Advertisement
E-Paper

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তের শাস্তি শৌচাগার সাফাই

খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক যুবককে জনসেবামূলক কাজ করতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশ, আগামী তিন বছর ওই যুবককে হাওড়ার বেলুড়ের শ্রমজীবী হাসপাতালে বিনা পারিশ্রমিকে শৌচালয় ও মেঝে পরিষ্কার করতে হবে।

শমীক ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৬ ০১:১৩

খুনের ঘটনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক যুবককে জনসেবামূলক কাজ করতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশ, আগামী তিন বছর ওই যুবককে হাওড়ার বেলুড়ের শ্রমজীবী হাসপাতালে বিনা পারিশ্রমিকে শৌচালয় ও মেঝে পরিষ্কার করতে হবে। হাইকোর্টের বিচারপতি সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি রাজীব শর্মার ডিভিশন বেঞ্চ গত ২১ জুন ওই নির্দেশ দিয়েছে।

পুলিশ জানায়, বীরভূমের বাসিন্দা স্বামী পরিত্যক্তা এক মহিলা বাপের বাড়ি থাকতেন। ২০০৬ সালের ১২ এপ্রিল সন্ধ্যায় ওই মহিলা পাড়ার একটি পুকুরে স্নান সেরে বাড়ি ফিরছিলেন। ওই সময়ে পড়শি ধনঞ্জয় দাস তাঁকে কুপ্রস্তাব দেয়। মহিলা বাড়ি ফিরে নিজের বাবা ও দাদাদের বিস্তারিত জানান। এ নিয়ে মহিলা ও ধনঞ্জয়ের পরিবারের মধ্যে বচসা বাধে। ওই দিন রাত ৯টা নাগাদ ধনঞ্জয়ের পরিবারের লোকজন বাঁশ ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে মহিলার বাড়ি চড়াও হয়। মহিলার বাবা হেলারাম, দাদা বাসুদেব ও বিশ্বনাথকে বেধড়ক মারধর করে ধনঞ্জয়ের পরিবারের লোকজন। রক্তাক্ত ও গুরুতর জখম অবস্থায় মহিলার বাবা ও দাদাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হেলারামের মৃত্যু হয়।

মহিলার দায়ের করা এফআইআর-এর ভিত্তিতে পুলিশ ধনঞ্জয় ও তার পরিবারের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে। সিউড়ি ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের অতিরিক্ত বিচারক ২০০৮ সালে দোষী সাব্যস্ত করে ধনঞ্জয়কে। ধনঞ্জয়ের যাবজ্জীবন সাজা হয়। বাকিদেরও জেলে পাঠায় আদালত।

চলতি বছরে জেল থেকে হাইকোর্টে আপিল মামলা করে দোষীরা। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ধনঞ্জয় ছাড়া তার পরিবারের বাকি সদস্যের শাস্তির মেয়াদ বহাল রাখে। ধনঞ্জয়ের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ হল, সে-ও দোষী। কিন্তু ঘটনার সময়ে এবং নিম্ন আদালতে বিচারের সময়ে ধনঞ্জয় নাবালক ছিল। তার বয়স ছিল আনুমানিক ১৬ বছর। এখন তার বয়স ২৬।

হাইকোর্ট তার রায়ে জানিয়েছে, নাবালকদের জেলে রাখা আইন সম্মত নয়। আবার ধনঞ্জয়কে সরকারি হোমেও রাখা যাবে না। ডিভিশন বেঞ্চ মনে করে, তাকে সেখানে রাখা হলে হোমের অন্য কিশোরদের খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে জনসেবামূলক কাজে লাগানোর ব্যবস্থার কথা আইনে বলা রয়েছে। তাই ধনঞ্জয়কে বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী তিন বছর সেখানকার অর্থোপেডিক বিভাগের পুরুষদের ওয়ার্ডের শৌচালয় ও মেঝে সাফাই করবে ধনঞ্জয়। তার খাওয়া এবং থাকার ব্যবস্থা করবেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাইকোর্টের আরও পর্যবেক্ষণ, প্রত্যেক সাধুর যেমন অতীত থাকে, তেমনই প্রত্যেক পাপীর ভবিষ্যত রয়েছে। ধনঞ্জয় আগামী তিন বছর জনসেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখলে, তার আত্মা ধীরে কলূষমুক্ত হবে।

Imprisonment Punishment Toilet
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy