Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
eid

Festival: পোশাক থেকে খাবার, শেষ রবিবারে ইদের বাজারে জনস্রোত

ভিড় দেখা গিয়েছে খিদিরপুরের ফ্যান্সি মার্কেটেও। রকমারি পাঞ্জাবি থেকে চশমা, ঘড়ি পরে দেদার ছবি তুলতেও দেখা গেল ক্রেতাদের।

বিকিকিনি: ইদের আগে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার ভিড়। রবিবার, নাখোদা মসজিদ চত্বরে।

বিকিকিনি: ইদের আগে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার ভিড়। রবিবার, নাখোদা মসজিদ চত্বরে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২২ ০৪:৫৩
Share: Save:

সালোয়ারের রঙের সঙ্গে মানানসই চুড়ি কিনতে নিউ মার্কেটের এ-দোকান থেকে সে-দোকান মাকে নিয়ে ঘুরছিলেন বছর কুড়ির যুবতী। কোথাওই মনের মতো চুড়ি পাচ্ছিলেন না। দোকান ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত, বিরক্ত মা শেষে মেয়েকে বলেই ফেললেন, ‘‘এ বার তো একটা পছন্দ কর! আর কত দেখবি? জুতো, শাড়ি, আতর— এখনও কত কেনা বাকি। সেগুলো কেনার জন্য কিন্তু আবার এক দিন আসতে পারব না। তার উপরে সময়ও নেই!’’ এই ‘সময় না থাকায়’ ইদের আগে শেষ রবিবার হাতছাড়া করতে চাননি কেউই। শুধু নিউ মার্কেট নয়, শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ, ইদের জন্য পরিচিত মহল্লার বাজারগুলিতে কার্যত পা ফেলার জায়গা ছিল না এ দিন।

জ্বালা ধরানো গরম থেকে খানিকটা স্বস্তি দিয়েছিল শনিবার সন্ধ্যার কালবৈশাখী আর বৃষ্টি। তার প্রভাবে এ দিন সকাল থেকে রোদ থাকলেও তার তেজ ছিল অন্য দিনের তুলনায় বেশ কম। আর সেটাই এ দিনের ইদের বাজারে বাড়তি অক্সিজেন জুগিয়েছে। সকাল থেকে ভিড়ের নিরিখে নিউ মার্কেট, রাজাবাজার, খিদিরপুরের ফ্যান্সি মার্কেটের সঙ্গে সমানে সমানে পাল্লা দিয়েছে মল্লিকবাজার, জ়াকারিয়া স্ট্রিট, পার্ক সার্কাস। রকমারি আতর থেকে চুড়ি, জুতো থেকে পোশাক— হরেক আয়োজনে বাজার ছিল জমজমাট।

এ দিন একটু সকাল সকালই নিউ মার্কেটে চলে এসেছিলেন চুড়ি ব্যবসায়ী মহম্মদ হোসেন। পসরা সাজাতে সাজাতে পাশের দোকানির উদ্দেশে হেসে বললেন, ‘‘রোদের তেজ আজ কম। তার উপরে রবিবার। যা হওয়ার, আজ হবে।’’ হোসেনের ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ যে খুব একটা ভুল ছিল না, তা স্পষ্ট হয়ে গেল বেলা বাড়তেই। দুপুরের পর থেকে ভিড় সামলাতে কার্যত হিমশিম খেয়ে যান পুলিশকর্মীরা। সেই ভিড় ঢেলে নিউ মার্কেটের জুতোর দোকানে ঢুকে পছন্দের জুতো বাছার ফাঁকে অষ্টাদশী তরুণী বললেন, ‘‘এত ভিড় হবে জানলে আগেই কেনাকাটা সেরে রাখতাম। এ তো দেখছি, মাছি গলারও জায়গা নেই।’’ একই ছবি দেখা গিয়েছে রাজাবাজার, জ়াকারিয়া স্ট্রিটে ইদের বাজারেও। রকমারি সিমুই, লাচ্ছা থেকে শুরু করে টুপি, আতরের জন্য বরাবরই নামডাক রয়েছে জ়াকারিয়া স্ট্রিটের। সেখানে সিমুইয়ের পসরা সাজিয়ে বসা বছর চল্লিশের সিরাজ বললেন, ‘‘প্রতি বছরই এই সময়ে সিমুইয়ের চাহিদা থাকে। কিন্তু গত দু’বছর তো করোনার কারণে বিক্রিবাটা তেমন হয়নি। এ বার অন্তত কিছুটা লক্ষ্মীলাভ হল।’’ ইদ স্পেশ্যাল সিমুই দেদার বিকোচ্ছে বলেই জানালেন ব্যবসায়ীরা। বারাসত থেকে জ়াকারিয়া স্ট্রিটে সিমুই কিনতে এসেছিলেন মহম্মদ আলম। তাঁর কথায়, ‘‘দেখেশুনে কেনার জন্যই এত দূরে আসা। এখানে আসলে আর চিন্তা করতে হয় না।’’

ভিড় দেখা গিয়েছে খিদিরপুরের ফ্যান্সি মার্কেটেও। রকমারি পাঞ্জাবি থেকে চশমা, ঘড়ি পরে দেদার ছবি তুলতেও দেখা গেল ক্রেতাদের। মেটিয়াবুরুজ থেকে বন্ধুদের সঙ্গে কেনাকাটা করতে এসেছিলেন সামিউল মণ্ডল। তিনি বললেন, ‘‘দরদাম করতে পারলে এর থেকে ভাল জায়গা আর হয় না। কুর্তা থেকে শুরু করে বাহারি পাঞ্জাবি— খুশির ইদের আগে এখন শুধু ব্যাগে ভরে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পালা।’’ রমজান মাসের শুরু থেকেই মোটামুটি ভিড় হতে শুরু করে নাখোদা মসজিদ চত্বরে। এ দিন সেখানে ছিল লোকে লোকারণ্য। নতুন কুর্তা, পাঞ্জাবি, টুপি পরে এসেছিলেন অনেকেই। সব মিলিয়ে খুশির ইদের চাঁদ দেখার আগে শেষ রবিবার কেনাকাটার জমাটি আনন্দে ফাঁক রাখতে চাননি কেউই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

eid festival
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE