নবরূপে ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রাক্তন বিচারপতি শ্যামল সেন, ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহ, সাংসদ সুব্রত বক্সী এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। শুক্রবার দেবাশিস রায়ের তোলা ছবি।
পুরনো ঐতিহ্যকে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে নতুন পথে। শুক্রবার ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট প্রেক্ষাগৃহের নব কলেবরের উদ্বোধনে এমনই বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরের ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানের সংগ্রহশালা গড়তে উত্তর কলকাতার তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংসদ তহবিল থেকে ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের শেষে সুদীপবাবু জানান, নেত্রীর নির্দেশ মেনে তিনি ওই টাকা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষকে দিয়ে দেবেন।
শতাব্দীপ্রাচীন এই প্রতিষ্ঠানটির প্রেক্ষাগৃহ এবং পাঠাগারটি ভগ্নদশা হয়ে পড়েছিল। ২০১৩ সালে রাজ্য সরকার এই মেরামতির কাজ শুরু করে। সেই কাজ শেষ হওয়ায় ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের ১২৫তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এ দিনই নব কলেবরের উদ্বোধনের দিন ধার্য করা হয়েছিল। সেই উপলক্ষে নতুন প্রেক্ষাগৃহের পাশাপাশি, নতুন রূপে পাঠাগার ও টেবিল টেনিস ঘরের উদ্বোধনও করা হয়।
ঐতিহ্যকে পাথেয় করে কী ভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষকে সে ব্যাপারেও পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘এই প্রতিষ্ঠানের পুরনো দিনের ছবি দিয়ে একটা প্রদর্শনী করা উচিত। তা দেখে নতুন প্রজন্ম ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারবে।’’ মুখ্যমন্ত্রী মনে করেন, নতুন প্রজন্ম অনেক কিছুই শিখছে। কিন্তু ইতিহাসকে ভুললে চলবে না। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের ভাষা আমাদের গর্ব। সেই ভাষার বাঁধন যাতে আলগা না হয়, সে দিকে নজর রাখতে হবে।’’
এই ঐতিহ্য ও ইতিহাস প্রসঙ্গেই এ দিন বাংলার সংস্কৃতি ও নব জাগরণের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন মমতা। তিনি বলেন, স্বাধীনতার সঙ্গে বাংলার সাংস্কৃতিক চর্চা ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে। সেই ঐতিহ্য শুধু শিক্ষার নয়, নাট্য-সঙ্গীত চর্চাতেও সমান ভাবে জড়িয়ে ছিল। সেই সব চর্চার কেন্দ্রগুলি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে তিনি আক্ষেপ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই কারণেই আমরা বিভিন্ন জায়গা ঢেলে সাজছি। ধনধান্যে স্টেডিয়াম তৈরি হচ্ছে।’’
ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের এই নব কলেবর পাওয়ার পিছনে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ দিয়েছেন ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটের সভাপতি তথা কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অসীম রায়। তিনি বলেন, ‘‘বাংলার স্বাধীনতা আন্দোলন ও নব জাগরণের সঙ্গে যুক্ত এই প্রতিষ্ঠান সংস্কৃতিপ্রেমী মুখ্যমন্ত্রীর জন্যই নতুন রূপ পেল।’’ তিনি জানান, ১৯৭৬ সালে বিধ্বংসী আগুনে এই বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সে বারও তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় নিজে এসে এই ঐতিহ্যবাহী বাড়ি সংস্কারের কথা জানিয়েছিলেন। এ দিন অসীমবাবুরাও মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা দান করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি এ দিন ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউটে হাজির ছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু-সহ রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী ও সাংসদ। ছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি শ্যামল সেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুগত মারজিত, প্রাক্তন ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy