Advertisement
০২ মে ২০২৪
Gariahat Road

Puja Shopping: প্রথম রবিবারের ফাঁকা বাজারের জিয়নকাঠি মল-সংস্কৃতি

ফাঁকা বাজারের হাল দেখে নতুন করে জিনিস তুলবেন কি না, সেই আলোচনাই করছিলেন কয়েক জন ব্যবসায়ী। এই মন্দার জন্য করোনা আর লোকাল ট্রেন বন্ধের জোড়া ফলাকেই দায়ী করছেন তাঁরা।

n পুজোর এক মাস আগের ছুটির দিনেও তেমন জমেনি কেনাকাটার বাজার।

n পুজোর এক মাস আগের ছুটির দিনেও তেমন জমেনি কেনাকাটার বাজার। (১) হাতিবাগান ও (২) গড়িয়াহাটের বাজারে ক্রেতাদের সংখ্যা ছিল অল্পই। রবিবার। ছবি: সুমন বল্লভ ও স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৬:২১
Share: Save:

আর বাকি এক মাস পাঁচ দিন। হিসেব মতো এই সময়ে পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে যায়। এ বছর বাজারে সে ভাবে তার রেশ দেখা যাচ্ছে না। মাসের প্রথম রবিবার। তবুও উত্তর থেকে দক্ষিণের বাজারগুলো ফাঁকা ছিল বিকেল পর্যন্ত। সন্ধ্যার পরে সেখানে ভিড় হলেও শপিং মলের ভিড়কে তা ছুঁতে পারল না। শহরে পুজোর কেনাকাটার উন্মাদনাকে একা হাতেই জিয়নকাঠির ছোঁয়ায় বাঁচিয়ে রাখল মল-সংস্কৃতি।

কার্যত ফাঁকা বাজারের হাল দেখে নতুন করে জিনিস তুলবেন কি না, সেই আলোচনাই করছিলেন কয়েক জন ব্যবসায়ী। এই মন্দার জন্য করোনা আর লোকাল ট্রেন বন্ধের জোড়া ফলাকেই দায়ী করছেন তাঁরা। কোভিড বিধি তো এমনিতেই সর্বত্র শিকেয় তুলেছেন মানুষ। যদি সেই ভিড় হত, কী ভাবে সামলাতেন সব কিছু? এক বিক্রেতার উত্তর, সেটা তো ক্রেতাদের সচেতনতার উপরে নির্ভর করবে। সচেতনতার ছবি অবশ্য দেখা গেল অল্প ভিড়েই! বহু ক্রেতা বিনা মাস্কেই বাজারের এ-প্রাপ্ত থেকে ও-প্রান্ত বাধাহীন ভাবে ঘুরলেন।

‘‘সেপ্টেম্বর থেকে বাজারে ভিড়ের আশা ছিল। প্রথম রবিবার পকেট ভারী থাকার কথা। বাজারের যা হাল দেখছি, ঘুরে দাঁড়ানোর আর আশা থাকল না।’’ আক্ষেপ করছিলেন এক ব্যবসায়ী। দুপুর থেকে নিউ মার্কেট চত্বরের ফাঁকা দোকানগুলোয় বিকেলের পর থেকে ভিড় জমতে থাকে। যা দেখে ব্যবসায়ী সাকিব হোসেন বলেন, ‘‘ক্রেতা আসছে বিকেলের পর থেকে। কয়েক ঘণ্টার কেনাবেচাই ভরসা। অথচ অন্যান্য বছর পুজোর এক মাস আগে শনি আর রবিবার দিনভর নিউ মার্কেটে পা ফেলা যায় না।’’ তবে কি পুজোর কেনাকাটা বন্ধ? তেমনটা ভাবার কারণ নেই। সন্ধ্যায় নিউ মার্কেটে কেনাকাটার ফাঁকে দেবপ্রিয়া বসু জানালেন সে কথা। তাঁর ছেলেমেয়েরা এ বার অনলাইনে জিনিস কিনবেন বলে রেখেছেন মাকে। অভ্যাসবশত অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথে তিনি ঘুরে গেলেন।

নিউ মার্কেটের তুলনায় ফাঁকা ছিল দক্ষিণের গড়িয়াহাট বা উত্তরের হাতিবাগান। গড়িয়াহাটের ব্যবসায়ী রমেন সাহা বলেন, ‘‘সকাল থেকে কেউই বাজারমুখো হচ্ছেন না। সন্ধ্যার পরে তা-ও কিছু ক্রেতা আসছেন। পুজোর এক মাস আগে গড়িয়াহাটে বসে দুপুরে মাছি তাড়াচ্ছি, ভাবা যায়!’’ একই সুর হাতিবাগানের কাপড়ের দোকানের কর্মী সুব্রত বসুর। তিনি বলেন, ‘‘একে করোনার আতঙ্ক, তার মধ্যে লোকাল ট্রেন বন্ধ। বাজারে লোক হবে কী ভাবে?’’

এমন মন্দার বাজারেও ব্যবসা বাঁচিয়ে রেখেছে শহরের শপিং মলগুলো। কেন? উত্তর কলকাতার একটি শপিং মলে কেনাকাটা করতে আসা তানিয়া ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সংক্রমণের ভয় এখনও যথেষ্ট। বেশি ঘোরাঘুরি না করে এক জায়গা থেকেই সব কিনতে এখানে আসা।’’ এই ধারণা থেকে হয়তো শপিং মলগুলোয় ভিড় বেড়েছে। ভিড়ের জন্য সেখানে গাড়ি রাখার জায়গা পেতে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। দক্ষিণ কলকাতার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের একটি শপিং মলের জেনারেল ম্যানেজার দীপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘রবিবার এমনিতেই ভিড় বেশি হয়। এ দিন অন্য সপ্তাহের রবিবারের ভিড়কে ছাপিয়ে গিয়েছে। বিকেলের পর থেকেই মলের গাড়ি রাখার জায়গা প্রায় ভরে গিয়েছে। করোনা বিধি মেনে সকলকে মলে ঢোকানো হচ্ছে।’’

যদিও বাজার বা শপিং মল— সর্বত্র কোভিড বিধির প্রাথমিক শর্ত, মাস্ক ছাড়াই কেউ কেউ কেনাকাটা সারলেন। কেউ আবার পুলিশের ধমক খেয়ে মাস্ক পরলেন। কিছুটা হেঁটেই ফের থুতনিতে নামিয়ে দিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE