E-Paper

মুখ থেকে সুচ চলে গিয়েছিল ফুসফুসে, তরুণীকে বাঁচাল এসএসকেএম

শ্রীরামপুরের বাসিন্দা ববিতা যাদব বাড়িতেই জামাকাপড় সেলাইয়ের কাজ করেন। গত ৬ডিসেম্বর বিকেল ৪টে নাগাদ সেই কাজই করছিলেন তিনি।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:৪৮
পিজি হাসপাতাল।

পিজি হাসপাতাল। ফাইল চিত্র।

কাপড় সেলাইয়ের কাজ করার সময়ে মুখে সুচ রেখেছিলেন বছরবত্রিশের তরুণী। আচমকাই কাশতে শুরু করায় সেই সুচ শ্বাসনালি দিয়ে ঢুকে ফুসফুসে গেঁথে গিয়েছিল। তরুণী আক্রান্ত হয়েছিলেননিউমোথোরাক্সে। শেষে বুক কেটে সেই সুচ বার করে তাঁকে প্রাণে বাঁচাল এসএসকেএম হাসপাতাল।মঙ্গলবার সেখান থেকে ছুটি পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন ওই তরুণী।

শ্রীরামপুরের বাসিন্দা ববিতা যাদব বাড়িতেই জামাকাপড় সেলাইয়ের কাজ করেন। গত ৬ডিসেম্বর বিকেল ৪টে নাগাদ সেই কাজই করছিলেন তিনি। মেশিনে সেলাই করলেও কাজের প্রয়োজনে সুচ মুখে রেখেছিলেন।পরিজনেরা জানাচ্ছেন, আচমকাই কাশি শুরু হয় ববিতার। কাশি হতেই ঠোঁটের ফাঁকে ধরে রাখাসুচ মুখে ঢুকে শ্বাসনালি দিয়ে বুকে চলে যায়। বিষয়টি বুঝতে পেরে তড়িঘড়ি ওই তরুণীকে স্থানীয়হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনেরা। সেখানে এক্স-রে করে দেখাযায়, সুচটি ফুসফুসের কাছে আটকে রয়েছে। ওই হাসপাতাল থেকেই ববিতাকে এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয়।

সেই দিন সন্ধ্যায় তরুণীকে এসএসকেএমের কার্ডিয়ো থোরাসিক অ্যান্ড ভাস্কুলার সার্জারি(সিটিভিএস) বিভাগে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রথমে বক্ষরোগ বিভাগে পাঠানো হয় ব্রঙ্কোস্কোপি করে সুচ বার করার জন্য। কিন্তু সেখানে চেষ্টা করেও সুচ বার করা যায়নি।পাশাপাশি, গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে দেখেন, খাদ্যনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। এর পরে সুচের নির্দিষ্ট অবস্থানজানতে সিটি স্ক্যান করা হয় বলে জানাচ্ছেন সিটিভিএসের শিক্ষক-চিকিৎসক শান্তনু দত্ত।তিনি আরও জানান, পরীক্ষায় দেখা যায়, সুচটি ওই তরুণীর ডান দিকের ফুসফুসে গেঁথে রয়েছে।তখন অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

শান্তনু জানাচ্ছেন, শ্বাসনালি ফুটো হয়ে যাওয়া, ফুসফুসের শিরা, ধমনী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মতোমারাত্মক সব আশঙ্কা ছিল। কিন্তু ববিতার ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। তবে, ফুসফুসে সুচ গেঁথে যাওয়ায় তিনি নিউমোথোরাক্সে (ফুসফুসও বুকের প্রাচীরের মাঝের ফাঁকা জায়গায় বাতাস জমে যাওয়া। এবং তাতে ফুসফুস আংশিক চুপসে যাওয়া) আক্রান্ত হয়েছিলেন।চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ওষুধপত্র দিয়ে রোগীকে স্থিতিশীল করে ১০ ডিসেম্বর অস্ত্রোপচার করা হয়। শান্তনু ছাড়াও চিকিৎসক শিল্পা বসু রায়, দেবতনু হাজরা, দেবার্পিত মুখোপাধ্যায়, ইমন হালদার এবং অ্যানাস্থেশিয়ার বিভাগীয় প্রধান চৈতালি সেনের দল ওই রোগীর বুকের ডান দিক কেটে প্রায় দু’ঘণ্টার অস্ত্রোপচার করেন।

শান্তনু বলেন, ‘‘ফুসফুস থেকে হাওয়া বার হওয়া শুরু হতে পারত। বেশি দিন হয়ে গেলে সংক্রমণছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও ছিল।’’ অস্ত্রোপচারের পরে ববিতাকে প্রথমে আইসিইউ-তে রাখা হয়।তার পরে শারীরিক অবস্থার ক্রমশ উন্নতি হওয়ায় তাঁকে সাধারণ শয্যায় দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নেওয়া, খাওয়াদাওয়া করতে শুরু করার পরে এ দিন তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

PG Hospital SSKM

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy