Advertisement
E-Paper

শিয়রে বিপদ নিয়েই চলছে বহু বাজার

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ০২:০৬
আতঙ্ক: বেলেঘাটা সরকার বাজারে ফুটো হয়ে গিয়েছে ছাদ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

আতঙ্ক: বেলেঘাটা সরকার বাজারে ফুটো হয়ে গিয়েছে ছাদ। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

বাজারের ছাদের একাংশ বেশ কিছু দিন আগেই ভেঙে পড়েছিল। তার পরে কোনও রকমে কাঠের লম্বা পাটাতন দিয়ে ঠেকা দিয়ে রাখা হয়েছে। আর একটি অংশের টালি ভেঙে পড়ছে। কিন্তু সেগুলিও কোনও রকমে জোড়াতাপ্পি মারা। পুরো অবস্থাই রীতিমতো বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। অবশ্য এমন চিত্র নতুন কিছু নয়। বেলেঘাটার সরকার বাজারের অবস্থা বরাবরই এমন বিপজ্জনক বলে জানাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বৈঠকখানা বাজারে একটি বাড়ি ভেঙে মৃত্যুর ঘটনায় তাঁদের আতঙ্ক আরও বেড়েছে।

প্রসঙ্গত, বছর পাঁচেক আগে শহরের বাজারগুলিকে নিয়ে রাজ্য সরকার যে সমীক্ষা করিয়েছিল, তাতেই ওই সমস্ত বাজারের দুরবস্থার কথা আলাদা ভাবে উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতির বিন্দুমাত্র উন্নতি হয়নি। সরকার বাজারের এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘বৈঠকখানা বাজারের মতো দুর্ঘটনা এখানেও যে কোনও দিন ঘটতে পারে।’’ বাজার ঘুরে দেখা গেল, ব্যবসায়ীরা যেখানে বসেন, সেখানে মাথার উপরে লোহার ছাউনির অবস্থা রীতিমতো খারাপ। কোনও জায়গায় সেটি ফুটো হয়ে গিয়েছে, কোথাও আবার ভগ্নপ্রায় অবস্থা। ব্যবসায়ীদের একাংশ জানালেন, বাজারটির সংস্কার করার কথা এক বেসরকারি সংস্থার। তা নিয়ে সিদ্ধান্তও চূড়ান্ত। কিন্তু বৈধ ব্যবসায়ীর সংখ্যা কত, তা নিয়ে বিতর্কে ক্রমশ পিছোচ্ছে সংস্কার।

শ্যামবাজার মার্কেটের পাশেই ভগ্নস্তূপে পরিণত হওয়া একটি ভবনের নীচে ব্যবসা চলছে পুরোদমে। সেটিও পুরসভার নথিতে বিপজ্জনক বাড়ি। কিন্তু দোকান নিয়ে আইনি জটিলতা থাকায় তা-ও ওই ভাবেই পড়ে রয়েছে। এক দোকানির কথায়, ‘‘ভয় তো করেই এ ভাবে থাকতে। কিন্তু যত ক্ষণ না বিষয়টির নিষ্পত্তি হচ্ছে, তত ক্ষণ কী আর করা যাবে!’’ এক পুর কর্তার বক্তব্য, ‘‘বেসরকারি বাজারে পুরসভা জোর করে কিছু করতে পারে না। তবু মালিকদের বলা হচ্ছে সারাতে। তাঁরা না সারালে কী করা যাবে?’’

শ্যামবাজার মার্কেটের পাশে একটি জীর্ণ বাড়ির তলায় রয়েছে দোকান। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

ভবানীপুরে যদুবাবুর বাজারের একটি দিক আবার সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু পিছনের দিকের অংশ এখনও ভাঙাচোরা অবস্থাতেই পড়ে রয়েছে। সংস্কারের কাজ চলছে, গেটে সেই ব্যানার লাগানো রয়েছে। কিন্তু ব্যানারের উপরেই টালির অংশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা। কাঠামোও নড়বড়ে। ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, বাজারের অনেক জায়গার অবস্থাই খারাপ হলেও তা বৈঠকখানা বাজারের মতো বিপজ্জনক নয়! এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘বাজারের কয়েকটি জায়গার খারাপ অবস্থা। তবে আগামী তিন মাসের মধ্যে তা সারাই হয়ে যাবে বলেই আশা করছি আমরা।’’

ভাঙা টালির ছাদের তলাতেই চলছে যদুবাবুর বাজার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

শহরের তিন বেসরকারি বাজার ঘুরে বোঝা গেল, শুধু বিপজ্জনক বাড়িই নয়, বিপজ্জনক বাজারগুলির সংস্কারও কোনও না কোনও সমস্যার কারণে আটকে রয়েছে। কয়েকটি বাজারে বিচ্ছিন্ন ভাবে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে বটে, কিন্তু সেগুলিও উল্লেখযোগ্য কিছু নয় বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে শিয়ালদহের সূর্য সেন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের সময়ে সরকারি-বেসরকারি বাজার মিলিয়ে মোট ৩৫৮টি বাজারের সমীক্ষা করেছিল পুরসভা। তাতে বাজারগুলির সার্বিক অবস্থা তুলে ধরা হয়েছিল। রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, ‘‘শহরের বহু পুরনো বাজারের অবস্থা রীতিমতো শোচনীয়। সেগুলিকে নিয়ে অনেক বার বলা সত্ত্বেও সারানো হয়নি।’’

Market Kolkata Dangerous Shyambazar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy