Advertisement
E-Paper

নতুন লিভার নিয়ে বাড়ির পথে চণ্ডীচরণ

নদিয়ার তাহেরপুরের বাসিন্দা চণ্ডীচরণ ঘোষ। দীর্ঘদিন ধরেই বমি, পেটে যন্ত্রণার মতো সমস্যা নিয়ে ভুগছিলেন বছর পঞ্চান্নের ওই ব্যক্তি। ২০১৬ সাল নাগাদ চিকিৎসকেরা জানান, লিভারের জটিল রোগে তিনি আক্রান্ত হয়েছেন।

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৩৫
চণ্ডীচরণ ঘোষ

চণ্ডীচরণ ঘোষ

ঢাকের আওয়াজ শুনতে এ বার তাঁর বাড়তি উৎসাহ! মাস দু’য়েক তিনি বাড়িতে নেই। হাসপাতালের বিছানাতেই কেটেছে। আগেও একাধিক বার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বাড়িও ফিরেছিলেন। কিন্তু সেখানে কোনও আনন্দ ছিল না। বছর দেড়েক ধরেই তাঁর বাড়ি ফেরা ছিল বমি, যন্ত্রণা ও দুশ্চিন্তাকে সঙ্গে নিয়ে। এ বার ছবিটা বদলেছে। অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পরে তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। তাই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ফের পাড়ার দুর্গা মণ্ডপে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন।

নদিয়ার তাহেরপুরের বাসিন্দা চণ্ডীচরণ ঘোষ। দীর্ঘদিন ধরেই বমি, পেটে যন্ত্রণার মতো সমস্যা নিয়ে ভুগছিলেন বছর পঞ্চান্নের ওই ব্যক্তি। ২০১৬ সাল নাগাদ চিকিৎসকেরা জানান, লিভারের জটিল রোগে তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। লিভার সিরোসিসের ওই সমস্যায় প্রতিস্থাপনেই সুস্থ হওয়া সম্ভব। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো, ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের আবেদন জানান তিনি। ইতিমধ্যেই একাধিক বার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন চণ্ডীবাবু। বছরখানেকের অপেক্ষার পরে ২০১৮ সালের অগস্ট মাসে স্বাভাবিক জীবন যাপনের পথ খুঁজে পান তিনি।

গত ২৩ অগস্ট ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অদিতি সিংহ নামে এক মহিলার ব্রেন ডেথ ঘোষণা করা হয়। প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষার পরে ‘রিজিওন্যাল অর্গ্যান অ্যান্ড টিসু ট্রান্সপ্লান্ট অথরিটি’ ওই মহিলার লিভার চণ্ডীবাবুর দেহে প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরেই এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়।

চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে চণ্ডীবাবুর চিকিৎসা চলছিল। অস্ত্রোপচার সফল হওয়া সত্ত্বেও পরবর্তী নজরদারির জন্য ১১ অক্টোবর পর্যন্ত তাঁকে হাসপাতালে রাখা হয়। অভিজিৎবাবু জানান, লিভার প্রতিস্থাপনের পরে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হয়। সংক্রমণ রুখতে রোগীকে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়। চণ্ডীচরণবাবুর ক্ষেত্রেও পর্যবেক্ষণ জরুরি ছিল। আপাতত তিনি সুস্থ। স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। তবে, কয়েকটি ওষুধ প্রতিস্থাপন পরবর্তী সময়ে ব্যবহার করতে হয়। সেগুলি নিয়মমাফিক চালিয়ে যেতে হবে।

চণ্ডীবাবুকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি যাওয়ার সময়ে তাঁর আত্মীয় বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালে প্রতিস্থাপনের পরিকাঠামো থাকার জেরেই বেঁচে গেলেন। কয়েক বিঘা জমি রয়েছে ওঁর। বেশি টাকা খরচ লাগলে চিকিৎসা করানো যেত না। তবে, অস্ত্রোপচার পরবর্তী কিছু ওষুধের ক্ষেত্রেও সরকারি সাহায্য পাওয়া গেলে সুবিধা হত। প্রতি মাসে কয়েক হাজার টাকার খরচ জোগাড় করা কঠিন।’’

treatment Liver Transplantation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy