Advertisement
১১ জুন ২০২৪
Death

শ্রমিকের মৃত্যু ঘিরে অসন্তোষ, চটকলে তালা

কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, দিলীপ মণ্ডল (৫১) নামে এক শ্রমিক সোমবার দুপুরে কাজ করার সময়ে দুর্ঘটনায় মাথায় ও হাতে চোট পান।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২০ ০১:৩৭
Share: Save:

চটকলে দুর্ঘটনায় জখম শ্রমিককে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কামারহাটির ইএসআই হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে ওই শ্রমিকের নামে কোনও টাকা জমা না পড়ায় তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। ওই অবস্থায় ব্যারাকপুর হাসপাতালে যখন তাঁকে আনা হয়, তত ক্ষণে মৃত্যু হয়েছে ওই শ্রমিকের। সোমবারের ওই ঘটনার পরে টিটাগড়ের এম্পায়ার জুটমিলে শ্রমিক-অসন্তোষ শুরু হয়। রাতের শিফটে কাজ করেননি কোনও শ্রমিক। যার জেরে মঙ্গলবার সকালে প্রবেশদ্বারে চটকল বন্ধ রাখার নোটিস ঝুলিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। তাঁরা অবশ্য জানিয়েছেন, শ্রমিকেরা কর্মীদের আবাসনে চড়াও হয়েছিলেন বলেই নিরাপত্তার খাতিরে মিল বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। শ্রমিকেরা অবশ্য এই অভিযোগ মানছেন না। তাঁদের বক্তব্য, কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের ন্যায্য প্রাপ্য ইএসআই-এর টাকা জমা দিচ্ছেন না। সেটা ধরা পড়ে যাওয়াতেই তাঁরা কারখানা বন্ধ করে দিলেন। যার ফলে কর্মহীন হয়ে পড়লেন প্রায় দু’হাজার শ্রমিক।

কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, দিলীপ মণ্ডল (৫১) নামে এক শ্রমিক সোমবার দুপুরে কাজ করার সময়ে দুর্ঘটনায় মাথায় ও হাতে চোট পান। তাঁকে প্রথমে কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ওই কারখানার শ্রমিক রাজেন্দ্র যাদব জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের তালিকায় দিলীপবাবুর নাম পাননি। তাঁদের জানানো হয়, ওই শ্রমিকের টাকা জমা পড়েনি। তাই তাঁকে সেখানে ভর্তি নেওয়া সম্ভব নয়। এই তথ্য জানার পরেই তাঁকে ব্যারাকপুরের বিএন বসু হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে দিলীপবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।

এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেই শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। তাঁরা কারখানায় বিক্ষোভ শুরু করেন। শ্রমিকেরা কারখানায় গেলেও সন্ধ্যার শিফটে কেউ কাজে যোগ দেননি। যার ফলে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এ দিন সকালের শিফটেও শ্রমিকেরা কাজ করেননি। তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন। কেন তাঁদের ইএসআই-এর টাকা জমা পড়েনি, সেই প্রশ্ন তুলে স্লোগান দিতে থাকেন শ্রমিকেরা। তার পরেই কারখানা কর্তৃপক্ষ গেটে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝুলিয়ে দেন।

কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, শ্রমিকেরা বিনা নোটিসেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তাতে উৎপাদন ব্যাহত হয়। এ দিন সকালে বেশ কিছু শ্রমিক আবাসনে চড়াও হয়ে আধিকারিকদের হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন বলেও অভিযোগ। এতে আধিকারিক ও তাঁদের পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দেয় বলেই তাঁরা কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। শ্রমিকদের ইএসআই-এর টাকা কেন জমা পড়েনি, সেই প্রশ্নের উত্তর দেননি তাঁরা। টিটাগড়ের পুরপ্রধান প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, “আমরা চটকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Jute Mill
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE