ঢিলেঢালা: শ্যামবাজার স্টেশনে অস্তিত্বই নেই লাগেজ স্ক্যানারের। ছবি: শৌভিক দে
সময়ানুবর্তিতা থেকে রেকের হাল—মেট্রো রেলের পরিষেবা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই বিস্তর অভিযোগ। কিন্তু এর পাশাপাশি নিরাপত্তাও যে কত ঢিলেঢালা, শুক্রবার বিভিন্ন স্টেশনে ঘুরে ফের তা স্পষ্ট হয়ে গেল। অধিকাংশ স্টেশনে মেটাল ডিটেক্টর এবং লাগেজ স্ক্যানার বহু দিন ধরে খারাপ। প্ল্যাটফর্মে সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষীও বড় একটা চোখে পড়ে না। শুক্রবার লন্ডনের মতো জায়গায় পাতাল রেলে জঙ্গি হানার পরে শহরের মেট্রো যাত্রীদের মনে ফের নতুন করে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে— তাঁরা কতটা নিরাপদ?
সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় দেখা গিয়েছে, এই শহরে মেট্রোর সিসিটিভি-র নজরদারি আগের তুলনায় কিছুটা ভাল। কিন্তু প্ল্যাটফর্মে যাত্রী নিরাপত্তার রাশ এখনও আলগা। বর্তমানে মেট্রো স্টেশন ২৩টি। যাত্রীদের অভিযোগ, কয়েকটিতে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল হাতে কিছু রক্ষীকে মাঝেমধ্যে দেখা যায়। যাত্রীদের প্রশ্ন, বেশির ভাগ স্টেশনে যেখানে ন্যূনতম স্ক্যানার ও মেটাল ডিটেক্টরও খারাপ, সেখানে পুজোর ভিড়ে যাত্রীদের নিরাপত্তা কতটা আঁটোসাঁটো থাকবে?
মেট্রোর কর্তাদের দাবি, পুজোর সময়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। কোন কোন স্টেশনে প্রতি বছর বেশি ভিড় হয়, তার তালিকা তৈরি করেছেন তাঁরা। দমদম, শোভাবাজার, মহাত্মা গাঁধী রোড, সেন্ট্রাল, যতীন দাস পার্ক, কালীঘাট, মহানায়ক উত্তমকুমার এবং কবি সুভাষ— এই স্টেশনগুলিতে বেশি রক্ষী মোতায়েন থাকবে। মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক জানান, ওই সব স্টেশনগুলিতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা, নাশকতা ঠেকানো এবং পদপিষ্ট হওয়ার মতো ঘটনা ঠেকাতে বিশেষ বাহিনী মোতায়েন থাকবে।
মেট্রো কর্তারা দাবি করেছেন, মহিলাদের সুরক্ষা দিতে ট্রেনে ও প্ল্যাটফর্মে নামানো হবে বিশেষ বাহিনী। সঙ্গে থাকবে ভ্রাম্যমাণ স্কোয়াড। আরপিএফের সঙ্গে প্রতি বছরের মতোই নিরাপত্তা দেখভাল করবে কলকাতা পুলিশ। কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, সব স্টেশনেই অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মী নামানো হবে। স্টেশনের বাইরে লোহার ব্যারিকেড, ভিড় নিয়ন্ত্রণের দড়ি, মেটাল ডিটেক্টর ও ড্রাগন লাইট হাতে পুলিশকর্মীরা থাকবেন। বৃহস্পতিবার রাতে কালীঘাট স্টেশনে গিয়ে মেট্রোর নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু নির্দেশ দেন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার।
এত সবের পরেও যাত্রীদের আশঙ্কা কাটছে না। দৈনন্দিন অভিজ্ঞতায় মেট্রোর ঢিলেঢালা নিরাপত্তার যে ছবিটা উঠে আসে, তা যে কোনও দিন বড় বিপর্যয়
ডেকে আনতে পারে বলেই মনে করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy