Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নজরই নেই কি শহরের নজর-ক্যামেরায়

শহরে সম্প্রতি ঘটে গিয়েছে পরপর কয়েকটি দুর্ঘটনা। সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখ রাতে বাগড়ি মার্কেটে আগুন লাগে। সেই আগুন কী ভাবে ছড়িয়েছিল, তা জানতে এক স্থানীয় বাসিন্দার মোবাইলে তোলা ভিডিয়োর উপরে অনেকটা ভরসা করতে হয়েছিল তদন্তকারীদের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৩০
Share: Save:

কোথাও সিসি ক্যামেরা লাগানোই হয়নি, কোথাও থাকলেও কাজ করেনি। ফলে শহরে পরপর ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে নাজেহাল পুলিশ। অথচ সিসি ক্যামেরা লাগানো থাকলে ও তা কাজ করলে, অনেকটাই সুবিধে হত বলে জানাচ্ছে পুলিশ।

শহরে সম্প্রতি ঘটে গিয়েছে পরপর কয়েকটি দুর্ঘটনা। সেপ্টেম্বরের ১৫ তারিখ রাতে বাগড়ি মার্কেটে আগুন লাগে। সেই আগুন কী ভাবে ছড়িয়েছিল, তা জানতে এক স্থানীয় বাসিন্দার মোবাইলে তোলা ভিডিয়োর উপরে অনেকটা ভরসা করতে হয়েছিল তদন্তকারীদের। ক্যানিং স্ট্রিটের বাগড়ি মার্কেটের সামনের রাস্তায় কোনও সিসি ক্যামেরা ছিল না। গত মঙ্গলবার সকাল ন’টা নাগাদ নাগেরবাজারের কাজিপাড়ায় রাস্তার উপরে বিস্ফোরণ হয়। সেখানেও কোনও সিসি ক্যামেরা নেই। ফলে জনবহুল রাস্তায় কে বা কারা বোমা রেখে গেল, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ। বুধবার সকালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের যে ভবনে আগুন লাগে, সেখানে সিসি ক্যামেরা ছিল। কিন্তু তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, সেখানকার কোনও ফুটেজই তাঁরা দেখতে পাননি।

শহরকে নিরাপদ রাখতে প্রচুর সিসি ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে বলে কিছু দিন আগেই দাবি করেছিলেন পুলিশ ও পুরকর্তারা। সেই দাবির সারবত্তা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গুরুত্বপূর্ণ বাজার, জনবহুল রাস্তার মোড়ে সিসি ক্যামেরা লাগানো থাকবে না কেন, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও। গত মঙ্গলবার নাগেরবাজারের জনবহুল রাস্তায় ঘটা বিস্ফোরণের তদন্তে নেমে বুধবার সকালে এক সিআইডি কর্তা বলেন, ‘‘সিসি ক্যামেরা লাগানো থাকলে ফরেন্সিক তদন্তের উপরে এতটা নির্ভর করতে হত না।’’ ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা অবশ্য আশ্বাস দেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এই কমিশনারেট এলাকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় কয়েকশো সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা আছে। তবে দোকানপাট বা বাজারে সিসি ক্যামেরা লাগানোর কাজ করতে হবে স্থানীয় পুরসভাকেই।

কলকাতা পুরসভার এক পদস্থ কর্তার দাবি, পুরসভার গড়িয়াহাট মার্কেট থেকে নিউ মার্কেট, প্রায় সব বাজারেই লাগানো আছে সিসি ক্যামেরা। আবার কলকাতা পুলিশের দাবি, শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাতেও সিসি ক্যামেরা আছে। তবে সেই ক্যামেরায় নজরদারি আছে কি না, সে প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে। যেমন গড়িয়াহাটে নিয়মিত বাজার করতে যান অনিন্দ্য রায়। তিনি বলেন, ‘‘বাজারে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে দেখেছি। কিন্তু লাভটা কী হচ্ছে? বাজারের মধ্যে যে অনেক জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে রান্না হচ্ছে, সেগুলি কেন ক্যামেরায় ধরা পড়ছে না?’’ বাগড়ি মার্কেট সম্পর্কে সেন্ট্রাল কলকাতা ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আশুতোষ সিংহের অভিযোগ, ‘‘ ওখানে ক্যামেরা লাগানো যায়নি মালিকপক্ষের উদাসীনতায়।’’

সল্টলেকের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ও বেশ কিছু বাজারের বাইরে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে বলে দাবি বিধাননগর পুরসভার প্রধান সব্যসাচী দত্তের। তবে এখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, সল্টলেকে বহু রাস্তায় সিসি ক্যামেরা নেই। নিরাপত্তার স্বার্থে বাসিন্দারা
নিজেরাই বাড়ির সামনে সিসি ক্যামেরা লাগাচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CCTV Security Inactive
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE