E-Paper

কোটি টাকার ওষুধ পোড়ার আশঙ্কা, এখনও জানা যায়নি আগুনের কারণ

প্রাথমিক ভাবে দমকলের তরফে জানানো হয়েছে, ৭৫ বছরের পুরনো ওই কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৫ ০৯:২৯
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরে ক্ষতিগ্রস্ত দে’জ় মেডিক্যালের কারখানা। রবিবার, বন্ডেল রোডে।

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরে ক্ষতিগ্রস্ত দে’জ় মেডিক্যালের কারখানা। রবিবার, বন্ডেল রোডে। ছবি: রণজিৎ নন্দী

আগুন লাগার পরের দিনও দমকলের গাড়ি মজুত রাখতে হল বন্ডেল রোডের দে’জ় মেডিক্যাল কারখানায়। রবিবারও সেখানে পোড়া অংশে জল দিয়ে ঠান্ডা করার কাজ করতে হয়েছে। যদিও এ দিন আর নতুন করে আগুন দেখা যাওয়ার কোনও খবর মেলেনি। তবে ঐতিহ্যবাহী এই ওষুধ কারখানায় কোটি টাকার উপরে ওষুধ পুড়ে গেলেও আগুন লাগল কী করে, তা ঘটনার এক দিন পরেও স্পষ্ট হয়নি। পুলিশ এবং দমকলের তরফে ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পরেই আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে। যদিও ফরেন্সিক দল এ দিন ঘটনাস্থলে যায়নি। আজ, সোমবার ফরেন্সিক নমুনা সংগ্রহ করা হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

প্রাথমিক ভাবে দমকলের তরফে জানানো হয়েছে, ৭৫ বছরের পুরনো ওই কারখানায় পর্যাপ্ত অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল। ছাদ ও মাটির নীচের ট্যাঙ্কে মজুত জল দিয়ে শনিবার আগুন নেভানোর চেষ্টা হয়। এ ছাড়া, অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র, স্প্রিঙ্কলার, ফায়ার অ্যালার্ম— সমস্ত কিছুই ছিল যথাযথ অবস্থায়। কিন্তু মূলত রাসায়নিক মজুত থাকায় দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সেই রাসায়নিক পোড়া ধোঁয়াতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন দুই দমকলকর্মী। আর এক দমকলকর্মী পড়ে যান প্লাস্টিকের একটি ছাউনির উপর থেকে। তিন জনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসার পরে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। যদিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে আগুন নেভানোর কাজ সামলানো দমকলের ডিরেক্টর অভিজিৎ পান্ডে রবিবার বলেন, ‘‘তিনতলা ওই কারখানা ভবনের দু’টি ব্লক রয়েছে। বাঁ দিকের ব্লকে সংস্কার চলছিল। সেখানেই একতলায় কোনও ভাবে আগুন লেগে গিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। ওষুধ তৈরির ল্যাব থাকায় এখানেই প্রচুর রাসায়নিক ছিল। রঙের বড় বড় পাত্র রাখা ছিল। এই কারণেই দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই রঙের পাত্রগুলিতেই বিস্ফোরণ হয়েছে।’’ দমকলের আর একটি সূত্রের দাবি, ওই অংশে ঝালাইয়ের কাজ চলছিল। আগুনের ফুলকি কোনও ভাবে রাসায়নিকে পড়ে বিস্ফোরণের জেরে আগুন লেগে থাকতে পারে। কিন্তু সমস্তটাই নিশ্চিত ভাবে বলা যাবে ফরেন্সিক রিপোর্ট আসার পরে।

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দমকলের দু’টি গাড়ি দাঁড় করানো রয়েছে। সেখান থেকে ‘রিলে’ পদ্ধতিতে জল ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে দমকলকর্মী ও পুলিশ ছাড়া ভিতরে সকলেরই প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। কার্যত পোড়া বাড়ির মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে কারখানাটি। এ দিনও উৎসাহী লোকজনের ভিড় ছিল সেখানে। কারখানার পাশেরই একটি বাড়ির বাসিন্দা আবার বললেন, ‘‘রাতদিন কাজ চলছিল কারখানাটিতে। সেই সংস্কারের কাজের জন্য আমরা রাতে ঘুমোতে পারছিলাম না। কোনও ভাবে অসাবধানতা থেকেই আগুন লেগে গিয়েছে।’’ দে’জ় মেডিক্যালের যুগ্ম অধিকর্তা রণজিৎ দে-র কন্যা তথা সংস্থার ডেপুটি প্রোডাক্ট ম্যানেজার পরমা দে বললেন, ‘‘আমাদের কাছে নিরাপত্তা বরাবরই আলাদা গুরুত্ব পেয়ে এসেছে। কোনও গাফিলতির ব্যাপার নেই। আপাতত কারখানা বন্ধ রয়েছে। ফরেন্সিক পরীক্ষার পরে পুলিশ খুলতে বললে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করে এগোনো হবে। তবে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে কয়েক কোটি টাকার ওষুধ ও সামগ্রীর ক্ষতি হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

medicines

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy