খুনের দেড় দশক পরে গত জানুয়ারিতে গ্রেফতার হয়েছিল সন্দেহভাজন এক ঘাতক ও চক্রী। কিন্তু চার্জশিট জমা দেওয়ার আগেই জামিনে ছাড়া পেয়ে গেল অভিযুক্ত। সম্প্রতি সরফুদ্দিন ওরফে সরফু নামে ওই অভিযুক্ত জামিন পেয়েছে খুনের চেষ্টা-সহ অস্ত্র আইনের অন্য দু’টি মামলাতেও।
তবে পুলিশের দাবি, সরফুর উপরে নজরদারি চালানোর পাশাপাশি তার জামিন বাতিলের ব্যাপারে উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। গোয়েন্দারা জানান, দেড় দশক আগের ওই খুনের ঘটনায় সরফু-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেওয়ার কথা আদালতে।
পুলিশ জানায়, বেনিয়াপুকুরে একটি গুলি চালনার ঘটনায় জানুয়ারিতে গ্রেফতার হয় সরফু। জেরায় সে ২০০১-এর ২৯ জুন লালবাজারের অদূরে, আর এন মুখার্জি রোডে নওয়াজ এরুচশা ওয়াদিয়া নামে এক বৃদ্ধাকে গুলি করে খুনের কথা জানায়। তার দেওয়া তথ্যে ভিত্তি করেই ওই ঘটনার কিনারা করে লালবাজার। গ্রেফতার হয় অস্ত্র ব্যবসায়ী মোহিদ ও মুনাজির নামে দুই ভাই। ধৃতদের জেরা করে জানা যায়, ২০০১-এ ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে সরফুকে খুনের বরাত দেয় মোহিদ। অস্ত্রও জোগান দেয় সে।
লালবাজারের দাবি, ঘটনার সময়ে সরফু ছিল নাবালক। তখন তাকে জুভেনাইল কোর্টে পেশ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন সে সাবালক বলে হোমে না রেখে জামিন দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানায়, গত সপ্তাহে বেনিয়াপুকুর ও এন্টালির দু’টি গুলি চালানো-সহ খুনের চেষ্টার অভিযোগের মামলাতেও জামিন পায় সে। মূলত তদন্তকারীদের গাফিলতিতেই ওই দু’টি মামলায় সে জামিন পেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু লালবাজারের কর্তারা তা মানতে চাননি। তাঁদের দাবি, ওই দুই মামলায় চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে।
সরফু জামিনে ছাড়া পাওয়ায় মামলাগুলির ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কায় পুলিশের একাংশ। তাঁদের মতে নওয়াজ ওয়াদিয়াকে খুনের মামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি। দুষ্কৃতীরা যে মোটরবাইকে এসেছিল তা-ও মেলেনি। তদন্তকারীদের দাবি, বাবু নামে এক জন বাইক দিয়েছিল সরফুকে। পুলিশের অনুমান, সরফুর সঙ্গীরা গ্রেফতার হলে সেগুলি উদ্ধার সম্ভব হবে। এক অফিসার জানান, খুনের জন্য সরফুকে যারা সুপারি দিয়েছিল তারা জামিন পায়নি। এ ছাড়াও তার উপর চলছে নজরদারি।