Advertisement
E-Paper

বন্দিদের জন্য জেলেই দোকান

খাবারদাবারের পরে এ বার পোশাক। সঙ্গে নিত্যব্যবহার্য টুকিটাকিও। বন্দিদের জন্য জেলে এই নতুন দোকান খোলার উদ্যোগে হাত বাড়িয়েছে এক বহুজাতিক সংস্থা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে দেবীপক্ষের সূচনায়, মহালয়ার দিনে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় জেলে দরজা খোলার কথা সেই দোকানের। ‘আনন্দম’ নামে এই দোকানটি চালু হচ্ছে ‘মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি’ নামে বহুজাতিক সংস্থাটির সহায়তায়।

অত্রি মিত্র

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৫ ০০:৫৮

খাবারদাবারের পরে এ বার পোশাক। সঙ্গে নিত্যব্যবহার্য টুকিটাকিও। বন্দিদের জন্য জেলে এই নতুন দোকান খোলার উদ্যোগে হাত বাড়িয়েছে এক বহুজাতিক সংস্থা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে দেবীপক্ষের সূচনায়, মহালয়ার দিনে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় জেলে দরজা খোলার কথা সেই দোকানের।

‘আনন্দম’ নামে এই দোকানটি চালু হচ্ছে ‘মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি’ নামে বহুজাতিক সংস্থাটির সহায়তায়। প্রেসিডেন্সি জেলের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, জেলের মধ্যে দোকান তৈরির কাজ প্রায় শেষ। ছ’জন বন্দির একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছে। তারাই চালাবে ওই দোকান। কারা দফতরের এক কর্তা জানান, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে বন্দিদের নিজস্ব উপার্জনে গড়া প্রিজনার্স ওয়েলফেয়ার ফান্ডের পাঁচ লক্ষ টাকায় এই দোকানটি তৈরি হচ্ছে কারা দফতরের সঙ্গে বন্দিদের উন্নয়নের কাজে যুক্ত নৃত্যশিল্পী অলকানন্দা রায়ের সংস্থা ‘টাচ ওয়ার্ল্ড’-এর যৌথ উদ্যোগে।
বিক্রির লাভের অংশ জমা হবে বন্দিদের অ্যাকাউন্টে।

বন্দিদের জন্য খাবারের দোকান প্রথম তৈরি হয়েছিল দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। এর পরে আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধানাগারে বন্দি থাকাকালীন প্রভুশঙ্কর অগ্রবাল তৈরি করেন ভুজিয়া ও খাবারের দোকান। প্রভু জেল থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন অনেক দিন আগেই। কিন্তু দোকান চলছে রমরমিয়ে। বন্দিরাই স্বনির্ভর গোষ্ঠী তৈরি করে চালাচ্ছেন সেটি। একই ভাবে প্রেসিডেন্সি জেলেও ‘অনুরাগ’ নামে একটি খাবারের ক্যান্টিন চালান বন্দিরা।

কিন্তু দিনের পর দিন জেলে কাটাতে পোশাক থেকে টুথ পেস্ট, ব্রাশ থেকে তেল-সাবানের মতো হরেক জিনিস প্রয়োজন হয় বন্দিদের। লেখালেখির জন্য মাঝেসাঝে দরকার হয় কাগজ-পেনও। সে সব পৌঁছে দিতে বন্দিদের বাড়ির লোকেরা প্রায় প্রতিদিনই জেলের বাইরে লাইন দেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দিয়ে জেল কর্তৃপক্ষের হাতে তাঁরা তুলে দিয়ে যান মুড়ি, চিঁড়ে, চানাচুরের মতো শুকনো খাবার কিংবা জামাকাপড়-তেল-সাবান।

কারা দফতরের কর্তাদের দাবি, নতুন দোকান তৈরি হলে বন্দির পরিজনেদের আর এ ভাবে জেলের বাইরে লাইনে দাঁড়াতে হবে না। বরং তাঁরা বন্দিদের জন্য টাকা জমা দিয়ে যেতে পারবেন জেল কর্তৃপক্ষের কাছে। তা দিয়ে জেলের ভিতরের দোকান থেকেই পছন্দমতো কেনাকাটা সারতে পারবেন বন্দিরা। তবে দোকানে সেই সব জিনিসই পাওয়া যাবে, যা আইনত বন্দিরা পেতে পারেন।

নতুন এই দোকান চালু হলে জেলের নিরাপত্তাও বাড়বে বলে মনে করছেন কারাকর্তাদের একাংশ। কারণ, বন্দিদের জিনিসপত্রের মধ্যেই লুকিয়ে অনেক সময়ে জেলের অন্দরে ঢুকে পড়ে নানা ধরনের মাদক, সিমকার্ডের মতো নিষিদ্ধ জিনিসপত্র। বাড়ির লোকেরা জিনিসপত্র দেওয়া বন্ধ করলে চোরাপথে জেলে বেআইনি মালপত্র ঢোকাও কমবে বলে ধারণা ওই কর্তাদের।

রাজ্য কারা দফতরের এডিজি অধীর শর্মা বলেন, ‘‘এক-একটি সংশোধনাগারে দুই থেকে আড়াই হাজার বন্দি থাকে। তাদের চাহিদা পূরণে একটি দোকান থাকা প্রয়োজন।’’ তিনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে প্রথম উদ্যোগী হয়েছিলেন নৃত্যশিল্পী অলকানন্দা রায়। তিনিই ‘মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি’র সঙ্গে কথা বলেছেন। ওই সংস্থা জিনিসপত্র সরবরাহ করলে বন্দিরা অনেক কম দামে তা পাবেন।’’ জেল সূত্রের খবর, দোকান চালানোর জন্য বন্দিদের ছ’মাস প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করেছে ওই বহুজাতিক সংস্থা। যদিও বন্দিদের জন্য এই প্রকল্প নিয়ে মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি-র তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

presidency jail anandam metro cash n carry metro cash and carry
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy