E-Paper

আসছে ভোট, অফিসারদের বিরুদ্ধে মামলার খতিয়ান চাইল লালবাজার

বর্তমানে কোথায় পোস্টিং বা আগে কোথায় পোস্টিং ছিল, তা জানানোর পাশাপাশি অফিসারদের স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা কোথায়, তা-ও জানাতে হবে।

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:৫৪

—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন আর কয়েক মাস পরেই। সে দিকে লক্ষ রেখে কয়েক মাস আগে থেকেই ভোটের প্রস্তুতি শুরু করার জন্য বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মা। এ বার নির্বাচনকে মাথায় রেখে থানায় কর্মরত ইনস্পেক্টর, সাব-ইনস্পেক্টর, সার্জেন্ট এবং সহকারী নগরপাল ও উপ-নগরপালদের মতো অফিসারদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা অথবা দুর্নীতির অভিযোগ আছে কিনা, তা জানতে চাইল লালবাজার। নির্দিষ্ট ফরম্যাট মেনে তা লালবাজারে পাঠাতে বলা হয়েছে কলকাতা পুলিশের সব ডিভিশনকে। সেই সঙ্গে, তাঁদের কেউ গত চার বছরের মধ্যে তিন বছর একই থানা বা ডিভিশনে কর্মরত ছিলেন কিনা, তা-ও ওই অফিসারদের জানাতে বলা হয়েছে। আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে তিন বছর পূর্ণ হলে তা-ও জানাতে বলা হয়েছে লালবাজারের জারি করা নির্দেশে। এরই সঙ্গে পুলিশ অফিসারদের বাড়ি কোন জেলায় বা কলকাতা পুলিশের কোন ডিভিশনে, তা কোন লোকসভা ও বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত, তা-ও লিখে পাঠাতে হবে বলে খবর।

এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, লালবাজারের তরফে বলা হয়েছে, বর্তমানে কোথায় পোস্টিং বা আগে কোথায় পোস্টিং ছিল, তা জানানোর পাশাপাশি ওই অফিসারদের স্থায়ী এবং বর্তমান ঠিকানা কোথায়, তা-ও জানাতে হবে। ওই নির্দেশে মোট দশটি বিষয় জানাতে বলা হয়েছে পুলিশ অফিসারদের।

প্রসঙ্গত, নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি বা দুর্নীতির মামলা থাকলে তিনি কোনও ভাবেই নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারেন না। আবার, কোনও পুলিশ অফিসারের নিজের বাড়ি যে জেলায়, তিনি সেই জেলায় কর্মরত থাকতে পারবেন না নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে। এর পাশাপাশি, একই থানা অথবা কলকাতা পুলিশের একই ডিভিশনের একই পদে তিন বছরের বেশি থাকতে পারবেন না কোনও অফিসার। মনে করা হচ্ছে, এই জন্যই অফিসারদের বিস্তারিত তথ্য জোগাড় করতে চাইছে লালবাজার। যাতে আগামী বছরের ভোট প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই নিয়ম মেনে তাঁদের অন্য কোথাও বদলি করা যেতে পারে।

উল্লেখ্য, মাসকয়েক আগেই কলকাতার নগরপাল বাহিনীর অফিসারদের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে বিধানসভা ভোট নিয়ে বিভিন্ন নির্দেশ দিয়েছিলেন। যার মধ্যে দাগি দুষ্কৃতীদের সম্পর্কে সমস্ত তথ্য জোগাড় করতে বলেছিলেন। এ ছাড়াও দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে বলেছিলেন তিনি।

সূত্রের দাবি, এ বারের বিধানসভা ভোট কলকাতা পুলিশের সামনে অন্যান্য বারের তুলনায় বেশি মাত্রায় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। তার কারণ হিসাবে বাহিনীর অভিজ্ঞেরা বলছেন, এ বার ভাঙড়ের মতো এলাকার ভোটও পরিচালনা করতে হবে বাহিনীকে। লোকসভা ভোটের আগে জেলা পুলিশ থেকে ভাঙড় কলকাতা পুলিশের অধীনে এলেও সেখানে শান্তিপূর্ণ ভোট করিয়েছিল লালবাজার। কিন্তু প্রতি বারই বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। এ বার তা ঠেকানোই বাহিনীর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ বলে অভিমত পুলিশকর্তাদের।

ভাঙড় কলকাতা পুলিশ এলাকায় আসায় বিধানসভা নির্বাচনে লালবাজারকে সামলাতে হবে ১৯টি কেন্দ্রের ভোট। এর মধ্যে ১৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের পুরোটারই নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে লালবাজারের হাতে। বাকি ক্যানিং (পূর্ব) এবং মেটিয়াবুরুজ বিধানসভা কেন্দ্রের একটি বড় অংশের নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে তাদের উপরে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lalbazar WB assembly election

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy