Advertisement
E-Paper

ধৃত মদের দোকানের দুই মালিক, কর্মীও

আবগারি আইন ভেঙে আবেশ দাশগুপ্ত ও তার বন্ধুদের মদ বিক্রির অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এঁদের মধ্যে দু’জন সংশ্লিষ্ট দোকানের মালিক এবং এক জন একটি মদপ্রস্তুতকারক সংস্থার প্রতিনিধি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:২৭

আবগারি আইন ভেঙে আবেশ দাশগুপ্ত ও তার বন্ধুদের মদ বিক্রির অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এঁদের মধ্যে দু’জন সংশ্লিষ্ট দোকানের মালিক এবং এক জন একটি মদপ্রস্তুতকারক সংস্থার প্রতিনিধি।

গত শনিবার লেখক অমিত চৌধুরীর মেয়ের জন্মদিন উপলক্ষে প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি ক্লাবে দুপুরের খাওয়া সেরে তাঁদের সানি পার্কের বাড়ি যাওয়ার আগে বালিগঞ্জের একটি দোকান থেকে মদ কিনেছিল আবেশরা। কিন্তু আবগারি আইন অনুযায়ী ২১ বছরের কম বয়সী কাউকে মদ বিক্রি করা নিষিদ্ধ। অথচ আবেশদের বয়স আঠারোও পেরোয়নি। সেই কারণেই মদের দোকানের মালিক সৌম্যজ্যোতি সাহা এবং রাজেশ সাহাকে‌ গ্রেফতার
করা হয়েছে।

দোকানের সিসিটিভিতে দেখা গিয়েছে মদপ্রস্তুতকারক সংস্থার প্রতিনিধি সুধাংশু দত্ত আবেশদের মদ বিক্রি করছেন। তাই তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। লালবাজার সূত্রের খবর, বুধবার দুপুর তিনটে নাগাদ তিন জনকেই গোয়েন্দা বিভাগে নিয়ে আসা হয়। এক প্রস্ত জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। ওই সূত্রটি আরও জানাচ্ছে, সে দিন আবেশরা টালিগঞ্জের আর একটি দোকান থেকেও মদ কিনেছে বলে খবর মিলেছে। সেই দোকানের কর্মীকেও এ দিন রাতে লালবাজারে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

যদিও আবেশের মা রিমঝিম দাশগুপ্তের প্রশ্ন, ‘‘একটা ছেলে মারা গেল। সেই খুনের তদন্তের সঙ্গে এই গ্রেফতারির সম্পর্ক কী?’’ আবেশের সম্পর্কিত মামা হৃদেশ ঠক্করের মন্তব্য, ‘‘আমাদের সন্দেহ তদন্তের অভিমুখ ঘোরানোর জন্যই এই সব গ্রেফতারি।’’

বালিগঞ্জের মদের দোকানটি ১৯২৩ সাল থেকে চলছে। এ দিন সন্ধ্যায় সেখানে গিয়ে দেখা গেল, সৌম্যজ্যোতির বাবা অসীমকুমার সাহা দোকান চালাচ্ছেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার পুলিশ এসে সিসিটিভি বাজেয়াপ্ত করেছিল। এ দিন দুপুরে রাজেশ, সৌম্যজ্যোতিদের নিয়ে যান তদন্তকারীরা। এ দিন অসীমবাবুর সঙ্গে কথা বলার ফাঁকেই ফোন আসে লালবাজার থেকে। অসীমবাবু জানান, তাঁকে দু’দিন দোকান বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

আবেশদের বয়স কম হওয়া সত্ত্বেও তাদের মদ বিক্রি করা হয়েছিল কেন? অসীমবাবুর দাবি, কোনও ক্রেতাকে দেখে ২১ বছরের কম বয়সী মনে হলে তাঁকে মদ বিক্রি করা হয় না। কিন্তু সব সময় বয়সের বিচার করা যায় না। তাঁর কথায়, ‘‘সন্দেহভাজন কোনও ক্রেতাকে বয়স জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি হয়তো ২২ বা ২৪ বছর বললেন। তিনি সত্যি বলছেন কি না, তা তো আর পরীক্ষা করার উপায় থাকে না।’’

ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেন লিকার কান্ট্রি স্পিরিট অফ অ্যান্ড অন শপ হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর জেনারেল সেক্রেটারি গৌতম মুখোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, তাৎক্ষণিক ভাবে দেখে সব সময় বয়স আঁচ করা যায় না। প্রশ্ন উঠছে, সাইবার ক্যাফের গ্রাহকদের মতো মদের দোকানেও ক্রেতাদের পরিচয়পত্র দেখানো বাধ্যতামূলক করা যায় কি না? গৌতমবাবুর জবাব, ‘‘কেউ কেউ কিন্তু পরিচয়পত্র চাইলে হাঙ্গামা বাধাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে পুলিশকেই দোকানের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে।’’

শহরে বহু মদের দোকান থেকেই ২১ বছরের কম বয়সীদের মদ বিক্রি করা হয়। অনেকেই বলছেন, আবেশের মৃত্যু না ঘটলে এই ঘটনা নিয়ে এত শোরগোল হতো না। এ কথা মেনে নিচ্ছেন লালবাজারের কর্তারাও। তবে এই ঘটনার পর তড়িঘড়ি মদের দোকানে নজরদারি বাড়ানো হবে, এমন দাবিও করতে পারছেন না তাঁরা। যদিও নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের দাবি, সানি পার্কের ঘটনার প্রেক্ষিতে এ দিন থেকেই ওই দুই জেলায় মদের দোকানের উপরে সাদা পোশাকের পুলিশ নজরদারিও শুরু করেছে।

police Liquor shop owner
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy