠতে দেখছ না?” কথাটা, গান শেখানোর ফাঁকে প্রায়ই বলতেন সুচিত্রা মিত্র। মনে গেঁথে যাওয়া সেই উপলব্ধির সূত্রেই, সুচিত্রা মিত্রের এ বছরের জন্মদিনে, তাঁর ছাত্রী মনীষা বসুর শ্রদ্ধার্ঘ্য ‘গানের ছবি ছবির গান’। গান শুনতে শুনতে মনে মনে ছবি দেখা, আবার কখনও চলমান ছবি দেখতে দেখতে, নির্দিষ্ট কাহিনি পেরিয়ে সে গানের সারাৎসারে ছবিকে খুঁজে পাওয়া...। সে গান তখন তৈরি করে এক অনির্বচনীয় সাঁকো। চোখের দেখা আর মনের দেখাকে মিলিয়ে দেয়। এমন সব সংক্ষিপ্ত অথচ অন্তরঙ্গ আলোচনার পরিসর থাকবে খানিকটা। আর মনীষার গান তো আছেই। ‘রবি ভৈরবী’র এই আয়োজন ১৯ সেপ্টেম্বর বিড়লা সভাগারে, সন্ধে ছ’টায়। থাকবেন শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়।

নৃবিজ্ঞানী

নৃবিজ্ঞানী হিসাবে সবিতারঞ্জন সরকার রাজ্য ও রাজ্যের বাইরের বিভিন্ন জনজাতীয় গোষ্ঠীর সমাজ-সংস্কৃতিকে দেখতে চেয়েছিলেন। লিখেছেন দেশবিদেশের নানা পত্রিকায়। উত্তরবঙ্গ-সহ বাংলার নানা মুখোশ সংগ্রহ করেছিলেন। মুখোশ ও বনবাসী রাভাদের মুখোশ নাচ নিয়ে বইও লিখেছেন। কলকাতার ভারতীয় সংগ্রহশালার নৃবিজ্ঞান বিভাগের কিপার ছিলেন, কিছু কাল সংগ্রহশালার ভারপ্রাপ্ত অধিকর্তার দায়িত্বও পালন করেন। শিলং-এ জনজাতীয় সংস্কৃতির সংগ্রহশালা গড়ে তোলায় তাঁর উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ। পেয়েছেন দীনেশচন্দ্র সেন পুরস্কার। জন্ম ইয়াঙ্গনে, তবে শৈশব কেটেছে ঢাকায়। তার পর চলে আসেন কলকাতায়। সম্প্রতি ৮৬ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন তিনি।

উড়ান

সব সময় বড়রাই কেন লিখবে আর আঁকবে ছোটদের বই? ১৯৬০-এর দশকে ‘পাপুর বই’ হাতে পেয়ে চমকে গিয়েছিল বাঙালি পাঠককুল। সম্প্রতি সেই ভাবনাকে ফিরিয়ে আনল কালিকাপুর অঞ্চলের সংগঠন ‘উড়ান’। প্রকাশ করল ছোটদের লেখা-আঁকা বেশ কিছু বই। যেখানে অনেক বইয়ে মা-বাবাই জুড়ে দিয়েছেন গল্প-কবিতা। গড়ে উঠেছে আদান-প্রদানের জায়গা। আপাতত এই সংস্থা চেষ্টা করছে ছোটদের সহজাত দক্ষতাগুলো লালন করতে। শিশুদের নানা কর্মশালাও করছে তারা।

অঞ্জনযাত্রা

সত্তর দশক। উত্তাল কলকাতা। সকাল সাড়ে দশটায় অঞ্জন দত্তকে উত্তর কলকাতার এ-গলি ও-গলি ঘুরিয়ে হঠাৎ একটা গলির মাঝখানে এসে দাঁড়ালেন বাদল সরকার। বললেন ‘‘বিকেল সাড়ে ছ’টা থেকে সাতটার মধ্যে এই শহরে আমায় খুঁজে বার করতে হবে। এই গোটা শহরের মধ্যে আমি যেখানে থাকব, সেখানে।’’ বলে চলে গেলেন। বাদলবাবুর কাছে অভিনয় শেখার এমন নানা অভিজ্ঞতা অঞ্জনের স্মৃতির ঝুলিতে। যেমন প্রথম সাক্ষাতেই অঞ্জনকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘দেখো, তোমাকে অভিনয় করতে গেলে বাংলা শিখতে হবে।’’ এ ভাবেই নাগাড়ে বলে গিয়েছেন অঞ্জন, নিজের হয়ে-ওঠা নিয়ে, তাতে এসে পড়েছে তাঁর থিয়েটার, গান, সিনেমা, এ-দেশ ও-দেশ, ব্যক্তিগত জীবন, আরও কত কী! সেই কথোপকথনকেই গ্রন্থিত করেছেন সাজ্জাদ হুসাইন। ‘ছাপাখানার ভূত’ (ঢাকা) থেকে বেরিয়েছে অঞ্জনযাত্রা। ‘‘জার্নি-ই এটা একটা। অন্ধকার আলো, দুইয়ে মেশানো।... শুধু কষ্ট করেছি, তা নয়। প্রচুর কষ্ট দিয়েছি, অন্যদের। কাছের মানুষদের। কষ্ট এবং প্রচ্ছন্ন দুঃখ থেকেই আনন্দের জন্ম।’’ অঞ্জনের এ বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করছে স্বপ্নসন্ধানী। জ্ঞানমঞ্চে ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধে সাড়ে ৬টায়। উদ্বোধনে বক্তা বিভাস চক্রবর্তী ও শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়। ৭টায় স্বপ্নসন্ধানী-র সাম্প্রতিক প্রযোজনা ‘তারায় তারায়’, যেখানে অঞ্জন আছেন ভ্যান গঘ-এর ভূমিকায়। ‘‘এ নাটকের নির্দেশক, এমনকি সহ-অভিনেতা হিসেবেও অঞ্জনদার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে যে শৈল্পিক বোঝাপড়ার ভিতর দিয়ে গিয়েছি, তা যেমন আশ্চর্যের তেমনই আনন্দময়।’’ জানালেন কর্ণধার কৌশিক সেন। ছবি বই থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE